কলা এমন একটি ফল যা একদিকে আপনাকে করে তুলবে সুস্বাস্থ্যের অধিকারী, তেমনি অন্যদিকে করে তুলবে রূপে গুণে অনন্য। কলাতে রয়েছে ভিটামিন এ, বি, সি এবং ই সহ অন্যান্য মিনরেল্স যেমন পটাশিয়াম, জিংক, আয়রন্ ইত্যাদি। কলাতে থাকা ভিটামিন এ প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে এবং এতে থাকা এন্টিব্যাকটেরিয়াল প্রপার্টিস ব্রণ এবং মুখের বিভিন্ন দাগ দূর করতে সাহায্য করে। সুন্দর স্বাস্থ্যজ্জল ত্বক থেকে শুরু করে শরীরের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান পেতে পারেন এই কলার মাধ্যমে। কলাতে থাকা এতো এতো ভিটামিন এবং মিনারেল্স এর সমাহার শরীরকে ফিট রাখার পাশাপাশি ত্বকে নিয়ে আসে প্রাকৃতিক এবং যৌবনদীপ্ত উজ্জ্বলতা।
ত্বকের যত্নে কলাঃ
– চোখের ফোলা ভাব কমাতে কলা পেস্ট করে চোখের নীচে লাগিয়ে রাখুন। ১৫-২০ মিনিট রেখে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
– শুষ্ক ত্বকের ক্ষেত্রে পাকা কলা ভালো মত পেস্ট করে এতে চিনি মেশান। মুখে লাগিয়ে ধীরে ধীরে ঘষুন। কিছুক্ষণ পর ধুয়ে ফেলুন। এটি খুব ভালো স্ক্রাব হিসেবে কাজ করে। কলা ত্বক কে ময়েশ্চারাইজ করে এবং চিনি ত্বকের মৃত কোষ দূর করে ত্বক কে উজ্জ্বল করে তোলে।
– তৈলাক্ত ত্বকের জন্য ১ চা চমচ দুধ, ২ চা চমচ লেবুর রস এবং অর্ধেক কলা ভালো মতো মিশিয়ে পেস্ট করে মুখে লাগান। ২০ মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্ক টি ত্বকের অতিরিক্ত তেল কমিয়ে ত্বককে কোমল করে।
– স্বাভাবিক ত্বকের জন্য অর্ধেক কলা এবং এক চামচ মধু মিশিয়ে মুখে লাগান। ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। কলা এবং মধু এই দুটি জিনিসের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক ভাবে ময়েশ্চারাইজ করার উপাদান।
[picture]
চুলের যত্নে কলাঃ
– একটি কলা ভালো মতো পেস্ট করে নিন। এরপর এর সাথে ২ চামচ টক দই মিশিয়ে চুলে লাগান। সপ্তাহে একবার করে ব্যবহার করলে এক মাসের মধ্যেই পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন। চুল আগের চেয়ে উজ্জ্বল এবং ঝলমলে হবে।
– ২-৩ টি কলা পেস্ট করে এর সাথে ২-৩ চা চামচ মধু মিশিয়ে চুলের গোড়ায় এবং স্ক্যাল্পে ভালো মতো লাগান। এরপর মাথায় একটি শাওয়ার ক্যাপ বা তোয়ালে পেঁচিয়ে রাখুন। এক ঘণ্টা পর শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। নিষ্প্রাণ এবং ফ্রিজি চুলের জন্য এটি একটি কার্যকর হেয়ার মাস্ক।
– ২ চা চামচ ক্যাস্টর অয়েল, ২ চা চামচ নারিকেল তেল, একটি ডিম এবং একটি কলা ভালো মতো মিশিয়ে চুলে এবং স্ক্যাল্পে লাগান। ২ ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এই মাস্ক টি চুল পড়া কমাতে সাহায্য করে এবং চুলকে নরম এবং রেশমি করে। ভালো ফল পেতে সপ্তাহে ২ বার ব্যবহার করুন।
স্বাস্থ্য রক্ষায় কলাঃ
– একটি গবেষণা অনুসারে, কলা মানুষের ডিপ্রেশন কমাতে সাহায্য করে। এর কারণ হলো কলাতে রয়েছে ট্রিপ্টোফ্যান নামক এক ধরনের প্রোটিন যা মুড ইম্প্রুভ করে ডিপ্রেশন কমিয়ে আনতে সাহায্য করে।
– মশার কামড়ের জায়গায় জ্বালা পোড়া কমাতে কলার খোসা ঘষুন। ভালো ফল পাবেন।
– কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম এবং খুব কম পরিমাণে লবন যা ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়ক।
– কলাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে আয়রন যা রক্তে হিমোগ্লোবিনের প্রোডাকশন বাড়িয়ে দেয়। তাই এনিমিয়া বা রক্তশুন্যতা প্রতিরোধে কলা অনেকটা সাহায্য করতে পারে।
– কলাতে থাকা ভিটামিন বি নার্ভাস সিস্টেম শান্ত রাখতে সাহায্য করে।
– একটি গবেষণা অনুযায়ী, রেগুলার ডায়েট এর সাথে কলা যোগ করার মাধ্যমে স্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করার সম্ভাবনা ৪০% কমে যায়।
লিখেছেনঃ নাহার
ছবিঃ ফেমিনিয়া.কম