কার্লি ফ্যাশনের যুগ চললেও এখনও অনেকেই স্ট্রেইট চুলের ভক্ত আছেন যারা তারা এখনও রিবন্ডিং করার জন্য পার্লারে ছুটে যাচ্ছেন বা স্ট্রেইটনার দিয়ে চুল সোজা করছেন। এক ঘেয়েমি কোঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো স্টাইল হয়তো আপনার লুকটাকে বোরিং করে তুলছে, তাই কয়েক ধরনের রিবন্ডিং এর সাথে আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিবো। প্রথম যখন রিবন্ডিং এর চল উঠেছিল তখন শুধু এক রকমেরই ছিল, সে আপনার চুল যেমনই হোক আপনাকে সেই রকম রিবন্ডিং-ই করতে হতো। এখন সময়ের সাথে সাথে মানুষের রুচি আর প্রয়োজন অনুযায়ী রিবন্ডিং এর রকমভেদ আছে। যেমন ধরুন আপনার চুল কম সেক্ষেত্রে আগের ঐ স্টিফ, ফ্ল্যাট রিবন্ডিং করলে আপনার চুল আরও কম দেখাত, তাই আপনার জন্য এখন আছে ভলিউম রিবন্ডিং। এখন এমন আরও কয়েক ধরনের রিবন্ডিং এর সাথে (৪ ধরনের রিবন্ডিং) আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিবো।
৪ ধরণের রিবন্ডিং যা চুলে দিবে চুলের স্টাইলিং এ নতুন মাত্রা
১) সেমি হেয়ার রিবন্ডিং
এটি আপনার চুলকে সোজা করবে সঙ্গে অনেক বেশি ন্যাচারাল ও দেখাবে। অন্যান্য রিবন্ডিং থেকে এটি করতে সময় কম লাগে তাই খরচটাও কম। যদি আপনার চুল সোজা চুলের পর্যায়ে ফেলা যায়, আপনি যদি চান শুধু মাত্র আপনার স্ট্রেইট চুল সব সময় সিল্কি থাকবে বা স্ট্রেইট চুলেও কিছু ছোট ছোট ওয়েভ থাকে সেটি না থাকুক তাহলে নিশ্চিন্তে এই রিবন্ডিং করতে পারেন। এই ক্ষেত্রে ড্রাই, অয়েলি চুলের কোন ভেদাভেদ নেই। যেকোনো চুলেই করতে পারবেন। যাদের চুল পরিমাণে কম কিন্তু বেশ ফোলাফোলা তাদের চুলগুলো দেখতে কেমন যেন অগোছালো লাগে, তাদের জন্য সেমি হেয়ার রিবন্ডিং একদম পারফেক্ট।
২) মিল্ক রিবন্ডিং
যাদের চুল কালার করা তারা এই রিবন্ডিং করতে পারেন। কারণ এই রিবন্ডিং এর ফর্মুলাতে ৭০% মিল্ক ব্যবহার করা হয় বাকিটা চুল এবং মাথার স্ক্যাল্প ফ্রেন্ডলি এডিটিভস অর্থাৎ মাথার ত্বকে লেগে থাকে এমন বস্তু থাকে। মিল্কের সাথেও মেশানো হয় এ, বি, ডি এবং ই সল্যুশন। যা আপনার ক্যামিকেল ট্রিটেড চুলের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। এই রিবন্ডিং করার পর সব মেয়ে যে সিল্কি চুল পাবে এটার গ্যারান্টি দেয়া মুশকিল কিন্তু এটা সত্য যে চুলে প্রোটিনের পুষ্টি জুগিয়ে চুলের কিউটিকেলকে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল করে তোলে আর চুল হয়ে ওঠে নরম, কোমল। আপনি যদি কম চুলের অধিকারিণী হন অথবা ড্যামেজ চুল থাকে তাহলে এটি করতে পারেন। আমার শুষ্ক চুলের পাঠিকাদের জন্য একদম পারফেক্ট।
৩) ভলিউম রিবন্ডিং
