কার্লি চুলকে প্রাণবন্ত করতে ৫টি কার্যকরী ঘরোয়া পদ্ধতি!

কার্লি চুলকে প্রাণবন্ত করতে ৫টি কার্যকরী ঘরোয়া পদ্ধতি!

কার্লি চুলকে প্রাণবন্ত করতে ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করছে একজন

স্ট্রেইট কিংবা কার্লি, চুল হেলদি হলে আর ঠিকঠাকভাবে স্টাইলিং করতে পারলে যেকোনো চুলেই আপনার পার্সোনালিটি এনহ্যান্সড হবে! কার্লি চুলের রয়েছে অন্যরকম সৌন্দর্য। তবে ঢেউখেলানো কার্লি বা কোঁকড়া চুল সামলানো বেশ কঠিন। একটু অযত্নে চুলে রুক্ষভাবে চলে আসতে পারে। এছাড়াও; পছন্দের কোনো হেয়ার স্টাইল করতে যেয়ে এই ধরনের চুল নিয়ে খুবই ঝামেলা হয় কারণ কার্লি চুল অধিকাংশ সময়ে আনম্যানেজেবল থাকে। এই সমস্যা থেকে মুক্তির উপায় হিসেবে অনেকেই বেছে নেন রিবন্ডিং, ফ্ল্যাট আয়রনিং কিংবা স্ট্রেইটেনিংয়ের মতো কেমিক্যাল ট্রিটমেন্ট। যেগুলোতে বিভিন্ন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদানের পাশাপাশি প্রয়োজন ইলেকট্রিক হিট, যা চুলের জন্য মোটেও ভালো না। এ পদ্ধতিগুলো স্থায়ী কোনো সমাধান দিতে পারে না। কার্লি চুলকে প্রাণবন্ত করতে ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে চান?

কার্লি চুলের জন্য প্রয়োজন বাড়তি যত্নের। এ ধরনের চুল সঠিক যত্নে হয়ে উঠে সতেজ এবং মজবুত। কার্লি চুলকে প্রাণবন্ত করতে ৫ টি কার্যকরী ঘরোয়া পদ্ধতি সম্পর্কে আমার আজকের এই ফিচার।

SHOP AT SHAJGOJ

    কার্লি চুলকে প্রাণবন্ত করতে ৫টি কার্যকরী ঘরোয়া পদ্ধতি 

    নিয়মিত শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করার পাশপাশি কার্লি চুলে ব্যবহার করতে পারেন ঘরোয়া কিছু হেয়ারপ্যাক। এই প্যাকগুলো চুলকে করে তুলবে ম্যানেজেবল ও শাইনি। এমন কিছু হেয়ারপ্যাক দেখে নিন এক নজরে।

    অ্যাপেল সিডার ভিনেগার

    অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের নাম কম বেশি সবাই শুনেছেন। সাধারণত ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অ্যাপেল সিডার ভিনেগারের ব্যবহার সম্পর্কে আমরা জানি, কিন্তু এই অ্যাপেল সিডার ভিনেগার কোঁকড়া চুলের জন্যও উপকারী; জানেন কি? অ্যাপেল সিডার ভিনেগার কার্লি চুলকে নরম ও কোমল করে তোলে। সেইসাথে চুলকে ঝলমলে করে তোলে। এতে থাকা অ্যাসিডিক উপাদান চুলের পিএইচ লেভেল ঠিক রেখে চুলকে করে তোলে স্বাস্থ্যজ্জ্বল। অ্যাপেল সিডার ভিনেগার চুলের প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসাবে কাজ করে। এটি চুলের পিএইচ লেভেল ব্যালেন্স করে।

    অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার

    যেভাবে প্যাকটি তৈরি করবেন ও ব্যবহার করবেন 

    • সমপরিমাণ অ্যাপেল সিডার ভিনেগার এবং পানি মিশিয়ে নিন।
    • শ্যাম্পু দিয়ে চুল ভালো করে ধুয়ে মিশ্রণটি চুলে অ্যাপ্লাই করুন। এরপর অ্যাপেল সিডার ভিনেগার আর পানির মিশ্রণটি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
    • এভাবে কয়েক মিনিট রাখুন। তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।

