শীতের বিদায় ঘণ্টা বাজতে শুরু করেছে। শীতের আমেজ থাকতে থাকতেই বাসার ছাঁদে অথবা বাড়ির বারান্দায় বারবিকিউ করার জন্য উত্তম। শেষ দুপুরের নরম রোদে প্রিয়জনদের নিয়ে বারবিকিউ আরাম্ভ করলে আনায়াসেই সন্ধ্যায় মজা করে গরম গরম কাবাব মজার মজার গল্প করতে করতে খাওয়া যায়।
আমারা সবাই কোন না কোন সময় বারবিকিউ করেছি, সময়ের সাথে সাথে বারবিকিউ এর মেন্যুতে বেশ পরিবর্তন এসেছে। আসুন দেখে নেয়া যাক নতুন কি কি পদ আপনার বারবিকিউ পার্টিতে যোগ করতে পারেন।
(১) গ্রিল্ড ম্যাশড পটাটো
তন্দুরি রুটি অথবা পরোটার জায়গায় করতে পারেন গ্রিল্ড ম্যাশড পটাটো। বারবিকিউ করার কয়লাতে আলু ছেড়ে দিন, আলুগুলো অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলেও পেঁচিয়ে দিতে পারেন তাহলে আলুর খোসা ছাড়ানোর সময়ে হাতে কালি লাগবে না। খুব ভালোভাবে আলু সিদ্ধ হয়ে গেলে, খোসা ছাড়ানোর পর, ভর্তা করে নিন। লবণ আর গোলমরিচের গুঁড়ো দিয়ে তারপর বড় একটি প্যানে গলানো মাখন আর পরিমাণ মতো দুধ দিয়ে নেড়েচেড়ে খাবার আগে গরম গরম পরিবেশন করুন। যেহেতু, আলুগুলো কয়লায় পুড়ানো হয় তাই এই ম্যাশড পটাটোর ফ্লেভারটাই অন্যরকম মজার হয়।
(২) স্যটেড ভেজিটেবল
স্যটেড ভেজিটেবল মাত্র ৩ থেকে ৪ টি উপকরণ দিয়েই করা যায় আর এগুলো সবই আমাদের ঘরেই থাকে। গাজর, বরবটি, ফুলকপি এই তিন দিয়েই চমৎকার স্যটেড ভেজিটেবল করা যায়। সাথে যদি ব্রকলি, সবুজ, লাল ক্যাপ্সিকাম যোগ করতে পারেন তাহলে তো কথাই নাই! স্যটেড ভেজিটেবল এ রোষ্টেড কাজু বাদাম যোগ করতে পারেন, আলু যদি দেন তাহলে তা আগের থেকে ভালো করে সিদ্ধ করে নেয়া ভালো। হালকা তেলে শুধুমাত্র কালো গোলমরিচ আর লবন দেয়া হালকা সিদ্ধ করা স্বাস্থ্যসম্মত স্যটেড ভেজিটেবল কিন্তু সববেলার খাবারের জন্য খুব ভালো।
[picture]
(৩) বীফ স্টেক
ঢাকাতে এখন বেশ কিছু “বুচার শপ” হয়েছে যেখানে বিফ স্টেক করার উপযোগী মাংসের টুকরো পাওয়া যায়। মেরিনেট করেই সাধারণত এগুলো বিক্রি করা হয়, শুধু বাসায় এনে কয়লার আগুনে ঝলসে নেয়া। আর যদি না পারা যায়, তাহলে, আপনার পাড়ার কশাইও আপনার পছন্দ মতো বীফ স্টেক এর জন্য মাংস সরবরাহ করতে পারবে। ঘাড় অথবা পাঁজরের মাংস স্টেক করার জন্য আদর্শ। আর স্টেক বানাতেও সেইরকম মসলা লাগে না, শুধুমাত্র সয়াসস, তেল, লবন, গোলমরিচ, রসুন পেস্ট, পেঁয়াজ পেস্ট হলেই মজাদার স্টেক তৈরি করা সম্ভব। বীফ স্টেক করার সুবিধা হচ্ছে, এটি থাকলে আর অন্য কিছু অথবা অন্য কোন ধরনের সবজির দরকার পড়ে না, একটি খেলেই ভালোরকম পেট ভরে।
(৪) গ্রিল্ড টম্যাটো সালসা উইথ বেকড পটাটো ইন টরটিলা চিপস
টরটিলা (উচ্চারণ যদিও হবে টরটিয়া) এখন খুব জনপ্রিয় আমাদের দেশে। বারবিকিউ পার্টি শুরু করার পর অন্ট্রে অথবা স্টারটার হিসাবে গ্রিল্ড টম্যাটো সালসা করতে পারেন। খেতে অনেক মজাদার হয়। যেকোন সুপার মলে পেয়ে যাবেন টরটিলা চিপস। কয়লার উপরে ফয়েল পেপার দিয়ে টম্যাটো আর আলু গ্রিল করে নিন। তারপর আলু আর টম্যাটোর খোসা ছাড়িয়ে একসাথে কিছুটা ভর্তার মতো করো সরিষার তেল, ধনিয়া পাতা, লেবুর রস, কাঁচা মরিচ, পেঁয়াজ কুঁচি, লবন দিয়ে মেখে টরটিলা চিপসের ভিতরে চামুচ ভর্তি করে দিয়ে পরিবেশন করুন। দেখবেন, একটা ট্রেতে পড়ে থাকবে না আর কাবাব তৈরির সময়টুকুতে মুখ চালিয়ে যেতে পারবেন।
(৫) চীজ টিক্কা/ গ্রিল্ড চীজ
লোকালি যে চীজ আমাদের দেশে পাওয়া যায়, সেটা কিন্তু সল্টেড এবং এই চীজ এক ধরনের “ফেটা” চীজ, যেটার অনেকরকম ব্যবহার আর উপকারিতা রয়েছে। সেই চীজগুলো কিউব করে কেটে ক্যাপসিকাম-পেঁয়াজ-টম্যাটোর টুকরা শিকে গেঁথে তেল, গোলমরিচ, আর অল্প লবন দিয়ে গ্রিল করে তৈরি করতে পারেন অসাধারণ চীজ টিক্কা।
তাহলে আর দেরি না করে, এই ঠাণ্ডা ওয়েদারের সুযোগ নিন, অফিসের পর যে কোন উইকডেজেই হতে পারে এই কূল বারবিকিউ পার্টি!
ছবি ও রেসিপি – জ্যোতি হাসান