আপনার ত্বক যদি শুষ্ক হয় তাহলে শুধু আপনি জানেন যে এই ত্বকের যত্ন কতটা কঠিন। এই ত্বকের জন্য সঠিক ময়েশ্চারাইজার কী হবে এটি নিয়েও আপনার চিন্তার অন্ত নেই। কেমন হয় যদি আপনি আপনার শুষ্ক ত্বকের যত্নে ঘরে বসেই ময়েশ্চারাইজার তৈরি করতে পারেন। আপনি তো বাজার থেকে সব সময় কিনতে পারেন কিন্তু ঘরোয়া পণ্য সব সময় নিরাপদ আর ভেষজ যা আপনার ত্বকের জন্য অবশ্যই বেশি উপকারি। আপনি বাজারেরর পণ্য ব্যবহার করলে এর সাথে অনেক রাসায়নিক ব্যবহার করছেন কিন্তু ঘরোয়া ভেষজ পণ্য ব্যবহার করলে সহজেই পার্থক্যটা বুঝতে পারবেন। ঘরে থেকেই শুষ্ক ত্বকের জন্য ভেষজ ময়েশ্চারাইজার তৈরি এমন কিছু কঠিনও নয়। আর এতে আপনার লাগবে সহজলভ্য কিছু উপাদান। আসুন আমারা এখন ঘরোয়া কিছু ময়েশ্চারাইজারের কথা জেনে নিই।
[picture]
(১) অলিভ ওয়েল
বহুযুগ ধরে ত্বকের যত্নে অলিভ ওয়েল অনেক বেশী ব্যবহৃত হয়ে আসছে এমনকি এটা সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর ওয়েল হিসেবেও বলা হয়ে থাকে। অলিভ ওয়েল শুধু ত্বকের চর্চায় নয় মজাদার রান্নায়ও খুব ব্যবহার করা হয়। এখানে আমারা এই প্রাকৃতিক তেলকে ময়েশ্চারাইজার এজেন্ট হিসেবে ব্যবহার করব। আপনি নিশ্চয় এমন ময়েশ্চারাইজার খুঁজে থাকেন যেটা আপনার ত্বক সজীব আর আদ্র রাখবে কিন্তু তেলতেলে করে তুলবে না। আর এমন ফল পেতে আপনাকে অলিভ ওয়েল ব্যবহার করতে হবে। অলিভ অয়েলে যেমন অনেক অ্যান্টি – অক্সিডেন্ট আছে তেমনি এটি ত্বক নষ্ট হয়ে যাওয়া বা রুক্ষ হয়ে যাওয়া প্রতিরোধেও কার্যকর। তাই শুধু শীতে নয় সারা বছরইই আপনি ত্বকের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে অলিভ ওয়েল বিশ্বস্ততার সাথে ব্যবহার করতে পারেন।
কিন্তু কীভাবে তৈরি করবেন? যখন অলিভ ওয়েল ময়েশ্চারাইজার হিসেবে ব্যবহার করবেন তখন এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ ওয়েল নিবেন। এই তেলে কোন সুপার ফিসিয়াল এজেন্ট নেই তাই শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই উপকারী আর এতে আপনার অন্য কিছু মিশানোর দরকার নেই। এই তেল নিয়ে গোসলের আগে বা পরে আপনার ত্বকে ম্যাসাজ করুন । আর অল্প কিছুদিনের মধ্যেই আপনি ত্বকের আমুল পরিবর্তন দেখতে পাবেন। তবে নিয়মিত ব্যবহার করবেন।
(২) অ্যালোভেরা জেল আর নারকেল তেল
অ্যালোভেরা তো প্রকৃতির জাদু। এটি অনেক অনেক কারণেই ত্বক পরিচর্যায় ব্যবহার করা হয়। ত্বক সুন্দর করা থেকে শুরু করে শরীরের ওজন কমানো -সবকিছুতেও অ্যালোভেরার ব্যবহার রয়েছে। এটা ত্বক আদ্র রাখতেও ভীষণ কার্যকর। তাই ঘরোয়া ময়েশ্চারাইজার তৈরিতে অ্যালোভেরা একটি আদর্শ। আপনার ত্বকে যদি অল্প ইনফেকশন থাকে তাহলে অ্যালোভেরা লাগিয়ে দিলে অল্পতেই ভালো হয়ে যাবে। এটা ত্বক উজ্জ্বল করতেও খুব ভালো ভুমিকা রাখে।
অ্যালোভেরার মতো নারকেল তেল অনেক কাজে বিশেষ করে শরীরের যত্নে ব্যবহার হয়ে আসছে বহুযুগ আগে থেকেই। নারকেল তেলের সবচেয়ে ভালো দিক হল নারকেল তেল স্টিকি না আর এটা ভিটামিন ই সমৃদ্ধ বিধায় এটি ত্বক আদ্র রাখে। আর এটা সব জায়গায় সবসময় খুব অল্প দামেই পাওয়া যায় তাই বাজারে যখন অনেক কসমেটিকস ছিল না তখন থেকেই এটি ময়েশ্চারাইজার হিসেবে গ্রাম বাংলায় যুগ যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে।
কীভাবে তৈরি করবেন? অ্যালোভেরা আর নারকেল তেল দুটোই ভালো ময়েশ্চারাইজার তাই এই দুটিকে আপনি মিশিয়ে আরও ভালো ময়েশ্চারাইজার বানাতে পারেন। প্রথমে অ্যালোভেরার ফ্রেশ পাতা বা ন্যাচার রিপাবলিক সুদিং অ্যান্ড ময়েশ্চার অ্যালোভেরা সুদিং জেল (৯২% অ্যালোভেরা এক্সট্রাক্ট সমৃদ্ধ ) নিয়ে ধুয়ে ফেলুন। উপরের শক্ত আবরন ফেলে দিয়ে ভিতরের নরম অংশ নিয়ে পেস্ট করুন। এই পেস্ট নারকেল তেলের সাথে মিশিয়ে জারে রেখে দিন। তবে সূর্যালোক থেকে দূরে রাখবেন।
ছবি – কসমেটিকডিজাইন.কম
লিখেছেন – রোকসানা আকতার