মেকাপের মধ্যে অন্যতম অংশ যেটি তা হলো আই মেকাপ। আর আই মেকাপের মাধ্যমেই কিন্তু পুরো লুক চেঞ্জ করে ফেলা যায়। আর এক্ষেত্রে যে প্রোডাক্টটি বড় ভুমিকা রাখে, তা হলো আইশ্যাডো। কিন্তু আইশ্যাডো কি শুধুমাত্র চোখ সাজানোর জন্যেই ব্যবহার করা হয়? একদমই না। আইশ্যাডো ব্যবহার করা যায় অনেকভাবেই। কি? অবাক হলেন? আচ্ছা, চলুন জেনে নিই, কী কী কাজে ব্যবহার করা যায় এই আইশ্যাডো।
(১) আইশ্যাডো ব্যবহার করতে পারবেন আইব্রো আঁকতে। যেকোন ম্যাট ডার্ক ব্রাউন আইশ্যাডো নিয়ে একটি অ্যাঙ্গেল্ড ব্রাশের সাহায্যে ছোট ছোট স্ট্রোকের মাধ্যমে এঁকে নিন আইব্রো।
[picture]
(২) ড্রেসের সাথে ম্যাচিং নেইলপলিশ নেই?? কোন ব্যাপার না। আপনার ড্রেসের সাথে ম্যাচিং একটি আইশ্যাডো কালার নিন। একটি কাঠির সাহায্যে অল্প একটু আইশ্যাডো গুঁড়ো করে তুলে নিয়ে একটি প্লাস্টিক শীটে রাখুন। এর মধ্যে ভালোমতো মিক্স করুন ক্লিয়ার নেইল পলিশ। ব্যস, আপনার চাহিদা মতো কালারের নেইলপলিশ তৈরি হয়ে গেল। এবার, নখে লাগিয়ে ফেলুন।
(৩) কন্ট্যুরিং পাউডার না থাকলেও কাজ চালাতে পারবেন আইশ্যাডো দিয়ে। আমি যখন মেকাপে একদম নতুন ছিলাম। তখন আমিও এ কাজটি করতাম। যেকোন ব্রাউন/ডার্ক ব্রাউন আইশ্যাডো ব্রাশে নিয়ে কন্ট্যুরিং এড়িয়াগুলোতে কন্ট্যুর করে নিন।
(৪) আইশ্যাডো ব্যবহার করতে পারেন আইলাইনার হিসেবেও। যেকোন ডার্ক কালার একটি অ্যাঙ্গেল্ড ব্রাশে নিয়ে লাইনারের মতো করে লাগিয়ে নিন।
(৫) ইদানিং সবাই গ্লিটার আইলাইনার বেশ পছন্দ করছে। এক্ষেত্রে আপনার যে কোনো মেটালিক আইশ্যাডো এর সাথে একটু মেকাপ সেটিং স্প্রে মিক্স করে একইভাবে ব্রাশের সাহায্যে লাইনিং করে নিতে পারেন চোখে। দেখতে অনেকটাই গ্লিটার লাইনারের মতোই লাগবে।
(৬) মেকাপটা তো করে ফেলেছেন। কিন্তু মানানসই রঙ এর ব্লাশ নেই আপনার কালেকশন এ। তাহলে এবার কি করবেন? কোনো চিন্তা নেই। মানানসই কালারের আইশ্যাডো থাকলে সেটিই কাজে লাগান। অল্প এ একটু আইশ্যাডো গুঁড়ো করে নিয়ে এর মধ্যে ১-২ ফোটা ময়েশ্চারাইজার যোগ করুন। এবার মিক্স করে নিন ভালো মতো। এটি আঙুলের সাহায্যে ক্রিম ব্লাশের মতো করে ব্যবহার করুন।
(৭) পাউডার হাইলাইটার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন আইশ্যাডো। শিমারী কালার যেমন- সিলভার, গোল্ডেন, শ্যাম্পেইন, রোজ গোল্ড ইত্যাদি ধরণের কালার ব্রাশে নিয়ে ফেস এর হাই পয়েন্টগুলোতে লাগিয়ে নিন।
(৮) চুল পড়তে পড়তে মাথার সামনের দিক খালি হয়ে গেছে! চুল বাধতে গেলে দেখতে ফাকা ফাকা এবং বাজে লাগে? ডার্ক গ্রে কালার আইশ্যাডো একটি ছোট ব্রাশে নিয়ে মাথার ফাঁকা জায়গাগুলোতে লাগিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এতে করে মাথা দেখতে বাজে লাগবে না এবং মনে হবে মাথায় অনেক চুল আছে।
(৯) কালার কারেক্টিং কনসিলার নেই? তাহলে আইশ্যাডোকেই কাজে লাগান। আপনার পছন্দসই কোনো কনসিলার এর সাথে গ্রিন/অরেঞ্জ/পিচ/পার্পল কালারের ম্যাট আইশ্যাডো গুঁড়ো করে নিয়ে খুব ভালোভাবে মিক্স করুন। ব্যস, আপনার কালার কারেক্টিং কনসিলার রেডি।
(১০) পছন্দের রঙ এর লিপস্টিকও তৈরি করে নিতে পারবেন এই আইশ্যাডো দিয়েই। এর জন্য পছন্দসই কালারের আইশ্যাডো গুঁড়ো করে নিয়ে এতে কয়েক ফোঁটা কোকোনাট অয়েল এবং লাইট কালারের ফাউন্ডেশন যোগ করুন। ভালোমতো মিশিয়ে নিন। আপনার লিকুইড লিপস্টিক তৈরি। এবার লিপ ব্রাশের সাহায্যে ঠোঁটে অ্যাপ্লাই করুন।
(১১) লিপস্টিক এ অম্ব্রে ইফেক্ট আনতে চাইলে, ঠোঁটে প্রথমে লিপস্টিক লাগিয়ে নিন। এবার ঠোঁটের কোনের দিকগুলোতে লিপস্টিক এর থেকে ডার্ক কালারের আইশ্যাডো লাগিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে দিন।
(১২) আজকাল মেটালিক লিপস্টিক অনেকেই পছন্দ করছেন। এটি মেকাপে একটা গর্জিয়াস লুক এনে দেয়। ঠোঁটে মেটালিক ভাব পেতে লিপস্টিক এর উপরের আঙুল এর সাহায্যে অল্প একটু শিমারী /মেটালিক আইশ্যাডো লাগিয়ে নিন। আঙুল দিয়েই ভালোভাবে ব্লেন্ড করে দিন।
এই তো জেনে নিলেন যে, শুধুমাত্র চোখ সাজানো ছাড়াও আরও কত রকম ব্যবহার রয়েছে আইশ্যাডো এর। তো এখন থেকে এই একটা প্রোডাক্ট দিয়েই অনেক রকম কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন।
ছবি – দিলিস্ট ডট কম, মেকাপফরএভার ডট কম
লিখেছেন – জান্নাতুল মৌ