    ব্যবহার

    • মাসে এক থেকে দুইবার এটি ব্যবহার করতে পারেন।

    ডিম

    চুলের পুষ্টি যোগাতে ডিমের জুড়ি নেই। সুস্থ সুন্দর চুলের জন্য প্রোটিনের অবদান অনস্বীকার্য। প্রোটিনের প্রধান উৎস ডিম। কোঁকড়া চুলের জন্য ডিমের প্যাক বেশ কার্যকর। ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ, ই, প্রোটিন এবং বায়োটিন যা চুল পড়া রোধ করে, চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। বায়োটিনের অভাব হলে চুল পড়া বেড়ে যায়। ডিমের কুসুম রুক্ষ চুলকে ময়েশ্চারাইজড করে তোলে। এছাড়াও; ডিমের পুষ্টি মজবুত চুলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

    প্রোটিন হেয়ারপ্যাক

     

    যেভাবে প্যাকটি তৈরি করবেন ও ব্যবহার করবেন 

    • একটি পাত্রে একটি ডিম ভালো করে ফেটে নিন।
    • এরসাথে এক টেবিল চামচ মেয়োনিজ এবং দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল ভালো করে মিশিয়ে নিন।
    • এই মিশ্রণটি পরিষ্কার চুলে ভালো ভাবে অ্যাপ্লাই করুন।
    • ৩০ মিনিট অপেক্ষা করুন।
    • ৩০ মিনিট পর ঠান্ডা পানি দিয়ে খুব ভালো করে পরিস্কার করে ধুয়ে নিন।

    ব্যবহার

    • এই প্যাকটি সপ্তাহে একবার ব্যবহার করুন।

    আভোকাডো

    অ্যাভোকাডোতে আছে প্রোটিন, ভিটামিন বি এবং প্রয়োজনীয় পুষ্টিগুণ। ভিটামিন বি চুলের সুস্বাস্থ্যের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। কোঁকড়া চুলের অধিকারীদের জন্য আভোকাডো আশীবার্দ স্বরূপ। এটি চুল হাইড্রেটেড রাখে এবং চুল হয় অনেক বেশি ম্যানেজেবল। আভোকাডোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই রয়েছে। ভিটামিন ই চুলকে করে তোলে শাইনি, কোমল ও হেলদি। এটি চুলের ফলিকলগুলো মজবুত করতে হেল্প করে। তাই চুল পড়াও কমে আসে খুব দ্রুত!

    অ্যাভোকাডো হেয়ারপ্যাক

    যেভাবে প্যাকটি তৈরি করবেন ও ব্যবহার করবেন 

    • একটি আভোকাডো ভালোভাবে ম্যাশ করে নিন। এরসাথে দুই টেবিল চামচ টকদই মেশান।
    • মিশ্রণটি সম্পূর্ণ চুলে ব্যবহার করুন। এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন।
    • ১ ঘন্টা পর চুল শ্যাম্পু করে ফেলুন।

    ব্যবহার

    • এই প্যাকটি সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।

    অ্যালোভেরা জেল

    অ্যালোভেরা আমাদের দেশে বেশ সহজলভ্য একটি উপাদান। অনেকের বাসায় অ্যালোভেরার গাছ রয়েছে। এর জেল দিয়ে কোঁকড়া চুলকে নরম ও  কোমল করা যায় খুব সহজেই। এছাড়াও চুলের খুশকি তাড়াতে সাহায্য করে অ্যালোভেরা।

    অ্যালোভেরা জেল

    ২ টি হেয়ারপ্যাক যা আপনি অ্যালোভেরা জেল দিয়ে তৈরি করতে পারবেন-

    প্যাক-১

    এটি তৈরি করতে শুধুমাত্র অ্যালোভেরা জেল লাগবে।

    যেভাবে প্যাকটি তৈরি করবেন ও ব্যবহার করবেন 
    • একটি অ্যালোভেরা নিন, সেটি থেকে জেল বের করুন।
    • এই জেলটি চুলে ১৫ মিনিট লাগিয়ে রাখুন।
    • তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং শ্যাম্পু করুন।
    ব্যবহার
    • অ্যালোভেরা জেল চুলে সপ্তাহে দুইবার ব্যবহার করতে পারেন।

    প্যাক-২

    এটি তৈরি করতে লাগবে অ্যালোভেরা জেল ও যেকোনো ক্যারিয়ার তেল ( নারিকেল তেল/অলিভ অয়েল )।

