শীতকালে শুধু ত্বকের যত্ন নিলেই হবে না। একই সাথে চুলেরও যত্ন নিতে হবে। কারণ এসময় ত্বকের পাশাপাশি আমাদের চুলের উপরও প্রভাব পড়ে। নীচে শীতকালে চুলের যত্ন নেয়ার কিছু উপায় দেয়া হলো –
০১. ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেলের সাথে এভোক্যাডো আর কলা মিশিয়ে নিন। সবচেয়ে ভালো হয় এগুলো ব্লেন্ডারে মিশিয়ে নিলে। এরপর চুলে দিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিন। ১ ঘণ্টা পর চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। হার্বাল শ্যাম্পু ব্যবহার করলে ভালো। এভোক্যাডো তে রয়েছে প্রচুর ভিটামিন এ এবং ডি যা আপনার চুলের জন্য উপকারী। তাছাড়া চুলের দ্রুত বৃদ্ধিতেও এটি অনেক সাহায্য করে। এভোক্যাডো আগোরা, নন্দন, মিনা বাজারে পেয়ে যাবেন।
০২. শীতকালে চুল হালকা গরম পানি দিয়ে ধোয়া উচিত। তবে কখনই খুব গরম পানি দিয়ে চুল ধোয়া যাবে না। এতে চুল পড়ে অনেক। শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুলে অবশ্যই কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন।
০৩. রাবার ব্যান্ড দিয়ে চুল বাঁধবেন না। বিশেষ করে চিকন রাবার ব্যান্ড গুলো।
০৪. আমরা কম বেশি সবাই শীত কালে দু মুখো চুলের সমস্যায় পড়ি। এ সমস্যার আসলে একটাই সমাধান। যত টুকু চুলের ক্ষতি হয়েছে তত টুকু অংশ সমান করে কেটে ফেলা।
০৫ সকালে বের হওয়ার আগে আপনি রুক্ষ চুল নিয়ে বের হতে চাচ্ছেন না আবার তেল দিয়ে চুল চিপচিপে করেও বের হতে চাচ্ছেন না। এক্ষেত্রে খুব সহজ একটি সমাধান আছে। একটি স্প্রে বোতলে সমপরিমাণ পানি আর অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিন। এরপর আপনার চুলের উপর ২ বার স্প্রে করে নিশ্চিন্তে বের হয়ে যেতে পারেন। এতে আপনার চুল খুব রুক্ষ হয়েও থাকবেনা আবার তেল চিপচিপে হয়েও থাকবেনা। চুলের ময়েশ্চারের মাত্রাও ঠিক থাকবে। ফলে চুল দুর্বল হবে না।
০৬. ভেজা চুলে কখনও বের হবেন না। অতিরিক্ত ঠান্ডা বাতাসে ভেজা চুলে বের হলে কিউটিকেলের অনেক ক্ষতি হয়, ফলে চুল ঝরে পড়ে।
০৭. গোসলের আগে কিছুক্ষণ চুলে এ্যলোভেরা জেল ম্যাসাজ করতে পারেন। এতে চুলের রুক্ষতা অনেক কমে যাবে।
০৮. শীতকালে চুল খোলা রাখার চেয়ে বেঁধে রাখা ভালো। কারণ বিভিন্ন গরম কাপড় বিশেষ করে উলের তৈরি কাপড়ের সাথে চুলের ঘষা লেগে চুলের ময়েশ্চার কমে যায়। ফলে চুল পড়তে থাকে। যারা উলের টুপি পড়েন তাদের চুল আরো বেশি ঝরে পড়ে। তাই এমন টুপি ব্যবহার করুন যেগুলোর ভেতরের অংশে নরম কাপড় থাকবে। আপনি নিজেই টুপির ভেতরের অংশে একটা পাতলা কাপড় সেলাই করে নিতে পারেন।
০৯. এ সময় ভেজা চুল থেকে ঠান্ডা লেগে যাবার ভয়ে অনেকেই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করেন। এতে চুল পড়ে যাবার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়। কারণ হেয়ার ড্রায়ার মাথার ত্বক কে অতিরিক্ত শুষ্ক করে তোলে। ফলে খুশকির সমস্যা দেখা দেয় আর খুশকির কারণে চুল পড়তে থাকে।
১০. চুল যেন রুক্ষ না হয় সেজন্য খুব সহজ একটি উপায় হচ্ছে রাতে ঘুমানোর আগে চুলে তেল দিন এবং শাওয়ার ক্যাপ পড়ে থাকুন। সকালে উঠে চুল শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সবচেয়ে ভালো হয় যদি অলিভ অয়েল দিতে পারেন।
১১. চুল রুক্ষ ও মলিন হয়ে গেলে চুলের গোড়া এবং পুরো চুলে মধু দিয়ে আধা ঘণ্টা গরম তোয়ালে দিয়ে চুল ঢেকে রাখুন। এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
১২. শীত কালে খুশকির সমস্যা অনেক বেড়ে যায়। কারণ এ সময় মাথার ত্বক অনেক শুষ্ক থাকে। খুশকি কমিয়ে আনার জন্য, গোসলের ৩/৪ ঘণ্টা আগে সপ্তাহে ১ দিন গরম নারিকেল তেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে চুলে দিতে পারেন।
লিখেছেন – সাবরিনা
ছবি – ম্যাগাজিন.ফক্সনিউস.কম