চুল আমাদের দেহের সৌন্দর্যের একটি অন্যতম আকর্ষণ। কিন্তু আজকাল ছেলেমেয়ে কমবেশি সবাই আমরা চুল পড়া থেকে শুরু করে চুলের আরও বিভিন্ন সমস্যায় ভুগছি। এসব সমস্যা রোধে আমাদের আগে জানা উচিত চুলের কিছু মৌলিক প্রোপারটিজ, কিভাবে সেগুলো ড্যামেজ হতে পারে ও তা প্রতিরোধ করার কিছু উপায়। চুলের অন্যতম ৩টি হেয়ার প্রোপারটিজ হলো- হেয়ার ফলিকল, শ্যাফট ও কেরাটিন। আসুন এগুলো কী, কিভাবে এদের ক্ষতি হতে পারে ও কিভাবে আবার সুস্থভাবে এদের ফিরে পেতে পারেন তা একটু জেনে নেই।
৩টি হেয়ার প্রোপারটিজ নিয়ে যত কথা
(১) ফলিকল
এটি হচ্ছে এক ধরনের কোষ যা থেকে চুল জন্মায়। এটি চুলের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে।
অতিরিক্ত স্টাইলিং, ব্লো ড্রাই ও এজিং-এর জন্য হেয়ার ফলিকল (hair follicle) ড্যামেজ হতে পারে। যখন হেয়ার ফলিকল ড্যামেজ হয়ে যায় তখন তা চুলের গোঁড়াতে পুষ্টি ও অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে না। আর এ কারণে চুলের যাচ্ছেতাই অবস্থা হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক। একটু যত্ন নিলেই কিন্তু ড্যামেজ হয়ে যাওয়া হেয়ার ফলিকল আমরা আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে পারি।
ড্যামেজ হওয়া হেয়ার ফলিকল এর ট্রিটমেন্ট
ড্যামেজ হয়ে যাওয়া হেয়ার ফলিকল আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে খুব সিম্পল একটি উপায় হলো নারিকেল তেল চুলের গোঁড়ায় ম্যাসাজ করা। সপ্তাহে ২-৩বার নারকেল তেলের ছোট্ট একটি ম্যাসাজ আপনার চুলকে করে তুলতে পারে আবার স্বাস্থ্যজ্জ্বল।
(২) শ্যাফট
হেয়ার ফলিকল থেকে বেড়ে ওঠা চুলের গোঁড়ার বাহিরে যে চুলের অংশ আমরা দেখতে পাই তাকেই মূলত হেয়ার শ্যাফট বলা হয়। মোট কথা হেয়ার শ্যাফট বলতে আমাদের চুলকেই বুঝানো হয়।
এটি ড্যামেজ হতে পারে নানান কারণে। ধুলা বালি থেকে শুরু করে, কেমিক্যাল প্রসাধনী, খাবারে অনিয়ম, স্টাইলিং অনেক কিছুই হতে পারে হেয়ার শ্যাফট ড্যামেজের কারণ। চুলের সুস্থতা ফিরিয়ে আনতে নারকেল তেল ও টকদইয়ের জুড়ি নেই। একটি ডিমের সাদা অংশের সাথে টক দই, নারকেল তেল মিক্স করে চুলে লাগিয়ে ২০-৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। দেখবেন কিভাবে প্রথম ব্যবহারেই চুল কত মসৃণ ও স্বাস্থ্যজ্জ্বল লাগে। এই প্যাকটি সপ্তাহে ১-২ বার ব্যবহার করতে পারেন।
(৩) কেরাটিন
এটি এক ধরনের প্রোটিন যা চুল, নখ ও চামড়া সুস্থ রাখার অন্যতম কারণ। চুলের কেরাটিন যখন ড্যামেজ হয়ে যায় তখন তা নতুন চুলের সেলস বা কোষগুলোকে আর রক্ষা করতে করতে পারে না, ফলে চুল হতে থাকে ড্রাই, খরখরে ও নিস্তেজ। তাই খাবারের সঠিক নিয়ম মেনে চলা, ধুলোবালিতে চুলকে ঢেকে রাখার সাথে হেয়ার ট্রিটমেন্টও অনেক জরুরি। ঘরে বসে একটি হেয়ার ট্রিটমেন্ট করে নিতে পারেন খুব সহজেই। চুলে নারকেল তেল লাগিয়ে একটি তোয়ালে গরম পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে পানি চিপে নিন। এবার তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে ১৫-২০ মিনিট স্টিম নিন। তারপর খুলে নিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন!
এই অয়েল স্টিম ট্রিটমেন্টটি চুলের উজ্জ্বলতা ও ময়েশ্চার ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
তো জেনে নিলেনতো চুলের কিছু গুরুত্বপূর্ণ দিক ও চুল সুস্থ রাখার কিছু সিম্পল উপায়। আর অবশ্যই হেয়ার কেয়ার রুটিনে নারকেল তেল রাখুন। ভালো থাকুন, চুলকে রাখুন স্বাস্থ্যজ্জ্বল।
ছবি- সংগৃহীত: সাটারস্টক