আপনার চুলে ভলিউম আনাই এর প্রধান লক্ষ্য। কোরিয়ানদের এই রিবন্ডিং করার প্রবণতা বেশি। অনেকে বলতে পারেন কোরিয়ানদের চুলতো এমনিতেই অনেক বেশি সুন্দর তাদের আবার রিবন্ডিং করা লাগে নাকি। কে জানে তাদের এই সুন্দর চুলের রহস্য হয়ত ভলিউম রিবন্ডিং। এটি এতো বেশি ন্যাচারাল লুক দেয় যে আসল আর নকলের মধ্যে তফাৎ করাই মুশকিল। বাইরের দেশে এই রিবন্ডিং এ চুলের নীচের অংশটুকু একেবারে সোজা না করে হালকা U শেইপ দেয়া হয় যাতে চুল ন্যাচারালি ঘন দেখানোর জন্য। কিন্তু আমাদের দেশের পার্লারগুলোতে হয়তো এটা মেইনটেন করা হয় না। কার্লার, স্ট্রেইটনারসহ আরও কিছু সামগ্রী ব্যবহার করা হয় ভলিউম রিবন্ডিং এ। তাছাড়া এমন ক্যামিকেল ব্যবহার করা হয় যেগুলোতে ময়েশ্চারাইজিং উপাদান থাকে। ফলে স্টিফ, রাফ চুলকে বলুন বাই বাই।
৪) গ্লেজি রিবন্ডিং
আপনার চুল অনেক ঘন কিন্তু প্রাণহীন- তাহলে এই রিবন্ডিং আপনার জন্য। কারণ এটি আপনার চুলকে কিছুটা চেপে দেয় ফলে বেশি চুল হলে খারাপ দেখায় না। কিন্তু আপনার একে তো কম চুল তার উপর রিবন্ডিং এর বৈশিষ্ট অনুযায়ী চুল চেপে গেলে সুন্দরের বদলে পাতলা ফিনফিনে দেখাবে। বিভিন্ন ক্যামিকেল ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার চুলে চকচকে ভাব এনে দেয় মাত্র কয়েক ঘণ্টায়। এই রিবন্ডিং করার ৩দিনের মধ্যে চুলে প্রোটিন ট্রিটমেন্ট করা জরুরি। কেননা ক্যামিকেল, হিট ব্যবহার করার পর চুল কিছুটা দুর্বল হয়ে ওঠে।
এ তো গেলো চুলের ৪ ধরনের রিবন্ডিং নিয়ে আলোচনা। এবার চলুন জেনে নেই কী করে রিবন্ডিং এর পর চুলের যত্ন নেবেন…
রিবন্ডিং এর পর কীভাবে চুলের যত্ন নিতে কিছু টিপস
১. প্রত্যেকবার শ্যাম্পু করার সময় রিবন্ডিং চুলের জন্য বিশেষ ফর্মুলাতে তৈরি শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন।
২. সপ্তাহে অন্তত পক্ষে একবার হেয়ার মাস্ক বা হেয়ার সেরাম ব্যবহার করবেন।
৩. শ্যাম্পু শেষে চুলে কন্ডিশনার লাগাতে ভুলবেন না কিন্তু!
৪. মিল্ক রিবন্ডিং ছাড়া অন্যান্য যেকোনো রিবন্ডিং করার ৩দিনের মধ্যে চুলে প্রোটিন ট্রিটমেণ্ট করাবেন।
৫. যেকোনো রিবন্ডিং করার পর চুলে নিয়মিত প্রোটিন ট্রিটমেণ্ট করাবেন। এতে তাহলে ক্যামিকেল জনিত কারণে চুল পড়ার প্রবণতা কমে যাবে অনেকখানি।
যে ৪ ধরনের রিবন্ডিং নিয়ে আপনাদের সাথে আজ আলোচনা করেছি, আশা করি এদের মধ্যে যে টি আপনারা করবেন তাই আপনাদের স্টাইলিং-এ নতুন মাত্রা আনবে। তাছাড়া রিবন্ডিং করা চুলের যত্ন করতে যেই টিপসগুলো আপনাদের দিয়েছি সেগুলো মেনে চলবেন। এতে চুল থাকবে হেলদি!
তবে আপনি যদি চুলের যত্নে অথেনটিক প্রোডাক্ট খুঁজে থাকেন, তবে সাজগোজ হতে পারে আপনার জন্য একটি ভালো অপশন। আপনি চাইলে সাজগোজের দু’টি ফিজিক্যাল শপ থেকে কিনতে পারেন আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রোডাক্ট, যার একটি সীমান্ত স্কয়ার ও অপরটি যমুনা ফিউচার পার্ক এ অবস্থিত। আর যদি অনলাইনে কিনতে চান, তবে শপ.সাজগোজ.কম থেকেও কিনতে পারেন। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন!
ছবিঃ সাটারস্টক