আঙ্গুর প্রায় সবারই একটি পছন্দের ফল। অন্যান্য ফলের মতই আঙ্গুর প্রাকৃতিক ভিটামিনে ভরপুর। এতে যথেষ্ট ভিটামিন ‘সি’ এবং ‘এ’ আছে। এছাড়াও অল্প পরিমাণে পাওয়া যায় থায়ামিন, ভিটামিন B6, ভিটামিন ই, যা শরীরের খনিজ উপাদানের চাহিদা মেটায়। এতে আছে- পটাসিয়াম,ক্যালসিয়াম,এবং ফসফরাস। এছাড়া অন্যান্য খনিজ পদার্থও যেমন কপার, লোহা, ম্যাগনেসিয়াম,ম্যাঙ্গানিজ,সেলেনিয়াম, সোডিয়াম এবং দস্তা অল্প পরিমাণে পাওয়া যায়। আঙ্গুর বিভিন্ন রোগের বিরুদ্ধে এবং একটি সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখতে সাহায্য করে। দেখে নেয়া যাক এর স্বাস্থ্য বেনিফিট গুলো –
[picture]
– আঙ্গুরের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমূহ হার্টের রোগ, এমনকি অ্যালঝেইমার প্রতিরোধে সাহায্য করে। উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে।
– মজার ব্যাপার হলো, কিসমিসকে যতই শুকানো হবে ততই তার পুষ্টিমান বাড়বে। তাই কিশমিশ আঙ্গুরের চেয়ে বেশি শক্তির যোগান দিতে পারে। শ্বাসতন্ত্র, মূত্রথলি, বৃক্ক বা কিডনির নানা রোগ সারিয়ে তোলার ক্ষেত্রে সহায়তা করে কিশমিশ।
– এর ক্যালসিয়াম হাড়ের ক্ষয় রোধ করে।
– লাল আঙ্গুর রক্তের বিভিন্ন রোগ সারাতে ও রোধ করতে বিশেষভাবে কার্যকর।
– হাঁপানি, মাইগ্রেন এবং কোষ্ঠকাঠিন্যর মত সমস্যা দূর করতে এটি অত্যন্ত কার্যকরী।
– বীচিবিহীন আঙ্গুর থেকে তৈরি কিশমিশে ক্যান্সার প্রতিরোধ করার ক্ষমতা আছে। শুধু তাই না, কোনো কোনো ক্যান্সার এবং হৃদরোগ সারিয়ে তুলতে সাহায্য করে এ ধরনের কিশমিশ। এ জাতীয় কিশমিশ রক্তনালীগুলোকে ফ্রি রেডিক্যাল থেকে মুক্ত হতে সাহায্য করে এবং রক্তনালীগুলোর কোমলতা বজায় রাখে।
– নিমিষেই এর চিনি শরীরের রক্তে মিশে যায় বলে এটি ইনস্ট্যান্ট শক্তির খুব ভালো উৎস।
– শিশুদের দাঁতের গঠনে সাহায্য করে।
-আঙ্গুরে পটাশিয়াম আছে আর তাই হতাশা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে এ আঙ্গুর। বুক ধড়ফড় করার মতো উপসর্গও দূর করতে সাহায্য করে পটাশিয়াম। এই উপাদান বিষন্নতা দূর করে ও সুখ এবং আনন্দের একটি অনুভূতি সৃষ্টি করে। আঙ্গুর এভাবে হৃৎপিণ্ডের অনিয়মিত স্পন্দন দূর করে মানসিক বিষন্নতা কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে।
-আঙ্গুরে আছে প্রচুর ভিটামিন, যা দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও দেহের প্রোটিন লেভেল বাড়ায়। কিন্তু সম্প্রতি গবেষকরা জানালেন, আঙ্গুর চোখের সুরক্ষায়ও কাজ করে থাকে। আঙ্গুরে এমন এক ধরনের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা বার্ধক্যজনিত অন্ধত্বকে দূরে রাখে। চোখের বিশেষ করে রেটিনার সুরক্ষায় আগেভাগেই আঙ্গুর খাওয়া শুরু করতে হবে। যখন অন্ধত্ব কাছাকাছি চলে আসবে, তখন আঙ্গুর খেলে কোনও লাভ হবে না।
-আপনি যদি ওজন কমাতে চান, তবে ফলের তালিকায় আঙ্গুর বেছে নিন। কারণ আঙ্গুর আপনার দেহের ওজন না বাড়িয়েই অন্যসব দরকারি পুষ্টিকর উপাদান শরীরে পৌঁছে দেবে। যেমন– শর্করা, চিনি, প্রোটিন, ফাইবার,সম্পৃক্ত চর্বি।
ত্বকের যত্নে আঙ্গুরঃ
আঙ্গুরের স্বাস্থ্যকর গুণাগুন তো আছেই, তবে সেই সাথে ত্বকের যত্নেও আছে এর নানারকম ব্যবহার। আঙ্গুরের ব্যবহার আপনার ত্বকের সমস্যা প্রতিরোধ করে ত্বককে ভালো রাখে। জেনে নেয়া যাক এমন কয়েকটি টিপসঃ –
-কয়েকটি আঙ্গুর হাত দিয়ে আলতো করে পুরো মুখে মিনিট খানেক ঘষে নিন। এবার হালকা করে পানিতে মুখ ধুয়ে ফেলুন। একবারেই প্রাকৃতিক ফেইস ওয়াশের কাজ করবে এটা আপনার মুখে।
– এছাড়াও আঙ্গুর ম্যাশ করে মুখে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। রোদের পোড়া ভাব কাটিয়ে এতে আপনার ত্বক আরও উজ্জ্বল হবে।
– বিভিন্ন নামি–দামি স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টে আঙ্গুরের বীজ ব্যবহার করা হয়। কারণ এর নির্যাস অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বেনিফিট হিসেবে কাজ করে। যা ত্বকের কোষ রক্ষা করে , রক্ত প্রবাহ বাড়ায়, ত্বককে ভালো রাখে।
এবার আর দেরি কেন? বাজারের লিস্টে আঙ্গুরের নামটা লিখেই ফেলুন। নিজে খান, পরিবারের সবাইকে খাওয়ান।
লিখেছেনঃ রোজেন
ছবিঃ ম্যান্ডালিনজিরাত.কম