পিম্পল তৈলাক্ত ত্বকের নারীদের জন্য সবচেয়ে ভয়ংকর একটি স্কিন প্রবলেম। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এমনিতেই একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন পরে। একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ তেল আমাদের ত্বকের জন্য জরুরী যা আমাদের ত্বককে স্বাস্থ্যবান রাখে, তারুণ্য ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং আমাদের ত্বককে শুষ্ক করার হাত থেকে রক্ষা করে। তৈলাক্ত ত্বকের সুবিধা হল, তেল বলিরেখা ও মুখের রঙের কোন পরিবর্তন হওয়া থেকে রক্ষা করে। কিন্তু তৈলাক্ত ত্বকের অসুবিধাও কম না। তৈলাক্ত ত্বকে খুব সহজে ধূলোবালি আটকে যায় এবং অতিরিক্ত তেল মুখের লোমকূপগুলোকে বন্ধ করে দেয়। এতে করে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হয়ে পিম্পল হওয়ার প্রকোপ বাড়ে। কিছু ক্ষেত্রে ত্বক পরিষ্কার না রাখায় পিম্পল দেখা দিতে পারে। পিম্পল সেটা যেমনই হোক তৈলাক্ত ত্বকের পিম্পল সারিয়ে তোলা বেশ কষ্টসাধ্য কাজ।
আসুন দেখে নেই কিভাবে খুব সহজে মাত্র ২টি কার্যকরী প্যাকের সাহায্যে আপনার তৈলাক্ত ত্বকের পিম্পল সারিয়ে তুলবেন এবং আপনার তৈলাক্ত ত্বকে পিম্পল হওয়া আটকাবেন!
তৈলাক্ত ত্বকের পিম্পল সারাতে ২টি ফেইস প্যাক
১) লেবুর রস ও মধু
তৈলাক্ত ত্বকের যত্নে লেবু সবচেয়ে ভালো ঘরোয়া উপাদান, লেবুতে উপস্থিত সাইট্রিক অ্যাসিড তৈলাক্ত ত্বকের তেল নিয়ন্ত্রণ করার সাথে সাথে ত্বকের ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধ করে ত্বকে পিম্পল হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়। মধুর অ্যান্টি-ব্যাক্টেরিয়াল উপাদান তৈলাক্ত ত্বকে পিম্পল হতে বাধা প্রদান করে, ত্বকের ময়েশ্চারাইজার-এর স্তর ঠিক রাখে ও ত্বক উজ্জ্বল করে তোলে।
যেভাবে করবেন:
একটি ফ্রেশ লেবু থেকে এক টেবিল চামচ রস নিয়ে সাথে সমপরিমাণ মধু নিয়ে একটি পাত্রে মিশান। দেখবেন এই দুই উপাদান মিলেমিশে বেশ গাড় লিকুইড আকার ধারণ করবে। এবার এই লিকুইড আপনার ত্বকে লাগিয়ে ১৫ মিনিট রেখে দিন। ১৫ মিনিট পর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে আপনার ত্বক ধুয়ে ফেলুন।
এই প্যাক-টি ব্যবহার করাই লক্ষ্য করবেন আপনার ত্বকে পিম্পল কমে আসবে, পিম্পল-এর দাগ হালকা হতে শুরু করবে এবং আপনার ত্বকও উজ্জ্বল হবে। তৈলাক্ত ত্বকের পিম্পল প্রতিরোধে আপনি এই প্যাক-টি সপ্তাহে দুই বার ব্যবহার করলে ভালো ফল পাবেন।
২) বেসন ও দই ফেইস প্যাক
বেসন আমরা সবাই চিনি। এটি আমাদের রান্নাঘরের একটি অত্যন্ত সহজলভ্য খাদ্য উপাদান। আর দইকেতো নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার প্রয়োজন নেই। তাই আমাদের তৈলাক্ত ত্বকের পিম্পল সারাতে এই ফেইস প্যাক-টি বানাতে আপনাকে খুব বেশি ছোটাছুটি করতে হবে না। বেসন প্রোটিন আর ভিটামিন-এর এক বিরাট উৎস আর দই ভিটামিন-এ ও ভিটামিন-সি তে ভরপুর। দই ত্বক নরম ও নমনীয় রাখে আর বেসন ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে নিয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা ধরে রাখে এবং এই দুই উপাদান একসাথে হয়ে তৈলাক্ত ত্বকের পিম্পল সারাতে ভালো কাজ করে।
যেভাবে করবেন:
দুই টেবিল চামচ বেসন ও এক টেবিল চামচ দই নিয়ে একটি পাত্রে চামচের সাহায্যে পেস্ট বানান। পেস্ট হয়ে আসলে এতে দুই ফোটা মধু ও এক চিমটি হলুদ মিশিয়ে নিন। এবার এই প্যাক-টি আপনার মুখে ও গলায় সুন্দর করে লাগিয়ে নিন এবং শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর এটি শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানি হাতের সাহায্যে লাগিয়ে প্যাক-টি ত্বক থেকে লুজ করে নিন। এবার হালকা ঘষে প্যাক-টি মুখ থেকে ঝরিয়ে ফেলুন। এতে করে ত্বকের ডেড সেল উঠে আসার সাথে ত্বকের অতিরিক্ত তেল শুষে আসবে। সবশেষে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে মুখ দিয়ে ফেলুন!
এই প্যাক-টি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করুন। কিছুদিন এভাবে ব্যবহার করার পর আপনার ত্বকের পিম্পল নিয়ন্ত্রণে চলে আসলে ১৫ দিন পর পর একবার ব্যবহার করুন।
তৈলাক্ত ত্বকের জন্য কিছু টিপস
১) প্রতিদিন ৯-১০ গ্লাস পানি খান।
২) তেলযুক্ত খাবার যতোটা পারা যায় এড়িয়ে চলুন।
৩) প্রতিদিন রাতের খাবার শেষ একটি হলেও মৌসুমি ফল খান।
৪) সবসময় বাইরে থেকে আসার সাথে সাথে মুখ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫) তৈলাক্ত ত্বক ভালো রাখতে মাঝে মধ্যে গরম পানির স্টিম নিতে পারেন।
আপনি যদি রেগ্যুলার স্কিন কেয়ারে অথেনটিক প্রোডাক্ট খুঁজে থাকেন, তবে সাজগোজ হতে পারে আপনার জন্য নির্ভরযোগ্য জায়গা। সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে যার একটি সীমান্ত স্কয়ার ও অপরটি যমুনা ফিউচার পার্কে অবস্থিত। আর অনলাইনে প্রোডাক্ট কিনতে চাইলে কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে।
আপনার একটু সচেতনতার ফলে তৈলাক্ত ত্বক আপনার জন্য অভিশাপ না হয়ে আশীর্বাদ হিসেবে প্রতীয়মান হতে পারে। একটু বাড়তি যত্ন নিন দেখবেন আপনার তৈলাক্ত ত্বক আপনাকে অনন্য করে তুলছে।
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