চুলে পর্যাপ্ত প্রোটিনের অভাব হলে চুল পাকা শুরু করে। চুলের রঙের পিগমেন্ট কোষ চুলের গোড়ায় থেকে প্রতিটি চুলের স্বাভাবিক রঙ বজায় রাখে। কিন্তু মধ্য-বয়সে চলে যাবার পর থেকে বয়স বাড়ার সাথে সাথে চুলের পিগমেন্ট কোষগুলো মারা যেতে থাকে এবং একটি একটি করে চুলের রঙ বদলে যেতে থাকে। আর এভাবেই ধীরে ধীরে সমস্ত চুল কালো থেকে ধূসর বা সম্পূর্ণ সাদা রঙ্গে রূপ নেয়। সাধারণত, চুল পাকা বয়স বাড়ার সাথে সম্পর্কিত হলেও অকালে অনেকের চুল পেকে যাবার ঘটনা এখন প্রায়শই ঘটে থাকে। বাবা-মায়ের অকালে চুল পেকে যাবার ইতিহাস থাকলে আপনার চুল অপ্রাপ্তবয়সে পেকে যাবার সম্ভাবনাও ব্যাপক। অনেকে মনে করেন, পাকা চুল গোড়া থেকে তুলে আনলে তা আর গজায় না। মারাত্মক ভুল ধারণা এটি।
পাকা চুল রোধে পরামর্শ
(১) আমলা বাটা
পাকা চুলের জন্য আমলা মহৌষধ হিসেবে কাজ করে। যাদের চুল পড়ে যাচ্ছে, তারাও আমলা থেকে ভালো উপকার পাবেন। আমলা বেটে তা চুলের গোড়ায় নিয়মিত মালিশে দ্রুত ফল পাবেন।
(২) পাকা চুল বন্ধে নারিকেল তেল ও লেবুর রস
নারিকেল তেলের সাথে লেবুর রস মিশিয়ে তা মাথার তালুতে অন্তত ১৫ মিনিট ধরে মালিশ করুন। প্রমাণ রয়েছে, এই পদ্ধতি ব্যবহার করে ৬০-৭০ বছর বয়সেও কুঁচকুঁচে কালো চুল ধরে রেখেছেন অনেকে!
(৩) পাকা চুল বন্ধে লেবুর জুস ও ক্যাস্টর অয়েল
লেবুর জুসের সাথে ক্যাস্টর অয়েল ভালো ভাবে মেশান যতক্ষণ না বুদবুদে ফেনা তৈরি হয়। এর সাথে মেহেদি যোগ করুন। মিশ্রণটি সারা মাথায় সমানভাবে প্রয়োগ করুন। এক ঘণ্টা পর শিকাকাই শ্যাম্পু দিয়ে মাথা ধুয়ে নিন। এর ফলে চুল পাকা অনেকটা কমে যাবে।
(৪) রঙ চা ও লবণ
এক কাপ কড়া রঙ চা নিন। এর সাথে এক চা চামচ লবণ মেশান। ঠান্ডা হবার পর চায়ের তলানির অংশ সংগ্রহ করুন এবং তা চুলের গোড়ায় প্রয়োগ করুন। এক ঘণ্টা পর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল পরিষ্কার করে নিন। তবে চুল শ্যাম্পু দিয়ে পরিষ্কার করবেন না। এতে হিতে বিপরীত হতে পারে!
চুলের সঠিক রঙ, ধরণ, মসৃণতা ও ঘণত্ব নির্ভর করে সঠিক পুষ্টি ও যত্নের উপর। আর তাই এমন কন্ডিশনার ও শ্যাম্পু ব্যবহার করবেন যা আপনার চুলের সাথে সহজে মানিয়ে যায়। সোডিয়াম লরিল সালফ্যাট জাতীয় ক্ষারসম্পন্ন শ্যাম্পু বা কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না। এ ধরনের ক্ষতিকারক উপাদান আপনার চুলকে রুক্ষ করে তুলবে।
আপনার চুলে আর্দ্রতা বাড়াবে – এমন কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। তবে ঘন ঘন কন্ডিশনার ব্যবহার করবেন না। এতে আপনার মাথার চামড়ায় গ্রিজের পরিমাণ বেড়ে যাবে যা মাথায় খুশকির পরিমাণ বাড়িয়ে তোলে। নিয়মিত মাথায় ম্যাসাজ করলে চামড়ায় রক্ত সঞ্চালন বাড়বে যা আপনার চুলের সঠিক মাত্রায় বৃদ্ধি নিশ্চিত করবে।
ছবিঃ shutterstock