ভালো কোন অনুষ্ঠানে সবসময় পার্লারে গিয়ে সাজা সম্ভব হয়ে ওঠে না। সাজের মধ্যে সব ঠিকঠাক মতো হলেও অনেকেই বেইজ মেকআপ করতে পারেন না ঠিকভাবে। আর মেকআপ-এর বেইজটা ঠিক মতো না হলে চেহারা ফুটে উঠে না। পারফেক্ট বেইজ মেকআপ খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ত্বকে মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য পারফেক্ট বেইজ মেকআপ অনেক জরুরী।
ঘরে বসে বেইজ মেকআপ করার পদ্ধতি
১. প্রথমে ভালো করে মুখ ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। যাদের ত্বক তৈলাক্ত তারা তুলা দিয়ে টোনার লাগান। তারপর অয়েল ফ্রি ময়েশ্চারাইজার লাগান। আর যাদের ত্বক শুষ্ক তারা ময়েশ্চারাইজার লাগান। এরপর দশ মিনিট অপেক্ষা করুন!
২. এবার কনসিলার লাগান চোখের নিচে ও চেহারার যেসব জায়গায় কালো দাগ আছে সেসব জায়গায়ও কনসিলার লাগান। আস্তে আস্তে সময় নিয়ে লাগান। যেসব জায়গায় কালো ছোপ আছে সেখানে একটু যত্নের সাথে কনসিলার লাগান।
৩. এখন লিকুইড ফাউন্ডেশন দিতে পারেন অথবা প্রেসড পাউডার লাগাতে পারেন। তবে মনে রাখবেন দিনের বেলা প্রেসড পাওডার ফাউন্ডেশন হিসেবেই লাগাবেন। আর রাতে ফাউন্ডেশন স্পঞ্জ ভিজিয়ে লাগাবেন। এরপর শুকনো পাউডার লাগাবেন। নিয়মিত ব্যবহার করলে এক মাস পর পর স্পঞ্জ বদলাতে হবে। ফাউন্ডেশন অবশ্যই ত্বকের রঙয়ের সাথে মিলিয়ে নেবেন।
৪. রাতের বেলা প্যানকেক ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন। এরপর লুজ পাউডার লাগাবেন। দিনে সানস্ক্রিন লাগাবেন মেকআপ-এর আগে। বেইজ মেকআপ-এর জিনিস অবশ্যই ভালো ব্র্যান্ডের হতে হবে!
৫. ফাউন্ডেশন না দিতে চাইলে টোনার বা ময়েশ্চারাইজার দিন। এরপর পাউডার ব্রাশ দিয়ে লাগিয়ে নিন! এতে ত্বক উজ্জ্বল দেখাবে।
৬. যাদের ত্বক সাধারণ তারা লুমিনেটর লাগাতে পারেন। এটি একটি লিকুইড লোশন, যা ত্বকে উজ্জ্বল আভা আনে। রাতে এটি বেশি ভালো লাগে। হাতে নিয়ে আলতো করে লাগাবেন।
৭. চিকবোন বরাবর ব্লাশ লাগানো ভালো। আপনার পছন্দ মতো রঙের ব্লাশ লাগান।
৮. ভ্রু আঁকতে ভুলবেন না! কারণ বেইজ মেকআপ-এর পর ভ্রু হালকা হয়ে যায়।
পারফেক্ট বেইজ মেকআপ পেতে প্রয়োজনীয় টিপস!
(১) মুখে মেকআপ দেওয়ার আগে ভালো করে মুখ স্ক্রাব করুন। যেকোনো ফলের তৈরি স্ক্রাব অথবা চালের গুঁড়া, মধু, চিনি দিয়ে স্ক্রাব বানিয়ে ব্রাশ দিয়ে মুখে ঘড়ির কাটার উল্টো দিকে যেভাবে ঘুরবে ঠিক সেভাবে পুরো মুখ ভালো ভাবে স্ক্রাবিং করুন।
প্রসঙ্গত প্রোডাক্টগুলো সম্পর্কে আপনাদের জিজ্ঞাসা থাকতেই পারে। কোথা থেকে পাবেন? আদৌ আসল পণ্য নাকি নকল পণ্য কিনছেন? দাম কত? আপনার সুবিধার্থে সাজগোজ পুরো প্রক্রিয়াটি সহজতর করে তুলেছে শপ.সাজগোজ.কম।
(২) স্ক্রাবিং-এর পর বরফ নিয়ে মুখে ৫ মিনিট ঘষুন।
(৩) মুখে টোনার লাগান। নিজের ত্বকে স্যুট করে এমন কোন ক্রিম লাগিয়ে মাসাজ করুন ।
(৪) মুখকে কিছু সময় শুকনো রাখুন।
(৫) ত্বকে মেকআপ দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য প্রাইমার অথবা বিবি ক্রিম দিয়ে মুখের বেইজ করে নিন।
(৬) ময়েশ্চারাইজার বেইজড প্রাইমার দিয়ে মুখ এবং ঘার ম্যাসাজ করুন।
(৭) কনসিলার সব সময় আপনার ত্বকের রঙ থেকে এক শেড গাঢ় রঙ নেবেন।
(৮) ত্বকের যত্নের ক্ষেত্রে যদি কোনো ব্যতিক্রম ঘটে তবে ক্রিম বা লিকুইড বেইজ ব্যবহারে সমস্যা হওয়ার কথা। এ ছাড়া ত্বকের যত্ন যথাযথভাবে নিলে ক্রিম বা লিকুইড বেইজ ব্যবহারে আপনার সমস্যা হওয়ার কথা নয়। বিশেষ করে ক্লিঞ্জিং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজার-এর রুটিন মেনে চলা জরুরি।
(৯) ব্লাশ কম-বেশি ব্যবহারের ওপর নির্ভর করে মেকআপ-এর তীব্রতা। লিপস্টিক এবং ব্লাশ-এর রঙের মধ্যে সামঞ্জস্য রাখাটা মেকআপ-এর জন্য খুবই জরুরি।
(১০) আজকাল বাজারে বিবি ক্রিম অথবা এক ধরনের কমপ্যাক্ট পাউডার পাওয়া যাচ্ছে, যা ব্যবহার করলে আলাদা করে অনেক কিছু ব্যবহার করার প্রয়োজন নেই! ত্বকে যাদের কোনো দাগ নেই তারা হালকা একটু পাউডার পাফ করে গালে ব্লাশন বুলিয়ে নিলেই বাড়তি মেকআপ-এর প্রয়োজন পরে না!
(১১) মেকআপ ভারি হলে অলিভ অয়েল দিয়ে মুখে কিছুক্ষণ মালিশ করে মেকআপ ওঠান। এরপর ব্যবহার করেন ক্লিনজার এবং ময়েশ্চারাইজার!
তো! আর পার্লার নির্ভর না হয়ে নিজেই ঘরে বসে করে নিন পারফেক্ট বেইজ মেকআপ!
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; সাটারস্টক