জীবনে কখনো এক আধটু রূপচর্চা করেন নি এমন মানুষের সংখ্যা পাওয়া ভার। বাস্তবিক, আমরা ত্বকের যত্নে সঠিক উপায় ও ব্যবহার পদ্ধতি না জানার কারণে আমাদের ত্বক হারায় স্বাভাবিক কোমলতা। বিভিন্ন প্রাকৃতিক রূপচর্চার উপাদানেরও যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে তা জানেন না অনেকেই। আজ সৌন্দর্য চর্চায় সাবধানতা বিষয়টির প্রতিপাদ্য প্রাকৃতিক রূপচর্চার উপাদানের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া। চলুন জেনে নিই এ নিয়ে বিস্তারিত।
সৌন্দর্য চর্চায় সাবধানতা
১. রসুন
ব্রনের জন্যে রসুন উপকারি। আদিকাল থেকে অনেকেই রসুন ব্যবহার করেন। কিন্তু এটি সব ধরনের ত্বকের জন্যে উপকারি নয়। যাদের অ্যালার্জি আছে, তাদের ত্বকে এটি গারলিক হাইপারসেনসিটিভিটি করতে পারে। প্রথমে একটি ফোস্কার মত হয়ে ২/৩ দিনের মধ্যে চামড়া উঠে দাগ পড়ে যেতে পারে। কাজেই রসুন ব্যবহারে সাবধান।
২. বরফ
ব্রন বা ব্রনের দাগ বরফ ঘষে কমানোর চেষ্টা আমরা সবাই করি। বরফ খুব সহজলভ্য দেখে এর ব্যবহারও বেশি। বিভিন্ন পত্রপত্রিকাতেও বরফের অনেক গুণগান বর্ণনা করা হয়েছে। কিন্তু বরফ ঘষার কারণে মুখের এক জায়গার জীবাণু অন্য জায়গায় ছড়িয়ে পরে। গবেষণায় দেখা গেছে, ব্রণ হওয়ার পেছনে ব্যাকটেরিয়া একটি প্রধান কারণ। ব্রণের জায়গা হাত দিয়ে খুঁচিয়ে মুখের অন্য অংশে স্পর্শ করালে সেখানেও ব্রণ হতে পারে। আর ঘষে ঘষে পুরো ত্বকে লাগানো তাই একেবারেই উচিত নয়।
৩. টমেটো
এটি এমন একটি সবজি যা মুখে খেলে তো উপকার আছেই, সরাসরি ত্বকে মাখলে তো আর কথাই নেই। এটি ত্বককে কোমল করে, মোলায়েম করে। কিন্তু অনেকেই জানেন না যে এটি বেগুন জাতীয় একটি ফল বিশেষ। বেগুনের মত এটিতেও অ্যালার্জি করতে পারে। সবার একই সমস্যা নাও হতে পারে। কাজেই, আগে হাত-পা বা শরীরের অন্য স্থানে লাগিয়ে দেখুন। কিন্তু মুখে মাখবেন না যেন!
৪. লেবু
ত্বক পরিষ্কারে লেবুর তুলনা হয় না। কিন্তু এটি অবশ্যই মধু, কলা, আপেল রস অথবা অন্য কোন উপাদানের সাথে মিশিয়ে মাখতে হবে। সরাসরি ব্যবহার করা উচিঁত নয়। লেবুতে সাইট্রিক এসিড আছে। ঘন ঘন ব্যবহার বা বেশি পরিমাণ ব্যবহারে ত্বকের কোমলতা নষ্ট হতে পারে। প্রতি বার অন্য উপাদানের সাথে তিন চার ফোঁটার বেশি ব্যবহার না করাই ভালো।
এখন একটি বাজারের কৃত্রিম উপাদানের কথা আলোচনা করা যাক। রঙ ফর্সা করা নিয়ে সব মেয়েরাই সচেতন। অতি সুন্দরী মেয়েরা, এমনকি ছেলেরাও মাখছেন রঙ ফর্সাকারি ক্রিম। এসব ক্রিমে স্টেরয়েড নামক এক ধরনের হরমোন আছে যা কিনা ত্বককে সাদা করে দেয়। কিন্তু পাশাপাশি এটি ত্বকের চামড়াকে পাতলা করে দেয় এবং ব্যবহারকারীদের ত্বকে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক শতাংশ বেড়ে যায়। এটি রক্তে মিশলে ও দীর্ঘদিন ব্যবহারে হাড়ের ক্ষয়, চোখের প্রদাহ থেকে শুরু করে অনেক খারাপ ধরনের অসুখ করতে পারে।
তাই, আগে জেনে নিন, বুঝে নিন কী ব্যবহারে আপনার ত্বক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ছাড়াই সুন্দর হবে। পরখ করে নিন কোন উপাদানটি আপনার ত্বকে মানানসই। আপনার ত্বক আপনার ব্যক্তিত্বের প্রতীক। তাই সৌন্দর্য চর্চায় সাবধানতা নিশ্চিত করে সচেতন ভাবে রূপচর্চা করুন, সুন্দর থাকুন!
ছবিঃ সাটারস্টক