[topbanner]
ইদানিং বৃষ্টির কোন ঠিক নেই। রোজই বৃষ্টি হচ্ছে, কিন্তু কখন কোন সময়ে যে শুরু হবে বলা যায় না। দেখা যাচ্ছে, আপনি হয়ত সকালে বের হলেন সানগ্লাস পরে, এত রোদ বাইরে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরই ধুপ করে নামলো বৃষ্টি। তাই দিনের প্রস্তুতি নিতে হয় দুই রকম। মনে রাখতে হয়, সূর্য আর মেঘ দুই এরই কথা।
[picture]
এই প্রস্তুতি শুধু যে আপনার তা কিন্তু নয়। এই বিশেষ প্রস্তুতি প্রয়োজন আপনার ঘরেরও। জেনে নিন কিছু দরকারি টিপস-
১। কাঠের আসবাব
বৃষ্টির দিনে কাঠের আলমারিতে ফাঙ্গাস পড়ে। পেছনের বোর্ড ফুলে যায়। অনেক সময় দেখা যায় কাঠ বাঁকা হয়ে গেছে, ড্রয়ার খুলতে কষ্ট হচ্ছে। এটা আসলে কাঠের সিজনিং এর উপর নির্ভর করে। আসবাব বানানোর আগে কাঠ ভালো করে সিজনিং করা থাকলে এই সমস্যা হবে না। সেটা অনেক সময়ই আমাদের হাতে থাকে না। তবে কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব এটা। বৃষ্টির দিনে দেয়াল থেকে একটু সরিয়ে রাখুন আপনার কাঠের আসবাব। ঘর শুকনো রাখুন। স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া কাঠের ক্ষতি করে।
২। পোশাক
স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া পোশাকেও ফাঙ্গাস ফেলে। অনেকদিন আলমারিতে পড়ে থাকা পোশাক বের করেই পরে ফেলবেন না। খুব ভালো হয় একবার রোদে শুকিয়ে নিতে পারলে। এতে ফাঙ্গাস চলে যায়, গন্ধটাও কাটে। আর আলমারিতে কাপড়ের ফাকে রাখুন কর্পুর। এতে আপনার কাপড় ঠিক থাকবে। বর্ষায় কাপড় ড্যাম হয়ে পচেও যেতে পারে। তাই সেগুলো বের করে মাঝে মাঝে বাতাসে দিতে পারলে খুব ভালো হয়।
৩। জানালার গ্রিল, স্টিলের আসবাব
আপনার ঘরে স্টিল, লোহা বা এজাতীয় যত পণ্য আছে সেগুলোর অবস্থা পরীক্ষা করুন। যেগুলোর রঙ উঠে গেছে আরেকবার রঙ করিয়ে নিন। জানালার গ্রীল, টিনের দরজা বর্ষায় জং ধরে যায়। পরে হয়ত পুরো জিনিসটিই আপনাকে বদলাতে হবে। তার চেয়ে আপনি যদি ভালো এক কোটিং রঙ ব্যবহার করেন তাহলে এসব পণ্যের আয়ু বেড়ে যাবে অনেক দিন।
৪। ঘরের রঙ, দেয়াল
বর্ষায় ঘরের দেয়াল ড্যাম হয়ে যেতে পারে। ভালো করে পরীক্ষা করুন। কোথাও কোন ফাটল আছে কিনা দেখুন। আমাদের বাড়ির নিষ্কাশন পাইপগুলো বাড়ির দেয়ালের ভেতর দিয়ে বাইরের বড় পাইপের সাথে গিয়ে মেশে। এসব পাইপ কোনটা ফেটে গেলে সেটা আপনার দেয়ালের ক্ষতি করতে পারে। এসব ফাটল ঠিক করুন। দেয়ালে ব্যবহার করুন ওয়েদার প্রুফ পেইন্ট।
৫। কার্পেট
বর্ষায় দামী কার্পেট ব্যবহার না করাই ভালো। এর চেয়ে বরং এগুলো প্লাস্টিকে মুড়িয়ে সেগুলো তুলে রাখুন শুষ্ক কোন জায়গায়। এই সময়টায় মেঝেতে ব্যবহার করুন পাটি, বাশের ম্যাট বা কাপড়ের শতরঞ্জি।
৬। লেদারের সোফা
লেদারের সোফার চাই একটু বাড়তি যত্ন। প্রতিদিন মুছে পরিষ্কার রাখুন আপনার সোফাটি। কারণ, স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়া জন্ম দিতে পারে ফাঙ্গাস আর ধীরে ধীরে নষ্ট করে ফেলতে পারে দামী সোফাটি। তাই কোনভাবেই যেন পানি না লাগে, দেয়ালের সাথে লেগে না থাকে আর ময়লা না জমে সেদিকে খেয়াল রাখুন।
৭। গাছ
অন্দরসজ্জায় ব্যবহার করা গাছগুলো বারান্দা বা ছাদে পাঠিয়ে দেওয়াই ভাল। এতে ঘরের স্যাঁতস্যাঁতে ভাব কমে আসবে অনেকটা। কারণ গাছ অনেক জলীয়বাষ্প তৈরি করে। সেটা অবশ্যই খুব উপকারি ব্যাপার। কিন্তু বর্ষায় এই ভালো ব্যাপারটিই আপনার ভোগান্তির কারণ হতে পারে। ফাঙ্গাস এবং ফাঙ্গাসজণিত রোগ বাড়াতে পারে।
৮। পর্দা
বৃষ্টির দিনে ভারী পর্দা ব্যবহার না করাই ভাল। এতে ঘরের বাতাস বের হয় না, বাইরের বাতাসও প্রবেশ করে কম। এই আবহাওয়ায় ঘর আরও গুমট হয়ে যায়। তাই, হালকা রংয়ের হালকা হালকা পর্দা ব্যবহার করুন।
৯। জীবাণুনাশক
ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া সকল ক্ষেত্রে জীবাণুনাশক ব্যবহার করুন। ভেজা আবহাওয়ায় জীবাণুর সংক্রমণ হয় অনেক বেশী। তাই সবকিছুই কম পানি ব্যবহার করে পরিষ্কার করুন, শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, পোশাক রোদে শুকাতে না পারলেও অন্তত ধোয়ার সময় গরম পানি ব্যবহার করুন।
১০। বিদ্যুৎ সংযোগ
বর্ষায় বিদ্যুৎ সংযোগ ঠিক না থাকা, লাইন কেটে যাওয়া, শর্ট সার্কিট হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশী। তাই সব লাইন আগে থেকে ঠিক করে নিন। বার বার পরীক্ষা করুন কোন সমস্যা আছে কিনা। বিপদ হওয়ার আগে সাবধান হন।
ছবি – প্রিন্টারেস্ট.কম
লিখেছেন- পাপিয়া সুলতানা।