মুখের খুঁতগুলো ঢেকে ফেলে স্কিনকে নিখুঁত করে তুলতে ফাউন্ডেশনের জুড়ি নেই। ফাউন্ডেশন থেকে ভালো ফল পেতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ফাউন্ডেশন টুলস ব্যবহার করা। অনেকেই আছেন হাত দিয়েই ফাউন্ডেশন মুখে ব্লেন্ড করে ফেলেন, এতে স্কিন যেমন ন্যাচারাল লাগে না, তেমন ফাউন্ডেশনও মুখে বসে না ঠিক মতো। এজন্যে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করার ক্ষেত্রে টুলসগুলো খুবই দরকারি।
[picture]
আজকে জানাবো ফাউন্ডেশন ব্যবহারের জন্যে বিভিন্ন টুলস সম্পর্কে। কোন টুলস কি কাজে লাগে? এবং কোন টুলসটি আপনার দরকার? আসুন জেনে নেয়া যাক।
মেকাপের জগতে এবং বিউটি গুরুদের কাছে সবচেয়ে পছন্দের টুলটি হলো বিউটি ব্লেন্ডার। আপনি যদি খুবই সুন্দর এবং নিখুঁত বেইজ মেকাপ চান, তবে বিউটি ব্লেন্ডার হতে পারে আপনার পারফেক্ট সঙ্গী।
বিউটি ব্লেন্ডারগুলো স্পঞ্জের মতো হয়। এগুলো শুকনো অবস্থায় ছোট থাকলেও পানিতে ভেজানোর পর ফুলে ডাবল হয়। প্রত্যেক বার বিউটি ব্লেন্ডার ব্যবহারের আগে পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে এক্সট্রা পানি চিপে নিয়ে ব্যবহার করতে হয়। মনে রাখবেন, শুকনো বিউটি ব্লেন্ডার ফেস এ ব্যবহার করলে তা কিন্তু কোনো কাজে দেবে না। মুখে ফাউন্ডেশন ডট ডট করে লাগিয়ে বিউটি ব্লেন্ডার দিয়ে হালকা চেপে চেপে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করতে হয়। তবে, কখনোই ঘষে ঘষে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করা যাবে না। বিউটি ব্লেন্ডার এর একটা ভালো দিক হলো, একটি মুখে যতটুকু ফাউন্ডেশন দরকার হয়, ততটুকুই ব্লেন্ড করে, বাকিটা শুষে নেয়। এতে মুখে অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন ব্যবহারের ফলে মেকাপ কেকি দেখানোর ভয় থাকে না।
শুধু ফাউন্ডেশনই না, বিউটি ব্লেন্ডার দিয়ে আপনি আপনার কনসিলারও ব্লেন্ড করতে পারবেন। বিউটি ব্লেন্ডারগুলো বিভিন্ন আকৃতির হতে পারে। আপনার সুবিধা অনুযায়ী যে কোনো একটা নিতে পারেন। বিউটি ব্লেন্ডারের নাম – অরিজিনাল বিউটি ব্লেন্ডার, রিয়েল টেকনিক মিরাকল স্পাঞ্জ।
যারা বিউটি ব্লেন্ডার ব্যবহার করতে চান না, তারা এই ধরনের ফ্লাট টপ কাবুকি ব্রাশ ব্যবহার করতে পারেন। এই ব্রাশগুলো দিয়েও ফাউন্ডেশন খুব ভালোভাবে ব্লেড করা যায় এবং ফাউন্ডেশন কভারেজও ভালো পাওয়া যায়। একটু ফাউন্ডেশন হাতে ঢেলে নিয়ে কাবুকি ব্রাশটিতে অল্প অল্প ফাউন্ডেশন লাগিয়ে মুখে হালকা চেপে চেপে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। ফ্লাট টপ কাবুকি ব্রাশের নাম – সিগমা এফ ৮০ ফ্লাট টপ কাবুকি ব্রাশ, ওয়েট অ্যান্ড ওয়াইল্ড ফ্ল্যাট টপ ব্রাশ।
যখন আপনি হেভি মেকাপ-এর জন্যে ফাউন্ডেশন থেকে হাই কভারেজ চাচ্ছেন, তখন আপনাকে হেল্প করবে পয়েন্টেড ফাউন্ডেশন ব্রাশ। এই ব্রাশটা দিয়ে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করা হয় না। এটা দিয়ে ফাউন্ডেশন মুখে এপ্লাই করা হয়। হাতে ফাউন্ডেশন ঢেলে নিয়ে। ব্রাশটির সাহায্যে পুরো মুখে ফাউন্ডেশন লাগিয়ে নিন পেইন্ট করার মতো। এরপর অন্য যে কোনো ব্রাশ অথবা বিউটি ব্লেন্ডারের সাহায্যে ব্লেন্ড করে ফেলুন। পয়েন্টেড ফাউন্ডেশন ব্রাশের নাম – রিয়েল টেকনিক পয়েন্টেড ফাউন্ডেশন ব্রাশ।
ফাউন্ডেশন ব্যবহারের অন্য আর একটি টুল হচ্ছে ফাউন্ডেশন বাফিং ব্রাশ। এই ব্রাশের সাহায্যে আপনি ফাউন্ডেশন খুব সহজেই চেপে চেপে অথবা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ব্লেন্ড করতে পারবেন। যারা ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করতে একটু কাঁচা তারা এটা দিয়ে সহজেই ব্লেন্ড করে ফেলতে পারবেন। ফাউন্ডেশন বাফারিং ব্রাশের নাম – রিয়েল টেকনিক বাফিং ব্রাশ।
অনেক সময় আমরা ফাউন্ডেশন থেকে একটু ন্যাচারাল এবং হালকা কভারেজ চাই, বিশেষ করে দিনের বেলায়। তখন এ ধরনের স্টিপলিং ব্রাশ খুব কাজে দেয়। স্ট্রিপলিং ব্রাশের সাহায্যে খুব চটজলদি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করা যায়। আপনি যদি খুব ব্যস্ততার মধ্যেও থাকেন, তখন এটি দিয়ে খুব সহজেই এবং দ্রুত ফাউন্ডেশন ব্লেণ্ড করে ফেলতে পারবেন। স্টিপলিং ব্রাশের নাম – ই.এল.এফ স্টিপলিং ব্রাশ, রিয়েল টেকনিক স্টিপলিং ব্রাশ।
এই লেখাটি পড়ার পর অনেকেই ভাবতে পারেন যে, ফাউন্ডেশন ব্লেন্ড করার জন্য এতগুলো টুলস সব কিনতে হবে!! একদমই না। আপনি আপনার পছন্দ এবং প্রয়োজন মতো যে কোনো টুল বেছে নিতে পারেন। এছাড়া সাজগোজ-এর অনলাইন-এ এবং শপ.সাজগোজ.কম-এও পাবেন।
এই তো ছিল, ফাউন্ডেশন ব্যবহারের জন্যে বিভিন্ন টুলস সম্পর্কে কিছু কথা। আশা করছি আপনারা একটু হলেও ধারণা পেয়েছেন।
ছবি – পিক্সাবে ডট কম, পিন্টারেস্ট ডট কম, দ্যা মেকাপ ডিরেক্টরি ডট কো ডট ইউকে
লিখেছেন – জান্নাতুল মৌ