প্রতিদিনের সৌন্দর্য চর্চায় টোনিং একটি গুরুত্বপুর্ণ ধাপ। মূলত সঠিকভাবে স্কিন কেয়ারের তিনটি অপরিহার্য ধাপ রয়েছে। প্রথমত, ক্লিনজার দিয়ে ত্বক পরিষ্কার করা। পরের ধাপটি হচ্ছে টোনিং আর একেবারে শেষেরটি হল ময়েশ্চারাইজিং। এই তিনটি ধাপকে পরিপূর্ণরূপে কার্যকরী করে তোলার জন্য বাজারে হাজারো প্রোডাক্ট পাওয়া যায়। কিন্তু এসব প্রোডাক্ট ব্যবহার করার আগে আপনি আপনার ত্বকের ধরণ ভেদে ঘরোয়া উপায়ে প্রাকৃতিক সমাধান বেছে নিতে পারেন।
[picture]
অনেকে টোনিং বাদ দিয়ে শুধুমাত্র ক্লিনজিং আর ময়েশ্চারাইজিং এর উপর জোর দেন। সেক্ষেত্রে মনে রাখা জরুরি যে, টোনিং এ দুটো ধাপের মতই সমান গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এতে করে ত্বকের বন্ধ লোমকূপ খুলে যায় বিধার ময়েশ্চারাইজার খুব ভালোভাবে স্কিনে কাজ করতে পারে।আপনাদের সুবিধার্থে সহজলভ্য উপাদানে টোনার তৈরির কিছু পদ্ধতি আলোচনা করা হলঃ
টোনার ১ (স্বাভাবিক ত্বক)
প্রয়োজনীয় উপাদান-
- শশার রস
- মধু
পদ্ধতিঃ
একটি পরিষ্কার পাত্রে এক কাপ পরিমাণ শশার রস নিন। তাতে এক টেবিল চামচ মধু নিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে নিন। মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। ঠান্ডা হওয়ার পর কটন বলে নিয়ে মুখে লাগান। বিশ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। এভাবে প্রতিদিন লাগান।
টোনার ২
প্রয়োজনীয় উপাদান-
- তরমুজ
পদ্ধতি –
টুকরো করে নিন। তারপর তা বীজসহ ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। এটি ত্বকের সাথে মানিয়ে গেলে নিয়মিত ব্যবহার করুন।
টোনার ৩ (শুষ্ক ত্বক)
প্রয়োজনীয় উপাদান-
- ভেজিট্যাবল অয়েল
- লেবুর রস
- মধু
পদ্ধতি –
একটি বাটিতে ১/৪ টেবিল চামচ ভেজিট্যাবল অয়েল নিন। তাতে ১/৪ টেবিল চামচ লেবুর রস ও ১ টেবিল চামচ মধু নিয়ে ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। মুখে লাগিয়ে ১০ মিনিট পর হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন।
টোনার ৪ (তৈলাক্ত ত্বক)
প্রয়োজনীয় উপাদান-
- গাজরের রস
- শশার রস
- পুদিনার রস
- লেবুর রস
পদ্ধতি –
৪ টেবিল চামচ শশার রসে, ২ টেবিল চামচ গাজরের রস, ১ টেবিল চামচ পুদিনার রস এবং ১ টেবিল চামচ লেবুর রস মিশিয়ে ফ্রিজে রেখে আইস কিউব করুন। এ আইস কিউব মুখে আলতো করে রাব করুন। প্রতিদিন টোনার হিসেবে ব্যবহারে সতেজতা উপভোগ করুন।
টোনার ৫ (যেকোন ধরণের ত্বক)
প্রয়োজনীয় উপাদান –
- গোলাপ জল
- Lavender Essential Oil
- Rose Geranium Essential Oil
- Palmarosa Essential Oil
- Patchouli Essential Oil
- Ylang Ylang Essential Oil
পদ্ধতি –
এক কাপ গোলাপ জল নিন। তাতে৭-৮ ফোঁটা Lavender Essential Oil, ১ ফোঁটা Rose Geranium Essential Oil, ১ ফোঁটা Palmarosa Essential Oil, ১ ফোঁটা Patchouli Essential Oil, ১ ফোঁটা Ylang Ylang Essential Oil দিন। ভালোভাবে মিশিয়ে নিন। ব্যাস হয়ে গেল অসাধারণ একটি টোনার।
টিপস-
- যেকোনো টোনার ব্যবহার করার আগে আপনার স্কিনে প্যাচ টেস্ট করে নিন। ফলে সহজেই বেছে নিতে পারবেন, আপনার ত্বকের জন্য উপযোগী টোনারটি।
- চা, কফি, কার্বোনেটেড ড্রিংকস বেশি পরিমাণে পান করা থেকে বিরত থাকুন।
- বেশি করে পানি পান করুন।
- সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন।
ফলাফল –
নিয়মিত টোনার ব্যবহারে পাবেন উজ্জ্বল, লাবন্যময় ত্বক। কেননা টোনার ত্বক টানটান রাখে, অতিরিক্ত তেল নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ব্রণ নিরাময় করে, ত্বকের বলিরেখা দূর করে।
সতর্কতা –
খুব বেশি শুষ্ক ও সেনসেটিভত্বকে টোনার ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুন। প্রয়োজনে স্কিন স্পেশালিস্টের শরণাপন্ন হোন।
লিখেছেন – নীল
ছবি – আর্টফাইল.নেট