আজকাল কি শরীরটা একটু ভারী লাগছে? পেটের শেইপ কিছুতেই কন্ট্রোল করতে পারছেন না? এত শখের জামা কাপড়গুলো পরলে আর ভালো লাগছে না? এখনই সময় সচেতন হবার। নিশ্চয়ই জানেন, পেট আর কোমরের জমে থাকা মেদ দূর করা এত সহজ না। এর জন্য চাই রেগুলার এক্সারসাইজ আর ডায়েট কন্ট্রোল। আর আজ বলবো এমন ১৩টি খাবারের কথা যা আপনি আপনার খাদ্যতালিকায় যোগ করলে, পেটের মেদ কমাতে যুদ্ধে এগিয়ে যাবেন অনেকখানি। আবার সাথে সাথে পাবেন সুস্বাস্থ্য আর সুন্দর ত্বকও। চলুন জেনে নেই ১৩টি খাবার সম্পর্কে যা সাহায্য করবে আপনার পেটের মেদ কমাতে।
পেটের মেদ কমাতে ১৩টি খাবার
১) ALMONDS / কাঠবাদাম
কাঠবাদামে আছে প্রচুর প্রোটিন, ফাইবার আর ভালো কলোস্টেরল। অল্প কিছু কাঠবাদাম অনেকক্ষণ পর্যন্ত আপনার পেট ভরা রাখতে পারে, আর এই কারণে ক্ষুধার অজুহাতে এটা সেটা খেয়ে ওজন বাড়িয়ে ফেলার চান্স কমে যায়। ভালো ফল পেতে প্রতিদিন সকাল ১১ টা অথবা বিকেল ৪-৫ টায় ৬-৭ টা কাঠবাদাম খেয়ে নিন। এতে থাকা ভিটামিন আর মিনারেলস আপনার স্কিন, হেয়ার আর হেলথ রাখবে পারফেক্ট।
২) আখরোট
অনেক গবেষণায় দেখা গেছে, রেগুলার আখরোট বা ওয়ালনাট ওজন কমাতে সাহায্য করে আবার একই সাথে শরীরে মেদ জমতেও দেয় না। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যা বিভিন্ন জটিল রোগের প্রতিরোধ করে আর অনেকক্ষণ পর্যন্ত দেহে শক্তি যোগায়।
৩) আপেল
নিশ্চয়ই জানেন প্রতিদিন একটি আপেল ডাক্তারকে রাখে শতহাত দূরে! আপেলে আছে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার! আর ফাইবার স্পেশালি আমাদের পেটে সহজে মেদ জমতে দেয় না। আপেল আমাদের মেটাবলিজম ত্বরান্বিত করে, প্রচুর মিনারেল আর ভিটামিন যোগায়। আর সাথে সাথে এতে ক্যালরিও থাকে অনেক কম। ডায়েটে থাকাকালীন সময়ে তাই নিশ্চিন্তে খেতে পারেন আপেল।
৪) টক কমলা ও মালটা
ভিটামিন সি এর আধার, ক্যালরি এতে থাকে খুবই কম। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ওজন কমানর জন্য তাই যখনই আপনার মিষ্টি কিছু খেতে ইচ্ছা করবে, একটা কমলা বা মালটা খেয়ে নিন।
৫) তরমুজ
মিষ্টি তরমুজ খেতে খুবই ভালো লাগে, তাই না? কিন্তু এতে প্রায় সবটুকুই আসলে পানি। তাই খুব কিছু খেতে ইচ্ছা করলে মুড়ি, টোস্ট, বিস্কিটের বদলে খেয়ে নিন এক বাটি তরমুজ। পেটও ভরবে, আবার শরীরে অতগুলো এক্সট্রা ক্যালরিও যাবে না।
৬) পেয়ারা
আপেলের মত পেয়ারাতেও আছে হাই ফাইবার। তাই পেয়ারার সিজনে পেয়ারা খেলেও আপনি অযথা পেটের মেদ বেড়ে যাওয়া অনেক ভালো কন্ট্রোল করতে পারবেন।
৭) আমলকী
এতক্ষনে তো বুঝেই গেছেন, ভিটামিন সি মানেই ওয়েট লস!! আর আমলকী তো ভিটামিন সি এর রাজা! রোগব্যাধি, অতিরিক্ত ওজন দূরে রাখতে আর প্রতিদিনের দরকারি ভিটামিন সি পাওয়ার জন্য ২ টি আমলকী যথেষ্ট। খুবই সহজ, তাই না?
