পবিত্র মাহে রমজান শুরু হয়ে গেল। ইফতার নিয়ে তাই আমাদের প্রস্তুতির শেষ নেই। সারাদিন রোজা রেখে ইফতারের সময় পরিবারের সবাই একসাথে টেবিলে বসে দোয়া করা, কখন আযান পড়বে তার জন্য অপেক্ষা করা এবং আযান পড়ার পর আল্লাহ্র নামে রোজা খোলা- অসম্ভব সুন্দর ও শান্তিময় একটি ব্যাপার। একটি মাস জুড়ে রোজা রেখে তারপর আসে ঈদ-উল-ফিতর। এই সংযমের মাসে যেন আল্লাহ্র একটা রহমত সবার উপর থাকে।
ইফতারটাও একটা রহমতের ছোঁয়া কিন্তু। আর এই ইফতার নিয়েই যত কথা। অনেকেই রোজা খুলে গোগ্রাসে ভাঁজা-পোড়া গিলে গ্যাসের সমস্যায় চরমভাবে পড়েন। মনে হয় যেন পেয়েছি তো খেয়ে নেই! “ভাঁজাভুজি ছাড়া আবার রোজা হয় নাকি!”-এই কথা বলতে শুনেছি অনেককেই। হ্যাঁ, একটু ভাঁজাভুজি থাকবেই। কিন্তু তার মানে এই নয় যে মাত্রাতিরিক্ত খেয়ে অসুস্থ হওয়া!
ইফতারে সব সময় চেষ্টা করবেন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে যা কিনা পূর্ণ নিউট্রিশন এনে দেবে, সাথে শরীরটাকেও হালকা রাখবে। পেট বোঝাই করে ভাঁজা-পোড়া না খেয়ে লাইট আর হেলদি খাবার খাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ!
কি খাবেন তাহলে? চলুন জেনে নেই।
খেজুর
খেজুরে আছে প্রোটিন, মিনারেলস, ভিটামিন এ, বি১, বি২ ও বিবি। এটি আমাদের সার্কুলেটরি সিস্টেম-কে তরান্বিত করে হার্ট ভালো রাখে, হাড্ডি মজবুত করে এবং ত্বক ও দৃষ্টিশক্তি উন্নত করে। খেতেও খুব সুস্বাদু এই খেজুর।
বিভিন্ন ধরনের খেজুর পেতে ক্লিক করুন-
জুস
রোজা খুলে বিভিন্ন ধরনের ফলের যেমন, অরেঞ্জ, ম্যাংগো, অ্যাপেল, মিক্সড ফ্রুট ইত্যাদি জুস খাওয়াটা কিন্তু খুবই স্বাস্থ্যকর। আপনি চাইলে ব্লেন্ড করে বানিয়েও নিতে পারেন, আবার ভালো মানের জুস কিনেও নিতে পারেন। ঠাণ্ডা জুস খেলে পেটও ঠাণ্ডা থাকে। ভালোও লাগে। ডিহাইড্রেশন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
বিভিন্ন ধরনের জুস পেতে পারেন নিচের লিঙ্কটিতে-
হারবাল টি
ইফতারের পর কিন্তু চাইলে বিভিন্ন ধরনের হারবাল টি যেমন, তুলসী চা, লেবু চা, আদা চা, পুদিনার চা, গ্রীন টি ইত্যাদি খেতে পারেন। এই প্রাকৃতিক খাদ্য উপকরণগুলোর বহুমাত্রিক গুনাগুণের জন্য এদের থেকে তৈরি চা গুলোও স্বাস্থ্যের জন্যও খুব উপকারী।
স্যুপ
স্যুপ কিন্তু খুবই ইফেক্টিভ একটি হেলদি অপশন ইফতারের জন্য। মাশরুম, টমেটো, গারলিক, প্রন, চিকেন, ভেজিটেবল ইত্যাদি উপকরণ দিয়ে খুব সহজেই আপনি স্যুপ বানিয়ে নিতে পারেন। স্যুপ-এ থাকে প্রোটিন, মিনারেলস, ফাইবার, ভিটামিনস, লো-ক্যালরি এবং লো-ফ্যাট যা পুষ্টি দেয় শতভাগ আর সুস্বাদু তো বটেই।
চিড়া
চিড়া কিন্তু খুব উপকারী একটি খাদ্যদ্রব্য। পানির অভাব দূর করে পেটকে ঠাণ্ডা রেখে ক্ষুধা মেটাতে চিড়ার জুড়ি নেই। পানিতে ভিজিয়ে রেখে বা চিড়া বিভিন্নভাবে রান্না করে খুব সুস্বাদু ইফতার আইটেম কিন্তু বানিয়ে ফেলা যায়।
এছাড়াও ডিম, ময়দা, চাল, ডাল, আলু, বাতাম, মধু ইত্যাদি দিয়েও খুব সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর ইফতার আইটেম তৈরি করে নিতে পারেন অনায়াসেই। আর ভাঁজাভুজি খুবই অল্প তেলে করতে চেষ্টা করবেন। সব সময় মুখের মজাটাকে প্রাধান্য দিলে স্বাস্থ্য খারাপ হওয়ার চান্স কিন্তু থেকে যায়। তাই ব্যাল্যান্সড একটা রুটিন ফলো করুন যেখানে খাবারটা স্বাদ ও স্বাস্থ্য দুটোই রক্ষা করবে।
তবে একটা বিষয় মনে রাখবেন- ইফতারের খাদ্যসামগ্রী শুধু মাত্র সুস্বাদু ও পুষ্টিকর হলেই চলবে না, সেই সাথে হতে হবে স্বাস্থ্যসম্মত। এই সময়ে বাজারে প্রচুর পরিমাণ ভেজাল মিশ্রিত ইফতার সামগ্রী বিক্রি হয়ে থাকে যা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। তাই, যেকোনো খাবার কেনার সময় সতর্ক থাকতে হবে।
খেজুর, মধু, বাদামসহ বিভিন্ন খাবার অনলাইনে অর্ডার করতে পারবেন নির্ভরযোগ্য অনলাইন ফুডশপ khaasfood.com থেকে। নিম্নের লিঙ্কটিতে গিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে পারেন –
গ্রাহকদের মাঝে নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার সরবরাহ করে তারা ইতোমধ্যে দেশে বিদেশে প্রশংসিত হয়েছে। সম্প্রতি তাদেরকে নিয়ে একটি কেস-স্টাডি প্রকাশ করেছে সর্ববৃহৎ সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইট, ফেসবুক।
এই ছিলো আমাদের আজকের আয়োজন। সুস্থ থাকুন, নিরাপদে থাকুন। সবাইকে জানাই মাহে রমজানের শুভেচ্ছা।
লিখেছেন- আনিকা ফওজিয়া