মজার কিছু খেলা, যা বাচ্চার মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে - Shajgoj

মজার কিছু খেলা, যা বাচ্চার মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে

child-1864718_1920

আমাদের সময়ে শৈশবটা যেমন ছিল, এখন কিন্তু তেমনটা আর দেখা যায় না। বিকেলে পাড়ার সব বাচ্চাদের সাথে খেলা, দল বেঁধে পাড়া বেড়ানো এরকম আর এখন দেখা যায় না বললেই চলে। বরং বুঝতে শেখার আগে থেকেই বাচ্চারা বেড়ে উঠচ্ছে টিভি, মোবাইল বা ল্যাপটপ এর গেমস দেখে দেখে। অনেক সময় দেখা যায় এই কারণে বাচ্চারা অনেকটা অন্তর্মুখী হয়ে যায়। কারো সাথে মিশতে পারে না। এছাড়াও খুব ছোট থেকেই স্কুল শুরু করে দেয়ায় পড়ালেখার চাপটাও তৈরি হয়। তাই অনেক সময়েই বাচ্চারা গৎবাঁধা পড়াশুনোর বাইরে আর বের হতে পারেনা। তাদের মধ্যে শিশু বয়স থেকেই এক ধরণের যান্ত্রিকতা তৈরি হয়। এগুলো কাটিয়ে ওঠার জন্যে প্রথমেই যেটা দরকার তা হল শিশুকে ইলেক্ট্রনিক গ্যাজেট থেকে দূরে রাখা। কিন্তু তার বদলে যদি তাকে অন্য  কোনও খেলা খেলতে না দেয়া হয় তাহলে, সে গ্যাজেটের দিকে ঝুঁকবেই। সেরকমই কিছু খেলার কথা আজকে আলোচনা করবো, যা আপনার বাচ্চাকে আনন্দ দেয়ার পাশাপাশি তার মানসিক গঠনেও সাহায্য করবে।

(১) মতামত তৈরি করতে শেখা

এই খেলাটি অনেকটা যৌক্তিক আলোচনার মতো। এটি আপনি নিজে আপনার বাচ্চার সাথে খেলতে পারেন, আবার আশেপাশের বাচ্চারা থাকলে তাদেরকেও খেলাটা বুঝিয়ে দিতে পারেন। ধরুন, আপনি বাচ্চাকে একটি গল্পের বই পড়ে শোনালেন। অবশ্যই সেটা যেন বাচ্চার বয়স উপযোগী হয়। তারপর কথাচ্ছলে তাকে জিজ্ঞেস করুন, সেই গল্পটি তার কেমন লেগেছে। ভালো লাগলে, কেন ভালো লেগেছে বা খারাপ লাগলে কেন খারাপ লেগেছে। গল্পের কোন অংশটুকু তার বেশি পছন্দ, কেন পছন্দ। একইভাবে এই খেলাটি দুজন বাচ্চার মধ্যে খেলা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে তারা দুজন আলাদা-আলাদাভাবে তাদের মতামত দেবে। তবে এক্ষেত্রে আগে থেকে অবশ্যই বাচ্চাকে শেখাতে হবে যে, প্রত্যেকের ভিন্ন ভিন্ন মতামত থাকতে পারে, সকলের মতকেই সমানভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। তা না হলে ভিন্ন মতের কারণে বাচ্চাদের মধ্যে ঝগড়া বাঁধিয়ে ফেলা কিন্তু অস্বাভাবিক কিছু নয়। এই খেলার মাধ্যমে যেকোনো ব্যাপারে শিশু তার নিজের মতামত তৈরি করতে শিখবে। পাশাপাশি অন্যের মতামত জানার মাধ্যমে নিজের চিন্তা ভাবনার ক্ষেত্র প্রসারিত হবে।