৮) অ্যাপল সাইডার ভিনেগার
এর মাধ্যমে ওজন কমানোর একটি ট্রিক আছে! এই ভিনেগার আসলে নিজে ওজন কমায় না। কিন্তু খাওয়ার আগে এক চামচ ভিনেগার এক গ্লাস পানিতে গুলিয়ে খেয়ে নিলে আপনার খাওয়ার রুচি কমিয়ে দিতে খুব হেল্প হবে। তাই যারা অনেক চেষ্টা করেও নিজের খাওয়া কন্ট্রোল করতে পারেন না, তারা চাইলেও বেশি খেতে পারবেন না।
৯) ডিম
দরকারি সব রকম পুষ্টি দেয়া আর অনেকক্ষণ পর্যন্ত পেট ভরা ভাব ধরে রাখার জন্য ডিমের কোন জুরি নেই। তাছাড়া রোজ সকালের নাস্তার সাথে ডিম খেলে আপনার দেহের ক্যালরি পোড়ার হারও বাড়ে, রেজাল্ট? ওয়েট লস!
১০) তিসি (FLAXSEED)
অনেকেই জানেন না যে তিসি আর তিসির তেলে আছে প্রচুর ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড যা কিনা মাছের তেলের চাইতে কয়েক গুণ বেশি! এজন্য উন্নত দেশগুলোতে তিসি খাওয়া ফ্যাডে রুপান্তরিত হচ্ছে। প্রচুর ওমেগা ৩ থাকার কারণে দেহের মেটাবলিজমের হার বাড়াতে তিসির কোন জুড়ি নেই। প্রতিদিন ১ চা চামচ তিসির তেল খেলে আপনি আপনার দেহে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখতে পারবেন।
১১) গ্রিন টি
এটা সবাই জানি, যে গ্রিন টি ওজন কমাতে সাহায্য করে। কিন্তু কততুকু?? একমাস গ্রিন টি খেলে কি আপনি শুকিয়ে কাঠ হয়ে যাবেন? না, প্রতিদিন অন্তত ৩ কাপ গ্রিন টি শরীর থেকে সর্বোচ্চ ৭০ ক্যালরি পুড়িয়ে ফেলতে পারবে। সাথে সাথে ডায়েট আর এক্সারসাইজ করলে আপনার ওজন আগের থেকে দ্রুত কমবে!
১২) টক দই
বিশেষ করে পেটের মেদ কমাতে টক দইয়ের ভুমিকা অনেক। তাছাড়া হজমেও দই অনেক সাহায্য করে। ভালো ফল পেতে প্রতিদিন অন্তত একবাটি দই খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন।
১৩) ওটমিল
চালডাল গমের থেকে বহুগুণ বেশি ফাইবার যুক্ত এই ওটমিল আমাদের পেট অনেকক্ষণ ভরা রাখতে পারে। তাই অল্প একটু খেলে অনেকক্ষণ আর কিছু খেতে ইচ্ছা করে না। হজমে সহায়তা করে আর কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করে। এতে খুব দ্রুত পেটের মেদ কমতে শুরু করে।
দ্রুত পেটের মেদ কমিয়ে আগের আকর্ষণীয় ফিগার ফিরে পেতে চান? দেরি না করে খাবার দাবার কন্ট্রোল করুন, হালকা এক্সারসাইজ করুন। আর খাদ্যতালিকায় আজেবাজে খাবার বাদ দিয়ে উপরের খাবারগুলো যোগ করুণ। মেদ পালিয়ে কূল পাবে না! তো খাবারে আনুন নতুনত্ব এবং নিজের পেটের মেদ কমাতে সাহায্য করুন।
ছবি- dnaindia, Shutterstock