কর্মজীবী হওয়ার কারণে প্রতিদিন মেকাপ করাই হয়! আর মিটিং অ্যাটেন্ডের বেলায় তো প্যাচাপ মাস্ট। সারা দিনের ব্যস্ততার পর বাড়িতে ফিরে প্রথম কাজটি থাকে মেকাপ রিমুভ করা। আমার পরিস্থিতি পড়ে বুঝতেই পারছেন মেকাপ প্রোডাক্টসের পাশাপাশি রিমুভার আমার লিস্টের একেবারেই প্রথম সারিতেই অবস্থান করে। রিসেন্ট একটি অভিজ্ঞতার কথা আপনাদের সাথে শেয়ার করি। একটি অনলাইন পেইজে থেকে দু’টা মেকাপ রিমুভার কিনেছিলাম কিন্তু ঐ প্রোডাক্টগুলো মেয়াদ ছিল কেবল ৩ মাসের মতো। এতো অল্প সময়ে তো ব্যবহার করে শেষ করতে পারব না! তখন নিজেকে বোকাই মনে হচ্ছিল। কি আর করা একগাদা টাকা জলে ফেললাম আর কি!
তবে এরপর থেকে সিদ্ধান্ত নিলাম আর মেকাপ রিমুভার আর কিনছি না। এবার নিজেই তৈরি করে নিব নিজের স্কিনের ধরণ অনুযায়ী মেকাপ রিমুভার!
আমার ত্বক বেশ ড্রাই। এমন ত্বকে মেকাপ রেসিডিউ সহজে যেতেই চায় না। তাই এমন কিছু উপাদান দিয়ে মেকাপ রিমুভার তৈরি করতে হবে যা ত্বক থেকে জেদি মেকাপ রেসিডিউ গুলো তুলে নিয়ে আসবে। টোটালি ডিপ ক্লিঞ্জিং যাকে বলে। তবে ডিপ ক্লিঞ্জিং এর কথা আসলেই মনে হয় আবার তো ত্বক এক্সট্রা ড্রাই হয়ে যাবে !
[picture]
না আজ এমন একটি রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো যা বেশ কিছুদিন যাবত আমি ট্রাই করে বেশ ভালো ফল পেয়েছি। যেমন- ত্বকের ড্রাইনেস বেড়ে যায়নি,ত্বকে মেকাপের রেসিডিউ না জমার কারণে ব্রণের উৎপত্তি হয়নি। এক্সট্রা নারিশমেন্টের প্রয়োজন পড়েনি। তাহলে এবার আসা যাক, এই মেকাপ রিমুভারের উপাদানগুলো কী কী ছিল তা সম্পর্কে-
(১) কোকোনাট মিল্ক (নারকেলের দুধ)
ত্বকের গভীর থেকে ময়লা বা ডার্ট পরিষ্কারে এই উপাদানটির জুড়ি নেই। তবে এটি তৈরি করা বেশ কষ্টসাধ্য তাই এর সাবস্টিটিউট হিসেবে আমি নিয়েছিলাম কোকোনাট মিল্ক সমৃদ্ধ লোশন। হাতে সময় এবং উপকরণ থাকলে নারকেল থেকে দুধ তৈরি করে নিতে পারেন তবে আমার হাতে অতো সময় ছিল না বলেই এই লোশনটি চুজ করা। এবং আসলে এর কার্যকারিতায় আমি স্যাটিসফাইড!
(২) ১ টি ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল
যেকোনো ফার্মেসিতেই গিয়ে বললেই হবে স্কিনে দেয়ার ভিটামিন ই ক্যাপস্যুল চাচ্ছেন। ভিটামিন ই ত্বকের বলিরেখা দূর করে এবং লোশনের সাথে ইজিলি ত্বকের গভীর প্রবেশ করে ত্বকের ভঙ্গুরতা দূর করে।
(৩) বেবি শ্যাম্পু
অবশ্যই বেবি শ্যাম্পু নিবেন কারণ শিশুদের জন্য তৈরি এই শ্যাম্পুতে ক্ষারের পরিমাণ একেবারেই সামান্য এবং অবশ্যই সালফেট ফ্রি হয়ে থাকে। কাজেই ত্বক বাড়তি ক্ষতির হাত থেকে বেঁচে যাবে।
এবার তৈরি এবং ব্যবহারের পালা। তেমন কোন ঝামেলা নেই। সব উপকরণগুলো একসাথে একটি পাত্রে নিয়ে মিক্স করে নিন এবার হাত ভালো করে ভিজিয়ে নিন। এবার হাতের তালুতে অল্প পরিমাণে নিয়ে আই এড়িয়া বাদে পুরো মুখে সার্কুলার মোশনে ম্যাসাজ করতে থাকুন। এরপর টিস্যু পেপার/ কটন বল দিয়ে মুছে ফেলুন।
চোখের মেকাপ সবচেয়ে পুরু হয়ে থাকে তাই একবারের জায়গায় দু’বারও করতে হতে পারে। একই উপায়ে হাতের তালুতে পানি নিয়ে আর মেকাপ রিমুভারের মিশ্রণটি নিয়ে আলতো করে ঘষেঘষে মেকাপ তুলে ফেলুন। সবশেষে ফেইসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে নিন।
এই রিমুভারটি ইনস্ট্যান্ট তৈরি করে নিবেন। খুব বেশি উপকরণের কথা বলা হয়নি। এমন কিছু উপকরণ বলেছি যা কমবেশি সবার বাড়িতেই থাকে।
তাহলে আর দামি দামি মেকাপ রিমুভার না কিনে এই উপাদানগুলো দিয়ে নিজেই তৈরি করে নিন ঘরোয়া মেকাপ রিমুভার।
লিখেছেন – নীলা