এবার একটু ঠাণ্ডা হাওয়া চলার সাথে সাথেই আমার হাত, পা শুকিয়ে কেমন যেন টান টান হয়ে গেল! আপনাদের অনেকের নিশ্চয়ই এই একি সমস্যা হচ্ছে, তাই না? এমন অবস্থায় সবার আগে উচিৎ দৌড়ে একটা ভালো দেখে বডি লোশন কিনে নেয়া! কিন্তু আমার বেলায় যেটা হল, আমার আগে থেকেই কেনা কিছু জিনিস ছিল! যেমন- গ্লিসারিন, পেট্রোলিয়াম জেলি ইত্যাদি। সমস্যাটা হল, এগুলো আলাদা আলাদা করে ইউজ করতে হয়। এবং কিছুক্ষন পর স্কিন আবার শুষ্ক হয়ে যায়। কিন্তু বারবার গ্লিসারিন, পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাতে কি ভালো লাগে বলুন? তাই চিন্তা করলাম এই হাতে থাকা জিনিসগুলো দিয়েই যদি কোনভাবে পুরো শীতকাল কাটিয়ে দেয়া যায়, তবে আবার এত্তগুলো টাকা খরচ করে বডি লোশন কেনার তো আর দরকার পড়বে না! এই চিন্তা থেকেই একটু এক্সপেরিমেন্ট করে বানিয়ে ফেললাম একদম আমার নিজের রেসিপির বডি বাটার! আর আজ এই ইজি রেসিপি আপনাদের সাথে শেয়ার করব-
যা যা লাগবে- –
পেট্রোলিয়াম জেলি (পুরো ১ কৌটা)
আপনার স্কিনের উপর লেয়ার তৈরি করে স্কিনের আদ্রতা ধরে রাখবে।
– এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল (চায়ের কাপের ১ কাপ)
ত্বকের ড্যামেজ প্রতিহত করবে, ত্বক উজ্জ্বল ও মসৃণ রাখবে। শীতে ত্বক কালো হয়ে যাওয়ার সমস্যাও কমবে।
[picture]
– গ্লিসারিন(চায়ের কাপের ১/২ কাপ)
এনভায়রনমেন্ট থেকে আদ্রতা ধরে স্কিনে আটকে রাখবে।
– ভ্যানিলা এসেন্স (১/২ টেবিল চামচ)
বডি বাটার থেকে পেট্রোলিয়াম জেলির বাজে গন্ধ আর আসবে না। আর স্কিনেও অনেকক্ষণ ভ্যানিলার ঘ্রান থাকবে!
– পুরনো কোন কসমেটিকের কৌটা বডি বাটার রাখার জন্য।
প্রনালী ধাপ ১- প্রথমেই একটা পাত্রে অলিভ অয়েল, গ্লিসারিন আর ভ্যানিলা এসেন্স ভালোভাবে মিশিয়ে ফেলুন।
ধাপ ২- একটা প্যান নিন। এতে সবটুকু পেট্রোলিয়াম জেলি ঢেলে চুলায় খুবি অল্প আঁচে গলিয়ে ফেলুন। কোনভাবেই আঁচ বাড়াবেন না। আগুন ধরে যেতে পারে! সাবধানে করবেন।
ধাপ ৩- এবার গলানো পেট্রোলিয়াম জেলির পাত্রে , তেল,গ্লিসারিন আর ভ্যানিলার মিশ্রণ আস্তে আস্তে ঢালুন। তারপর যতক্ষণ পর্যন্ত পুরোপুরি মিশে না যাবে ততক্ষন নাড়তে থাকুন।
ধাপ ৪- মনে রাখবেন, আপনার মিশ্রণটি কিন্তু এখনও প্রচণ্ড গরম! সুতরাং খুব সাবধানে বডি বাটারের পাত্রে তরল মিশ্রণ ঢেলে নিন। এবার ঠাণ্ডা হতে দিন। ঠাণ্ডা হয়ে জমাট বেধে গেলেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার সাশ্রয়ী বডি বাটার!!
কীভাবে ব্যবহার করবেন-
আমি নিজে রোজ যা করি তাই বলছি। গোসলের পর শরীরের পানি মুছে একটু ভেজা ভেজা স্কিনে বডি বাটার লাগিয়ে নেই। এবং আমার স্কিন সারাদিন ময়েসচারাইজড থাকে! জাঁকিয়ে শীত পড়লে হয়ত ঘুমাতে যাবার আগে একবার লাগাতে হবে। – আমার হাতের তালু আর ঠোঁট সারা বছর ফাটে। তাই ঘুমানোর আগে ঠোঁটে পুরু করে বডি বাটার লাগিয়ে নেই। সকালে একটা নরম কাপড় দিয়ে মুছে ফেলি। সব ডেড সেলষ উঠে ঠোঁট নরম হয়ে যায়। – হাত খুব বেশি শুষ্ক খসখসে লাগায় হাতে গাঢ় করে লাগিয়ে পাতলা হাত মোজা পড়ে ঘুমালে সকালে একদম নরম কোমল হাত পাবেন! ফাটার তো প্রশ্নই ওঠে না!
টিপঃ আপনার ভ্যানিলার ঘ্রান পছন্দ না হলে এর বদলে লেবুর জেসট (লেবুর খোসা) অ্যাড করতে পারেন। বেশ রিফ্রেশিং ফ্লেভার হবে! এভাবে আপনার পছন্দের ফ্লেভারের এসেনশিয়াল অয়েল অ্যাড করেও বডি বাটার আপনার মত কাসটোমাইজড করে নিতে পারেন! তাহলে এই শীতে পড়ে থাকা কসমেটিক্সগুলো দিয়ে খুব কম খরচেই তৈরি করে নিন না লাক্সারিয়াস বডি বাটার!!
লিখেছেন- তাবাসুম মুস্তারি মীম
ছবি- ব্লগ.ভিটাকোস্ট.কম