আমাদের দেশে অনেক নারীদের ক্ষেত্রেই টাকা উপার্জনের ইচ্ছা থাকলেও উপায় থাকে না। বিশেষত মা হয়ে যাবার পর অনেককেই নিজের ক্যারিয়ার বিসর্জন দিতে হয়। তবে এখন ইন্টারনেটের এই যুগে আপনি ঘরে বসেই উপার্জন করতে পারেন। হাজারটা অপশন আপনার আশেপাশে রয়েছে। আপনাকে শুধু সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে আর নিজের প্রতিভা অনুযায়ী সঠিক ক্ষেত্রটি বেছে নিতে হবে। চলুন আজ এমনি কিছু আয়ের উপায় সম্পর্কে জেনে নেই যেগুলো আপনি ঘরে বসেই করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং
ঘরে বসে আয়ের কথা আসলে প্রথমেই ফ্রিল্যান্সিং এর কথা বলতে হয়। এখন বাংলাদেশের তরূণ সমাজের কাছে ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় নাম। ফ্রিল্যান্সিং এর মাধুমে আপনি বিভিন্ন অনলাইন মার্কেটপ্লেসে আপনার পছন্দমত কাজ করতে পারবেন ঘরে বসেই। শুধু প্রয়োজন একটি কম্পিউটার আর ইন্টারনেট সংযোগ। ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব ডিজাইন, গ্রাফিক ডিজাইন, কনটেন্ট রাইটিং, ডাটা এন্ট্রিসহ নানা রকমের হাজার হাজার কাজ রয়েছে। তবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে আপনাকে অবশ্যই যেকোন একটা বিষয়ে দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। এখন প্রায় সব শহরেই ফ্রিল্যান্সিং এর উপর প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তা ছাড়াও আপনি ইন্টারনেটে সার্চ করেও আপনার দক্ষতা বাড়িয়ে এই সেক্টরে কাজ শুরু করতে পারেন।
বেকিং
কেক বেক করা অনেকের শখ। আপনি চাইলে আপনার এই বেকিং এর শখটাকেই আপনার পেশায় রূপান্তরিত করতে পারেন। প্রথমে একটি ফেসবুক পেজ খুলুন। আপনার বানানো সুন্দর সুন্দর কেকের ছবি সেখানে আপলোড করুন। এরপর আপনার পরিচিত সকলকে ঐ পেজে লাইক করতে ইনভাইট করুন। সেই সাথে যেকোন দাওয়াতে বা ঘরোয়া অনুষ্ঠানে আপনার বানানো কেক নিয়ে যান। বন্ধু আত্নীয় সকলকে যেকোন উপলক্ষে আপনার বানানো কেক উপহার দিন। আপনার ব্যবসার প্রাথমিক মার্কেটিং এভাবেই করুন। দেখবেন পরিচিত মহলে আস্তে আস্তে আপনার কেকের ব্যবসার প্রসার বাড়বে।
[picture]
মেকাপ স্টুডিও
আপনি কি মেকাপ করতে ভালবাসেন? ইউটিউব দেখে নতুন নতুন মেকাপের কৌশল আয়ত্ব করা আপনার প্রধাণ শখ? আপনার পরিচিতরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মেকাপ করতে আপনার কাছে আসতে চায়? প্রশ্নগুলোর উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তবে এই পেশাটি আপনার জন্য। আপনি আপনার বাসাতেই একটা রুম আলাদা করে মেকাপ স্টুডিও খুলে ফেলুন। কিছু ভাল কোয়ালিটির প্রয়োজনীয় কসমেটিক্স কিনে রাখুন। আর প্রচারের জন্য ফেসবুক তো আছেই। আপনার কাজের মান যদি ভাল হয় তবে প্রচার এবং জনপ্রিয়তা পেতে দেরী হবে না।
অনলাইন ক্রাফট বিজনেস
আমাদের মধ্যে অনেকেরই আছে অসাধারণ ক্রাফটিং প্রতিভা। সেলাই, ব্লক,বাটিক, হাতের কাজ থেকে শুরু করে মাটির বা কাঠের হস্তশিল্প। এসব জিনিসেরই আছে বিশাল এক গ্রাহক শ্রেণী। আপনি নিজে ড্রেস ডিজাইন করে বিক্রি করতে পারেন, কাঠের ঘর সাজানোর জিনিস বিক্রি করতে পারেন, জুয়েলারী তৈরী করতে পারেন, মাটির হস্তশিল্প বানাতে পারেন, ফেলনা জিনিস দিয়ে ক্রাফটিং করতে পারেন। আপনার কাছে অপশন আছে অগনিত। আপনাকে শুধু সুবিধামত অপশনটি বাছাই করতে হবে। আর প্রচারের জন্য ফেসবুক তো আছেই। আপনি আপনার ব্যবসার নামে একটি পেজ ও গ্রুপ খুলুন। তারপর আপনার বানানো জিনিসের প্রচারণা শুরু করুন। পণ্যের মান ভাল হলে বিক্রি আর প্রচারের অভাব হবে না।
নার্সারী
যদি আপনার বাসার সামনে অল্প খালি জায়গা থাকে আর আপনার বাগান করার শখ ও প্রতিভা থাকে তবে আপনি নার্সারী বানাবার প্লান করতে পারেন। বিভিন্ন জনপ্রিয় কিছু গাছের চারা দিয়েই শুরু করুন। এরপর আস্তে আস্তে আপনার কালেনশান বাড়ান। দেখবেন গ্রাহক সংখ্যাও আস্তে আস্তে বেড়ে যাবে।
ছবি – প্যান্ডেল ডট কো ডট ইউকে
লিখেছেন – সাদিয়া রিফাত ইসলাম