একটু ফিগার সচেতন যারা তারা হয়তো এর মধ্যেই ভেবে নিয়েছেন এক সপ্তাহের ক্র্যাশ ডায়েট করে ওজন ঝরিয়ে ফেলবেন। কিন্তু এই ক্র্যাশ ডায়েট দ্রুত ওজন কমলেও স্বাস্থের জন্যে যে খুব একটা ভালো নয় তা আমরা সকলেই কম বেশি জানি। এখন আরেকটি ডায়েটের বেশ প্রচলন হয়েছে যাকে বলা হয় “Clean Eating” যারা এতো ফিগার সচেতন নন,তারাও চাইলে এটি ট্রাই করতে পারেন। এটি শুধু যে ওজন কমানোর জন্য হেল্পফুল তা নয়, বরং এর রয়েছে আরও নানা উপকারিতা। চলুন আগে জেনে নিই,“Clean Eating” জিনিসটা আসলে কী? কি এই ক্লিন ইটিং?
ক্লিন ইটিং (Clean Eating) আসলে এক ধরনের ডায়েট। এটাকে যদি ঠিকভাবে আপনার জীবনযাত্রার সাথে মানিয়ে নেয়া যায়, তাহলে এটি সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার পাশাপাশি ওজন কমাতেও সাহায্য করবে। ক্লিন ইটিং মানে যতটা সম্ভব প্রাকৃতিক খাবার খাওয়া। অর্থাৎ খাবারকে যতটা সম্ভব তার নিজ ফরমেই রাখতে হবে। এক্ষেত্রে কম প্রক্রিয়াজাত, কম মশলার ব্যবহার হয়েছে এমন খাবারগুলোকেই তালিকাভুক্ত করা হয়। এধরনের খাবার হল- কাঁচা ফল মূল, খুব সামান্য তেল মশলায় ভাপানো শাক সবজি, ডিম, বাদাম, একদম চর্বি ছাড়া মাংস এবং মাছ প্রভৃতি।
তাছাড়া শস্য জাতীয় খাবার ও এর মধ্যে পড়ে। এই ডায়েটে লবণ ও চিনি প্রায় পুরোপুরি বাদ দিতে হবে একেবারেই খেতে না পারলে খুব সামান্য পরিমানে ব্যবহার করা যেতে পারে। আর প্রচুর পরিমানে আমিষ জাতীয় খাবার খেতে হবে। তবে খেয়াল রাখতে হবে, তা যেন তেল ও চর্বিমুক্ত হয়। ক্লিন ইটিং এর ক্ষেত্রে বলা হয় একটি খাবার তৈরিতে সর্বাধিক ৩ থেকে ৪ টি উপাদান ব্যবহার করা যেতে পারে। এবং সারা দিনের খাবার ৫ থেকে ৬ বারে খেতে হবে।
এই ক্লিন ইটিং এই উপকারিতা কী কী?
হাঁ, অনেক উপকারিতা আছে। চলুন জেনে নিই ক্লিন ইটিং এর উপকারিতা সমূহ –
(১) ক্লিন ইটিং ডায়েট এ অনেক বেশি পরিমাণে এনারজেটিক থাকা যায়, এটি অতিরিক্ত খেয়ে অলস হয়ে পড়া থেকে দূরে রাখে। যেমন সকালে এক পিস ব্রেড, ১ চামচ পিনাট বাটার আর কয়েক স্লাইস কলা, অথবা এক পিস ব্রেড এর ওপর সেদ্ধ ডিম আর সামান্য লবণ আর গোলমরিচ। এই সিম্পল খাবার দুপুর পর্যন্ত আপনাকে এনার্জি দেবে।
(২) ক্লিন ইটিং ধীরে ধীরে শরীর থেকে টক্সিন বের করতে সাহায্য করে বলে, ঘুম ভাল হয়। পাশাপাশি এটা আপনার মুড ভালো রাখতেও সাহায্য করে।
(৩) এই ধরনের ডায়েট আপনার ব্রেন ফাংশন ভাল রাখে এবং কাজে মনোযোগ দিতে সাহায্য করে। প্রোটিন সমৃদ্ধ এই ডায়েট যেখানে আপনি রাখতে পারেন চর্বি ছাড়া মাংস, মাছ, সবুজ শাক সবজি, ডিম বা পনির আপনাকে সারাদিন কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে সাহায্য করবে।
(৪) এই ডায়েট এ যেহেতু তেল মশলার ব্যবহার খুব কম রাখা হয় তাই অনেক রোগের ঝুঁকি থেকেই এটি দূরে রাখবে আপনাকে। যেকোনো ধরনের প্রসেসড এবং জাঙ্ক ফুড এই ডায়েটে একদম বারণ। তাই এই ডায়েট অনেকভাবেই আপনাকে উচ্চ রক্তচাপ বা ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি থেকে বাঁচাবে।
(৫) এই স্বাস্থকর ডায়েট আপনার স্কিন গ্লো এবং চুল শাইনি করার পাশাপাশি ওজন কমাতেও সাহায্য করবে।
সর্বোপরি, ওজন কমানোর পাশাপাশি সুস্বাস্থ্য ধরে রাখতে সাহায্য করবে এ ডায়েট। তাছাড়া ক্র্যাশ ডায়েট এর মত হঠাৎ করে ওজন কমায় না বলে, শরীর দুর্বল করে ফেলে না। তাই ক্র্যাশ ডায়েট-এর কুফল তো দেখলেন! এখন এর ঝুঁকি না নিয়ে আস্তে আস্তে খাবারের ধরনে পরিবর্তন আনুন। সুফলটা নিজেই দেখতে পাবেন।
ছবি – হেলদিহ্যাপিস্মার্ট ডট কম, সাটারস্টক