Sale • Baby Care, Bath Time, Day/Night Cream

    (২) গল্প তৈরির খেলা

    ধরুন কোথাও যাচ্ছেন, বা বিকেলে বারান্দায় বসে আছেন। চোখের সামনে যা দেখতে পাচ্ছেন, তার থেকে কোন কিছু নিয়ে তাকে একটা গল্প বলতে বলুন। বা জিনিষটাকে বর্ণনা করতে বলুন। যেমন- আকাশ। আপনার বাচ্চাকে স্কুলে যাওয়ার সময় জিজ্ঞেস করুন আজকের “আকাশ” কে বর্ণনা করতে, অথবা আজকের সকালটা কেমন সেটা বর্ণনা করতে।স্কুল থেকে ফেরার পথে রাস্তার পাশের যেকোনো জিনিস তাকে তার নিজের মতো করে বর্ণনা করতে বলুন। এরকমভাবে যেকোনো বিষয়ে গল্প তৈরি করতে বলুন, যেমন- ফুল, বৃষ্টি, চানাচুরওয়ালা, চাঁদ ইত্যাদি। এই খেলার মাধ্যমে বাচ্চার মধ্যে অবজারভেশন ক্ষমতা তৈরি হবে। তবে এক্ষেত্রে একটা বিষয়ে খুব সতর্ক থাকতে হবে। অনেক সময় বাচ্চাদের মধ্যে নিজের মতো করে কাল্পনিক বা মনগড়া গল্প বলার প্রবণতা দেখা যায়। এটা করতে গিয়ে তারা অনেক সময় মিথ্যে কথাও বলে থাকে। গল্প বলতে গিয়ে যেন এধরণের কোন ঘটনা না ঘটে সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। বাচ্চা যাই বলুক না কেন মন দিয়ে শুনুন। সে ভুল বললে, গুছিয়ে তাকে ভুল ধরিয়ে দিন।

    (৩) গল্প বলার খেলা

    আগের খেলার থেকে এটি একটু ভিন্ন। এই খেলাটি কয়েকজন বাচ্চাদের নিয়ে একসাথে খেলা যেতে পারে। সপ্তাহের ছুটির দিনটায় আশেপাশের কয়েকজন বাচ্চাদের নিয়ে ছোট পার্টি করুন। তারপর তাদের খেলাটি বুঝিয়ে দিন। যে কেউ একজন একটা লাইন বলবে। যেমন একদিন “একটা প্রজাপতি এসে বসল বাগানের ফুলে” এবারে এই লাইনের সুত্র ধরে একটা গল্প বলতে হবে আরেকজনকে। এভাবে একজনের পর আরেকজন বলবে। এতে করে বাচ্চার ইমাজিন করার ক্ষমতা বিকশিত হবে।

    (৪) শ্রদ্ধা জানানো

    বাড়িতে যখনই কোন দাওয়াত এর আয়োজন থাকবে, বা আত্মীয়স্বজনেরা আসবেন। সকল বাচ্চাকে বলুন, সকলের সামনে গিয়ে গুরুজনদের সম্পর্কে সুন্দরভাবে কিছু কথা বলতে তাদের সম্পর্কে। যেমন- কোন আনটি সুন্দর কেক বানান, তার সামনে গিয়ে বাচ্চারা তাকে ধন্যবাদ দিক। কিংবা কোন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি তিনি কত সুন্দর করে গল্প বলেন, তার জন্যে বাচ্চারা তাকে ধন্যবাদ দিক। একে অপরকে ধন্যবাদ দিতে শেখা, তাদের সম্পর্কে সুন্দর কথা বলা এটাও কিন্তু বাচ্চাদের মানসিক বিকাশে বড় ভূমিকা পালন করে।

    (৫) বলতো কি হয়েছিল

     বাচ্চাকে যেকোনো একটা ছবি দেখিয়ে বলুন, সেই ছবির সম্ভাব্য ঘটনা কি হতে পারে। সেটা ক্যালেন্ডারের কোন ছবিও হতে পারে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় লাইফ সিচুয়েশন এর কোনও ছবি হলে। যেমন- কেউ পুরস্কার নিচ্ছে, বা আনন্দ উদযাপন করছে, বা কোন উৎসবের ছবি। দেখিয়ে তাকে বলুন, এখানে কি ঘটতে পারে বলে তার মনে হচ্ছে।

    এই খেলাগুলো শুধু বাচ্চাকে যান্ত্রিকতা থেকে দূরে রাখবে, তাই শুধু নয়। তার মানসিক বিকাশে সহায়তা করবে, সেই সাথে বাচ্চার সাথে আপনার সম্পর্ক ও গভীর করে তুলবে।

    ছবি –  পিক্সাবে ডট কম

    লিখেছেন –  মাহবুবা বীথি। 

    3 I like it
    1 I don't like it
    পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

    escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort