নতুন চাকরি জীবনে প্রবেশ করেছেন? এখন তবে আপনার অফিস এটিকেট শেখার সময়। অফিস এটিকেট মানেই কি অফিসের কাজ মন দিয়ে ঠিক করে সময় মতো করা আর সহকর্মীদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা? আচ্ছা, পোশাকের কথা কেন ভাবছেন না বলুন তো! অফিসিয়াল ড্রেস কোড মেইনটেইন করাটাও কিন্তু অফিস এটিকেটের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আসুন দেখে নেই ফরমাল ও ক্যাজুয়াল ড্রেস কোড কেমন হওয়া উচিত?
অফিসিয়াল ড্রেস কোড
১. কর্পোরেট ড্রেস কোড
‘কর্পোরেট’– শব্দটাতেই কেমন একটা ভাব-গাম্ভীর্যতা রয়েছে। তাই পোশাকেও থাকা চাই তেমন গাম্ভীর্যের ছোঁয়া। কর্পোরেট অফিসিয়াল ড্রেস কোড হিসেবে চোখ বন্ধ করে বেছে নিতে পারেন আমাদের দেশীয় সুতি কাপড়ের শাড়ি ও কামিজ। শাড়ির ব্লাউজের ক্ষেত্রে বড় গলার ব্লাউজ ও নটেড ব্লাউজ পরিহার করতে হবে স্ট্রিক্টলি।
শাড়ি, কামিজ বা স্যুট সব ক্ষেত্রেই রঙটা অবশ্যই হালকা হবে। সাধারণত ফরমাল পোশাকে হালকা নীল, সাদা, হালকা গোলাপী, ধূসর বা ছাই রঙ খুব প্রাধান্য পায়। তবে ফ্যাশন জগতের বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের মতে- খাকি রঙের পোশাক এড়িয়ে চলাই ভালো। শাড়ি জমিন খুব পাতলা- যেমন মসলিন, নেট এমন হওয়া যাবে না। আমাদের দেশে মেয়েরা সাধারণত স্যুট পরে না। তবে চাইলে, ফরমাল প্যান্ট, ফরমাল শার্টের সাথে একটা ব্লেজার পরতে পারেন।
গলায় নেকলেস না পরাই ভালো। কানে টব জাতীয় দুল পরতে পারেন তবে তা অবশ্যই যেন আপনার কানের লতি যেন ছাড়িয়ে না যায়। ছোট হাতলের স্যাচেল ( Satchel)– টাইপ লেদারের ব্যাগ। হাতে লেদার বা চেইনের ফরমাল ঘড়ি বেশ মানিয়ে যাবে। আর পায়ে? ১-৩ ইঞ্চির মতো টোও ক্লোসড হিল (Toe Closed Heel)– পরুন। এবার চুল ছোট হলে সুন্দর করে আঁচড়িয়ে খোলাই রাখুন। আর চুলটা যদি হয় কাঁধের নিচ পর্যন্ত বড়, তাহলে পনিটেইল বা চিগনন বান (Chignon Bun)– করলেই আপনি রেডি! মেকআপও চাই? চাইলে একেবারেই হালকা করে ফাউন্ডেশন ও ন্যুড কালারের কোন লিপস্টিক আর চোখে হালকা আইশ্যাডো। ব্যস! পুরোই ক্লাসি একটা লুক!
২. ক্রিয়েটিভ ড্রেস কোড
যখন আপনি ক্রিয়েটিভ তখন আপনার পোশাকেও তার প্রকাশ চাই। ক্রিয়েটিভের সাথে ফরমাল আউটফিট একেবারেই বেমানান। ক্রিয়েটিভ মানুষের চাই মনের উচ্ছ্বলতা। পোশাকেও তাই নানান রঙ ও ঢং না হলেই নয়। তাই বলে কি যাচ্ছেতাই? অবশ্যই পার্টি ড্রেস পরে অফিস করবেন না! তবে হ্যাঁ, ক্রিয়েটিভ অফিসের ড্রেস কোডে ক্যাজুয়াল স্টাইলটা ব্যাপারটা কিন্ত পারফেক্ট! আপনার অফিসের জন্য হাতে এখন অনেক অপশন। আপনি চাইলেই যে কোনো রঙের পোশাক বেছে নিতে পারেন। জিন্স বা লেগিংসের সাথে পরতে পারেন নিজের খুশি মতো টপস! সে কটন, নিটেড বা জর্জেট যেমনই হোক না কেন।
তবে শর্ত একটাই, ড্রেস অবশ্যই শালীন হতে হবে। টপস হিসেবে চাইলেই টি-শার্ট, ফতুয়া, বাটন ডাউন কলার (Button Down Coller)- এর শার্ট পরতে পারেন। এদের কাটিং- এ থাকতে পারে নানান বৈচিত্র্য! সাথে পছন্দ মতো কটি বা কেইপ অথবা শ্রাগ পরলেও দারুণ লাগবে। রঙের বাঁধাধরা নিয়মতো ক্রিয়েটিভদের জন্য নয়। শুধু ইল্যুমিনেটিং কোনো কাপড়ের পোশাক না পরলেই হবে। লেদারের বা চামড়ার জ্যাকেট পরতেও কোনো বাধাই নেই। চুল চাইলে খোলা রাখতে পারেন আবার বেঁধে নিলেও ভুল হবে না একটুও! কানে সৌখিন ফেদারের দুল থেকে ফরমাল টব পরলেও মানা নেই।
গলায় ফ্যাশনেবল লকেট পড়লে বেশ গর্জিয়াস পারসোনালিটির মনে হবে। হাতে ফ্যাশনেবল ঘড়ি, ব্রেসলেইট আরও স্টাইলিশ লুক দিবে আপনাকে। যেহেতু ক্রিয়েটিভদের অনেক বেশি সময় বাহিরে থাকতে হয়, তাই তারা বড় একটি ক্লাসিক হ্যান্ড ব্যাগ সাথে রাখতে পারেন। সাধারণত মুল স্টাইলের সু (Mule Shoe)– পরলে অফিসে বেশ স্মার্ট লাগে। মেকআপ দিলে একেবারেই হালকা আর গাঢ় রঙের লিপস্টিক দিয়ে বেশ গর্জিয়াস লুক নিতে পারেন।
কর্পোরেট কিংবা ক্রিয়েটিভ যেমন অফিসেই আপনি কাজ করুন না কেন, অফিস অনুযায়ী সঠিক পোশাক এটিকেট মেনে চললেই আপনার রুচিশীল ব্যক্তিত্ব ফুটে উঠবে। অফিসিয়াল পোশাক খুব দামী বা নামী ব্র্যান্ডের হতে হবে তা কিন্তু নয়। আপনার সাধ্যমত অফিসিয়াল ড্রেস কোড মেনে চললেও প্রফেশনালিজম বজায় থাকবে। তাহলে, এখন থেকে আপনার অফিস ও কাজের ধরন বুঝে অফিসিয়াল ড্রেস কোড বাছুন!
ভিডিও টিউটোরিয়াল – সাজগোজ ডট কম
ছবি- সাজগোজ
মডেল- এফা
স্টাইলিং- শ্রেষ্ঠা