    যেভাবে প্যাকটি তৈরি করবেন ও ব্যবহার করবেন 
    • দুই টেবিল চামচ অ্যালোভেরা জেলের সাথে ২ টেবিল চামচ নারিকেল তেল মিশিয়ে নিন।
    • আপনি চাইলে এর সাথে এক টেবিল চামচ ক্যাস্টর অয়েল, আপনার পছন্দমত যেকোনো অ্যাসেনশিয়াল অয়েল; যেমনঃ টি ট্রি, ল্যাভেন্ডার বা রোজমেরি তেল কয়েক ফোঁটা মিশিয়ে নিতে পারেন।
    • স্ক্যাল্প থেকে ম্যাসাজ শুরু করে চুলের আগা পর্যন্ত ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করে নিন।
    • ৩০ মিনিট অপেক্ষা করে চুল ভালোভাবে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে নিন।
    ব্যবহার 

    সপ্তাহে দুইবার এই প্যাকটি ব্যবহার করুন।

    কার্যকারিতা 

    • অ্যালোভেরা জেল স্ক্যাল্পের পিএইচ লেভেল ঠিক রাখে।
    • এটি চুল পড়া রোধ করে।
    • মাথার তালুতে কোনো প্রকার ইনফেকশন বা চুলকানি থাকলে তাও দূর করে দেয়।
    • এমনকি খুশকি ও উকুন দূর করতেও অ্যালোভেরা জেল বেশ কার্যকরী।
    SHOP AT SHAJGOJ

      জবা

      যেকোনো চুলের জন্য জবার প্যাক অনেক উপকারী। কোঁকড়া চুলেও জবা ফুলের প্যাক ব্যবহার করতে পারেন।

      রাজকন্যা জবা ফুলের পাউডার সাথে কয়েকটা জবা ফুল

      যেভাবে প্যাক তৈরি করবেন 

      • চার/পাঁচটি জবা ফুল নিন। সাথে কিছু পাতাও নিতে পারেন। ফুল ও পাতা সামান্য পানি দিয়ে পেস্ট করুন। এছাড়াও ঝামেলা এড়াতে জবা গুঁড়ো ব্যবহার করতে পারেন। রাজকন্যার হিবিকাস পাউডার টাও এক্ষেত্রে ব্যবহার করে দেখতে পারেন।
      • এই প্যাকটি সম্পূর্ণ চুলে ব্যবহার করুন। ২০-২৫ মিনিট প্যাকটি চুলে রাখুন।
      • তারপর কুসুম গরম পানি দিয়ে শ্যাম্পু করে ফেলুন। পার্থক্যটা নিজেই অনুভব করতে পারবেন।

      ব্যবহার

      এই প্যাকটি সপ্তাহে দুই ব্যবহার করতে পারেন।

      কার্লি চুলকে ম্যানেজেবল ও ঝলমলে রাখতে আরও কিছু টিপস

      কার্লি চুলকে প্রাণবন্ত করতে ঘরোয়া পদ্ধতি ব্যবহার করছে একজন

      • কোঁকড়া চুলকে বশে রাখতে হলে নিয়মিত পরিচর্যা করা প্রয়োজন। হট অয়েল ম্যাসেজ চুলকে নরম ও কোমল করে। নারিকেল তেল, অলিভ অয়েল অথবা আমন্ড অয়েল; যেকোনো তেল হালকা গরম করে চুলে ম্যাসেজ করতে পারেন।
      • নিয়মিত চুল আঁচড়াতে হবে।
      • সপ্তাহে এক/দুইবার চুলে প্যাক ব্যবহার করুন।
      • কোঁকড়া চুলে এক্সটা কেয়ার দরকার। তাই ডিপ কন্ডিশনিং করা প্রয়োজন। সপ্তাহে একবার অন্তত চুলে ডিপ কন্ডিশনিং করুন।
      • চুলে অতিরিক্ত কেমিক্যাল পণ্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন।
      • সাধারণ টাওয়ালের পরিবর্তে মাইক্রোফাইবার টাওয়ালের ব্যবহার কোঁকড়া চুলের জন্য ভালো।
      SHOP AT SHAJGOJ

        একটু সচেতনতা আর যত্ন আপনার কার্লি চুলকে করে তুলবে সফট, হেলদি এবং ম্যানেজেবল। আশা করছি; আমার লেখা এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করে আপনার কার্লি চুলকে প্রাণবন্ত করে তুলুন। চুলের যত্নে অথেনটিক প্রোডাক্টস কিনতে আপনারা চাইলে সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ যার একটি যমুনা ফিউচার পার্ক ও অপরটি সীমান্ত সম্ভারে অবস্থিত, সেখান থেকে কিনতে পারেন আর অনলাইনে কিনতে চাইলে শপ.সাজগোজ.কম থেকে কিনতে পারেন। ভালো থাকুন, নিরাপদে থাকুন।

        ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক

        42 I like it
        5 I don't like it
        পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

        escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort