শুধু টিনেজার নয়, সব বয়সী নারীদের এমনকি পুরুষদের ত্বকের অন্যতম সমস্যা হল ব্রণ। আর ব্রণ ও ব্রণের দাগ ত্বক থেকে সারিয়ে তুলতে ব্রণে আক্রান্ত ব্যক্তি কী করেন আর কী করেন না সেটা বলে শেষ করার মতো না। ব্রণের সমস্যার সমাধানে ঘরোয়াভাবে তৈরি ফেসমাস্কের চেয়ে ভালো কোন সমাধান আর হয় না। ঘরোয়াভাবে তৈরি বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানের সংমিশ্রণে বানানো ফেসমাস্ক ও প্যাকগুলো ব্রণ আর ব্রণের দাগ সারিয়ে তোলার সাথে সাথেই স্কিনের উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে তোলে, স্কিন নারিশ করে ও কমনীয়তা অনেকখানি বৃদ্ধি করে।
যারা দীর্ঘদিন ব্রণের সমস্যা নিয়ে ভুগছেন তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল। এখানে ঘরোয়াভাবে তৈরি কিছু সিম্পল ফেসমাস্ক রেসিপি নিয়ে বলবো। হাতের কাছেই পাওয়া কিছু প্রাকৃতিক উপাদান হয়তো আপনার দীর্ঘদিনের ব্রণ নিয়ে হতাশার সমাধান দেবে।
[picture]
ফেসমাস্ক রেসিপি:
(১) অ্যাপেল সিডার ভিনেগার ফেসমাস্ক/ স্ক্রাব-
যা যা লাগবে:
- অ্যাপেল সিডার ভিনেগার
- গ্রিন টি
- মধু
- চিনি
রেসিপি-
বাটিতে ১ চা চামচ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার নিন, এবার এতে ২ চা চামচ ঠাণ্ডা গ্রিন টি যোগ করুন, ৫ চা চামচ চিনি দিন এবং সবশেষে ১ চা চামচ মধু মিশিয়ে নিন। বাটিতে রাখা সব উপাদান এবার একটা চামচের সাহায্যে ভালোভাবে মিশান।
এবার এই মিশ্রণটি আপনার মুখের ত্বকে একটি কটন বলের সাহায্যে লাগিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন এবং ১০ মিনিট রেখে দিন। ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
উপকারিতা-
এই ফেসমাস্ক আপনার ত্বকের ডেডসেল রিমুভ করবে ও ত্বকের ব্লাড সার্কুলেশন বাড়িয়ে তুলবে। মাস্কের চিনি আপনার ত্বকে ব্রণে আক্রান্ত টিস্যু ও আনক্লোজিং পোরস এর জন্য ত্বকে ন্যাচারাল এক্সফলিয়েটর কাজ করবে। এই মাস্কটি সপ্তাহে দুইবার করে কিছুদিন কন্টিনিউ করলেই ব্রণ ও ব্রণের দাগ সারাতে উপকার পাবেন।
(২) মধু ও দারুচিনি ফেসমাস্ক:
যা যা লাগবে-
- দারুচিনি পাউডার
- মধু
রেসিপি-
১ চা চামচ দারুচিনি পাউডার একটি বাটিতে নিন, ২ চা চামচ মধু যোগ করুন এবং এবার এই দুই উপাদান একটি চা চামচ দিয়ে ভালোভাবে নাড়ুন। মিশ্রণ ঘন করতে প্রয়োজনে আরও একটু মধু যোগ করতে পারেন।
মিশ্রণটি ভালোভাবে মিশে গেলে আপনার হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে মুখের ত্বকে লাগিয়ে ১০ থেকে ১৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। পরে আপনার ত্বক হালকা গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন আর মুখে যেকোন টোনার লাগিয়ে নিন। আর যদি টোনার না থাকে সেক্ষেত্রে একটু লেবুর রস, একটু অ্যাপেল সিডার ভিনেগার আর দুই ভাগ ডিস্টিল ওয়াটার মিশিয়ে মুখে লাগিয়ে ফেলুন।
উপকারিতা-
এই মাস্ক আপনার ত্বকের ব্রণ সারতে সাহায্য করতে সাথে আপনার ত্বকের ব্রণের রেখে যাওয়া দাগ ও অমসৃণ ত্বক মসৃণ করে তুলবে। আপনি চাইলে এটি রেগুলার ফলো করতে পারেন।
(৩) হলুদ, দুধ ও মধু ফেসমাস্ক:
যা যা লাগবে-
- হলুদ পাউডার
- মধু
- কাঁচা দুধ
রেসিপি-
প্রথমে বাটিতে ১ চা চামচ হলুদের পাউডার নিন। ১ চা চামচ মধু নিন আর শেষে ২ চা চামচ কাঁচা দুধ ঢেলে দিন। সব উপাদান একসাথে ভালোভাবে মিশিয়ে একটা পাতলা পেস্ট বানান। এবার এই পেস্ট একটি মেকআপ ব্রাশের সাহায্যে আপনার মুখে ও গলায় লাগান। ব্রাশ ব্যবহার না করলে আপনার হাত ও হাতের নখে হলুদের দাগ লেগে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।
এই পেস্ট আপনার ত্বকে লাগিয়ে শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন এবং শুকিয়ে গেলে একটি কটন বল দুধে ভিজিয়ে মুখ থেকে পেস্ট মুছে নিন। পরে পানি দিয়ে মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। আপনি চাইলে এই মাস্ক সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন লাগাতে পারেন।
উপকারিতা-
হলুদ, মধু ও দুধের সমন্বয় আপনার ত্বকের ব্রণের বিরুদ্ধে কাজ করে, ব্রণের দাগ লাইট করে ও ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে।
তাড়াহুড়ো করবেন না, একটু সময় নিন। এটি কোন ম্যাজিক নয় যে মুহূর্তেই আপনার ত্বকের ব্রণ আর ব্রণের দাগ ভ্যানিশ করে দেবে। একটা কথা সব সময় মনে রাখবেন ঘরোয়া ফেসমাস্ক ধীরে ধীরে কাজ করলেও আপনার স্কিনের জন্য দীর্ঘস্থায়ী ব্রণ প্রতিরোধক সেল গঠন করবে।
লিখেছেন – রুমানা রহমান