জীবনের বিভিন্ন ধাপ পার করার সময় সবাইকে মুখোমুখি হতে হয় অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যার। এগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা হল ব্রণ। শুধু কিশোর কিশোরীই নয়। আজকাল তরুন তরুণী, মধ্যবয়সী নারীরাও এই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বাজারের বিভিন্ন রং ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার করে ত্বকের ক্ষতিসাধন করছেন তারা। কে চায় এত সুন্দর মুখশ্রীর উপর ব্রণ বা এর দাগ!! ব্রণ দূর করার চেয়ে ব্রণের দাগ দূর করা বেশ কঠিন। ব্রণের দাগ দূরীকরণে প্রাকৃতিক উপাদান বেশ কার্যকরী। কিন্তু ব্রণের এই জেদি দাগগুলো কিভাবে যাবে? অনেকেই অভিযোগ করেন যে কিছুতেই যেতে চায় না ব্রণের দাগ। তবে একটি প্রবাদ আছে , “নাথিং ইজ ইম্পসিবল” অর্থাৎ অসম্ভব বলে কিছু নেই। যদিও সময় একটু বেশি লাগবে, কিন্তু নিয়মিত চেষ্টায় কিছু প্রাকৃতিক উপাদানের সহায়তায় এই দাগ ধীরে ধীরে দূর করা সম্ভব। এই উপাদানগুলো প্রাকৃতিক ব্লিচিং হিসেবে কাজ করবে এবং আপনার ত্বক থেকে স্থায়ীভাবে দাগ দূর করবে। এই আর্টিকেলে আপনাদের ব্রণের দাগ দূরীকরণে ৪টি প্রাকৃতিক উপায় নিয়ে জানাবো। এর পূর্বে চলুন জেনে নেই কিছু প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিয়ে!
ব্রণের দাগ দূর করা নিয়া যত কথা
আপনার ব্রণ থেকে নখকে দূরে রাখুন
আপনার ব্রণের সাথে খেলবেন না। একে একা থাকতে দিন। ভুলেও নখ লাগাবেন না বা চাপ দিবেন না। চুলকানি হলেও স্পর্শ করা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। আর যদি প্রতিকারের জন্য কোন ওষুধ বা কোনও কিছু ব্যবহার করেন, তবে অবশ্যই আলতোভাবে করতে হবে।
সূর্যের সংস্পর্শ থেকে দূরে থাকুন
সূর্যের আলোতে ব্রণের দাগ বসে যায়। তাই চেষ্টা করবেন সূর্যের সংস্পর্শ থেকে নিজেকে দূরে রাখার। কিন্তু বাইরে না গিয়ে তো উপায় নেই। তাই যখনই বাইরে যাবেন, তখন অবশ্যই সানস্ক্রিন ক্রিম লাগিয়ে যাবেন। আর ছাতা, হ্যাট, ওড়না, স্কার্ফ ইত্যাদি দিয়ে নিজের ত্বককে সূর্যের রশ্মি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করবেন।
চলুন এবার জেনে নেয়া যাক ব্রণের দাগ দূরীকরণে কিছু প্রাকৃতিক প্রতিকার সম্বন্ধে-
ব্রণের দাগ দূরীকরণে ৪টি প্রাকৃতিক উপায়
১) লেবু
– ব্রণের দাগ দূরীকরণ লেবু প্রাকৃতিক ব্লিচের মতো কাজ করে। লেবুর রসের সাথে সামান্য পানি মিশিয়ে একটি তুলার বলের সাহায্যে তা মুখে ৩-৪মিনিট ঘষুন।
– যদি সেনসিটিভ স্কিন হয় তাহলে এর সাথে গোলাপ জল মিশিয়ে নিবেন। সম্ভব হলে ১ চামচ লেবুর রসের সাথে ২ চামচ ভিটামিন ই ক্যাপসুল মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। ভিটামিন ই ক্যাপসুল ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। এছাড়া একটানা ৭-১০দিন নিচের ফেইস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।
লেবুর ফেসপ্যাক: ১টেবিল চামচ লেবুর রস, ১টেবিল চামচ মধু, ১টেবিল চামচ আমন্ড তেল, ২টেবিল চামচ দুধ একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। ব্রণ থাকা অবস্থায় দুধ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
২) মধু
– রাতে ঘুমানোর আগে মুখ ভালো করে ধুয়ে মধু লাগান। সারারাত তা রেখে সকালে ঘুম থেকে উঠে তা ধুয়ে ফেলুন।
– মধুর সাথে দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে শুধুমাত্র দাগের উপর লাগিয়ে ১ঘণ্টা পর ধুয়ে ফেলুন। চাইলে সারারাতও রাখতে পারেন।
৩) অ্যালোভেরা জেল
দিনে দুইবার অ্যালোভেরা জেল মুখে লাগান এবং ৩০মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। এটি শুধুমাত্র ব্রণের দাগই দূর করবে না, বরং আপনার ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে এবং টানটান হবে।
৪) টমেটো এবং শসা
একটি লাল টমেটোর কিছু অংশ নিয়ে তার রস নিন। এরপর তা শসার রসের সাথে মিশিয়ে নিন। এই মিশ্রণটি মুখে লাগান। ১০মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে ৩বার এই প্যাকটি লাগান। ব্রণের দাগ দূর তো হবেই সেই সাথে রোদে পোড়া দাগ দূর হয়ে ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পাবে। তাহলে ব্রণের দাগ দূরীকরণে এই প্যাকটি ইউজ করুন।
ব্রণের দাগ দূরীকরণে ৪টি প্রাকৃতিক উপায় এই তো জেনে নিলেন। উপরের সবগুলো উপাদান ত্বকের দাগ বা ব্রণের দাগ দূরীকরণে বেশ উপকারী। প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভালো। তাই আমি অবশ্যই বলবো ত্বকের জন্য নির্দিষ্ট কিছু অভ্যাস ত্যাগ করাও ভালো কিছু অভ্যাস তৈরি করা। আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী যে উপাদান বেশি ভালো তা ব্যবহার করুন এবং আপনার মূল্যবান ত্বকের যত্ন নিন, বেশি করে পানি পান করুন, সুস্থ থাকুন।
প্রাকৃতিক উপাদান ছাড়াও রেগ্যুলার স্কিন কেয়ারে যদি আপনারা অথেনটিক প্রোডাক্ট খুঁজে থাকেন, তবে সাজগোজ হতে পারে আপনার জন্য একটি আস্থার জায়গা। সাজগোজের দু’টি ফিজিক্যাল শপ রয়েছে যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত। আর যদি অনলাইনে কিনতে চান তবে শপ.সাজগোজ.কম হতে পারে কিনতে পারেন আপনার কাঙ্ক্ষিত প্রোডাক্টটি!
ছবিঃ সংগৃহীত – পিন্টারেস্ট.কম