প্রতিদিনের হাজারো কাজ, ব্যস্ততার মাঝে নিজেকে ফিট এবং সুস্থ রাখাটাই এখনকার সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেইসাথে জীবনকে সঠিকতালে নিতে মানসিক প্রশান্তিও খুব প্রয়োজনীয়। এই দুটি বিষয়ের সম্মীলন ঘটানোর জনপ্রিয় উপায় হলো ইয়োগা বা যোগব্যায়াম। ফিটনেস শব্দটির সাথে পুরো বিশ্বজুড়েই ইয়োগা একই সঙ্গে উচ্চারিত হয়। নিজের প্রাত্যহিক জীবনের ক্লান্তি দূর করে শারীরিক ও মানসিক দক্ষতা বাড়াতে ইয়োগা হতে পারে প্রধান উপায়। তাই, সাজগোজের আয়োজনে এবার রয়েছে সুস্থ থাকতে ইয়োগা সম্পর্কিত নানা কথা।
শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে ইয়োগা
প্রথমেই শুরু করা যাক ইয়োগার শারীরিক ও মানসিক নানা রকমের উপকারের মাধ্যমে। কী কারণে শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় ইয়োগা বেছে নেবেন?
১) ইয়োগা সব ধরনের মানুষের জন্যই উপযোগী। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো এতে নির্দিষ্ট কোন ফিটনেসের প্রয়োজন হয় না। যেকোন বয়সেই ইয়োগা শুরু করে আপনি উপকৃত হতে পারেন।
২) ইয়োগা বিভিন্ন রকমের হতে পারে যা আপনি আপনার পছন্দ এবং সুবিধামতো বেছে নিতে পারবেন সহজেই। হট ইয়োগা, পাওয়ার ইয়োগা, রিলাক্সেশন ইয়োগা, প্রেনাটাল ইয়োগাসহ বিভিন্ন রকমের ইয়োগা রয়েছে যা আপনি বাড়িতে বসেই চেষ্টা করতে পারেন। যেমন, একেবারে শুরুতে হাথা ইয়োগা (Hatha Yoga) নামক ইয়োগা দিয়ে শুরু করতে পারেন। আবার নিজের কর্মক্ষমতা বাড়াতে পাওয়ার ইয়োগা বেশ কার্যকরী।
৩) মানসিক স্থিরতা এবং সুস্থতায় ইয়োগা রাখতে পারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এমনকি নিজের প্রয়োজন বুঝে ইয়োগার স্টাইলও বদলে ফেলতে পারেন।
ঘরে বসে সুস্থ থাকতে ইয়োগা
১. শুরুতেই যে বিষয়টি প্রয়োজন তা হলো নিজের ইচ্ছা। নিজেকে ইয়োগার জন্য প্রস্তুত করা।
২. নিজের প্র্যাকটিস-এর জন্য ঘরের শান্ত ও পরিষ্কার একটি স্থান বেছে নিন। জায়গাটিতে ইয়োগার জন্য প্রয়োজনীয় ম্যাট, কম্বল কাছেই রাখুন।
৩. নিজের লক্ষ্য স্থির করার ব্যাপারে বাস্তব বিষয় চিন্তা করুন। প্রথমেই অনেকক্ষণ ধরে ইয়োগা করা সম্ভব না, তাই সময়টা ১০ থেকে ১৫ মিনিটের মধ্যেই রাখুন প্রথম দিকে।
৪. সাধারণত খালি পেটেই ইয়োগা শুরু করা উচিত। অথবা, খাবার খাওয়ার দুই/তিন ঘণ্টা পরেও করতে পারেন।
৫. ইয়োগা করার সময় নিজে যে পোশাকে আরামবোধ করেন তা পরে নিন।
৬. সুস্থ থাকতে ইয়োগা করতে শুরু করুন বেসিক ইয়োগা সিকোয়েন্স দিয়ে। এরপর নিজের দক্ষতা বাড়লে নিজের স্টেপ পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।
৭. ইয়োগার কোন বেসিক ভিডিও সাথেই রাখবেন এবং ধীরে ধীরে চেষ্টা করতে থাকবেন। ইয়োগা ভিডিও বাছাই করার ব্যাপারেও নিজের সামর্থ এবং স্বস্তির দিকটা মাথায় রাখুন।
৮. শুরু করুন ফ্লোর এক্সারসাইজ দিয়ে। এটিকে মূলত ইয়োগার ওয়ার্মআপ বলা যেতে পারে।
৯. এরপর সাধারণ কৌশলগুলো ধীরে ধীরে রপ্ত করার চেষ্টা করুন। তবে একই কৌশল নিয়ে পড়ে না থেকে বিভিন্ন কৌশল শিখতে চেষ্টা করুন।
১০. ইয়োগা করার সময় নিজের শরীর, সময় ছাড়া অন্য কোন কিছু নিয়ে ভাবা চলবে না। একমনে নিবিষ্টচিত্তে এক্সারসাইজ করে যান।
১১. ইয়োগা করা শেষ হলে নিজেকে কিছুটা সময় নিয়ে শান্ত করুন, পানি খান এবং বিশ্রাম নিন। দেখবেন মন ফুরফুরে হয়ে উঠেছে।
১২. সম্ভব হলে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একসাথে ইয়োগা করুন। এতে করে পরিবারের সদস্যরাও নিজেদের মাঝে বেশ কার্যকরী ও স্বতস্ফুর্তভাবে সময় কাটাতে পারবেন।
ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক