আপনি কি আপনার রুক্ষ, শুষ্ক ও ড্যামেজড চুল নিয়ে খুবই বিরক্ত? ড্যামেজ চুল ম্যানেজ করা খুব কঠিন এবং এর জন্য আলাদা যত্ন নেওয়া উচিত। আমার কাছে মনে হয় যাদের চুল সুন্দর তাদের এমনিতেই অনেক গর্জিয়াস লাগে। তাই চুলের প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দেয়া উচিত। কিভাবে যত্ন নিবেন? এর জন্য চাই হেয়ার কন্ডিশনার। কী কারণে চুল ড্যামেজ হয় এবং কিভাবে দুইটি উপায়ে চুল কন্ডিশনিং করতে পারেন, চলুন এক ঝলক দেখেই নেই!
ড্যামেজড চুলের কারণ
চুল রুক্ষ, শুষ্ক ও ড্যামেজ হয়ে যায় অনেক কারণে। এটা যে কোন কারণে হতে পারে। যেমন-
১. ব্লিচিং
২. পার্মিং
৩. চুল কালার বা রং করার কারণে
৪. চুল স্ট্রেট বা আয়রন করলে অথবা হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকালে
৫. অতিরিক্ত চুল ব্রাশ করার কারণে
ড্যামেজ চুলের যত্ন হবে হেয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার করে
নিচে কিছু প্রোডাক্ট-এর নাম দেয়া হলো যেগুলো আপনার রুক্ষ ও ড্যামেজ হয়ে যাওয়া চুলের ট্রিটমেন্ট করবে। কোথায় পাবেন? শপ.সাজগোজ.কম-এ!
১. The Body Shop Banana Truly Nourishing Hair Mask
২. WOW skin science hair conditioner
কিন্তু আপনি যদি চান তবে ন্যাচারাল বা প্রাকৃতিক উপাদান এবং বাসায় তৈরি হেয়ার কন্ডিশনার দিয়েও ড্যামেজ হওয়া থেকে চুলকে প্রতিহত করতে পারবেন। কিছু প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে আপনি ভালো হেয়ার কন্ডিশনার ও চুলের প্যাক বানিয়ে নিতে পারেন এবং এতে করে স্বাস্থ্যজ্জ্বল চুল ফিরিয়ে নিয়ে আসতে পারেন!
প্রাকৃতিকভাবে হেয়ার কন্ডিশনার করার নিয়ম
১. কন্ডিশনার হিসেবে বিভিন্ন তেল
চুল কন্ডিশনিং করতে তেলের বিকল্প কিছু খুঁজে পাওয়া ভার। মাথায় নিয়মিত তেল আপনার চুলের আর্দ্রতা ফিরিয়ে আনে ও পুষ্টি যোগায় চুলে। তেল আপনার মাথার কর্টেক্স এর ভিতরে ঢুকে। এজন্য তেল ভিতর থেকে পুষ্টি যোগায়। তেলে আছে ফ্যাটি এসিড এবং ভিটামিন যা আপনার ড্যামেজ হয়ে যাওয়া চুলকে পুনরুদ্ধার করে এবং পরবর্তী ড্যামেজ হওয়া থেকে বাঁচায়।
নারিকেল তেল
নারিকেল তেল ড্যামেজড চুল খুব ভালোভাবে সারিয়ে তোলে। এটি চুলের স্যাফট-এর ভিতরে ঢুকে। অন্যান্য তেলের চেয়ে নারিকেল তেলের চুলের স্যাফট(shaft) বা আগায় পেনিট্রেটিং(penitrating) বা ঢুকে যাওয়ার ক্ষমতা বেশী। আর তাই এটি চুল ফেটে যাওয়ার হাত থেকে চুলকে রক্ষা করে। এতে থাকে প্রোটিন যা চুল পড়ে যাওয়া প্রতিহত করে। নারিকেল তেলে লরিক এসিডের ট্রাইগ্লিসারাইড থাকে যা চুলের গোঁড়ায় পুষ্টি যোগায়। শ্যাম্পু করার ১ঘন্টা আগে মাথায় তেল দিয়ে গরম তোয়ালে দিয়ে মাথা মুড়ে নিন বা আগের রাতে হালকা গরম করে মাথায় ম্যাসাজ করে নিন। পরদিন ধুয়ে ফেলুন ভালো শ্যাম্পু দিয়ে।
অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল
অলিভ অয়েল-এর গুণের কথা আর নতুন করে কি বলবো? এটি অন্যান্য সব তেলের চেয়ে অধিক হারে মাথার ত্বকে প্রবেশ করে।এক চামচ গরম অলিভ অয়েল মাথার তালুতে ও চুলে ম্যাসাজ করুন সার্কুলার মোশন-এ মানে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে। এরপর একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে মাথায় পেঁচিয়ে রাখুন ৪০ মিনিট। এরপর হালকা বা মৃদু শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
অ্যাভোক্যাডো অয়েল
এই তেলটি আমাদের দেশে এত জনপ্রিয় না হলেও এটির রয়েছে চুল ড্যামেজ প্রতিহত করার চমত্কার গুণ। এটি চুলের ভিতরে একদম চুলের কোর পর্যন্ত ঢুকে যায় এবং ময়েশ্চারাইজ করে চুলকে। এতে অধিক পরিমাণে ফ্যাটি এসিড ও ভিটামিন-ই আছে যা চুল লম্বা করে ও চুলকে করে তোলে স্বাস্থ্যজ্জ্বল! গরম অ্যাভোকেডো ম্যাসাজ করে ৩০মিনিট রেখে বা সারারাত রেখে পরদিন শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন!
২. প্রাকৃতিক প্যাক
চুলের যত্নে আমি যে ২টি প্যাক ব্যবহার করি তাই বলব আজ। এই প্যাক-গুলো নিয়মিত লাগালে চুল ড্যামেজ হওয়া থেকে রক্ষা পায়।
কলার প্যাক
ড্যামেজ চুলের জন্য কলা অত্যন্ত উপকারী। হেয়ার কন্ডিশনার হিসেবে স্বাস্থ্যকর চুলের জন্যও কলার প্যাক ভাল। একটি কলা, একটি ডিম, ৩ টেবিল চামচ মধু, ৩ টেবিল চামচ দুধ ও ৫ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে মাথায় লাগান এবং ১৫-৩০ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন!
দইয়ের চুলের মাস্ক
ডিমের সাদা অংশ এবং ৫/৬ চামচ টক দই মিশিয়ে মাথায় দিলে তা ভাল কন্ডিশনিং করে চুলে। হেয়ার কন্ডিশনার হিসেবে এই উপকরণগুলো হাতের কাছেই পাওয়া যায়। এই মিশ্রণটি দেয়ার পর হেয়ার ক্যাপ দ্বারা মাথা ঢেকে রাখুন। ১৫-৩০ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন!
তাহলে রুক্ষ চুলের ভয়কে বলুন টাটা বাই বাই! থাকুন সুস্থ চুলের ঝলমলে জগতে!
ছবি- সংগৃহীত: Shutterstock