অনেকেই জানতে চেয়েছেন যে ওজন বাড়ানোর জন্য কী করতে হবে। আজকে আমি ওজন বাড়ানোর কিছু টিপস দিব। তবে আগেই জানিয়ে দিচ্ছি যে ওজন বাড়ানো বা কমানো যাই করেন না কেন তা একজন ডায়েটিশিয়ানকে দেখিয়ে নেওয়া ভালো। কারণ কারো ওজন কারো সাথে মিলবে না কিংবা খাবার ধরনও এক হয় না। তাই সবাই এক রকম ডায়েট ফলো করলে তা কাজে নাও লাগতে পারে। চলুন জেনে নেই দ্রুত ওজন বাড়াতে ৫ ধরনের খাবার নিয়ে বিস্তারিত।
আন্ডার-ওয়েট এর কিছু কারণ
দ্রুত ওজন বাড়াতে হলে আগে জানতে হবে আপনার ওজন কম কেন। এর কয়েকটি কারণ হতে পারে –
১. বিভিন্ন ধরনের রোগ-যক্ষা, ডায়রিয়া সংক্রামক ব্যধি ইত্যাদি থাকলে।
২. দেহের তুলনায় কম খাদ্য খেলে এবং সেই সাথে খুব বেশি কাজ করলে।
৩. থাইরয়েড গ্রন্থির অসামাঞ্জস্যতা।
৪. উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, অতিরিক্ত চিন্তা আহারে অরুচি তৈরি করতে পারে।
৫. দুর্বল খাদ্য নির্বাচন।
৬. নিদ্রাহীনতা, অনিয়মিত খাদ্য গ্রহণ, পুষ্টিহীনতা।
৭. খাওয়ার ব্যাপারে অনীহা বা খুঁতখুঁত স্বভাব।
৮. বংশগত।
আরো অনেক কারণ আছে যে কারণে কম ওজন দেখা যায়। তাই আগে বের করতে হবে আপনার ওজন কেন কম? তারপর জানতে হবে আপনার ওজন স্বাভাবিক ওজন থেকে কত কম। এজন্য আপনি আপনার বডি মাস ইনডেক্স মেপে নিতে পারেন। সেইভাবে আপনি আপনার আদর্শ ওজন কত তা জানতে পারবেন। ১৮.৫-২৪.৯ হলো স্বাভাবিক বিএমআই।
দ্রুত ওজন বাড়াতে ক্যালরি প্ল্যান
৫-৬ কেজি কম হলে মোট ক্যালরির সাথে ২০০ ক্যালরি যোগ করে খেতে পারেন। ৬-১২ কেজি কম হলে ৫০০ ক্যালরি এবং ১২ কেজি বা তার অধিক হলে মোট ক্যালরির সাথে ৬০০ ক্যালরি যোগ করতে পারেন।
দ্রুত ওজন বাড়াতে ৫ ধরনের খাবার
ওজন বাড়ানোর জন্য খাবারের ক্ষেত্রে কিছু নীতি নির্ধারণ করা প্রয়োজন। যেমন – উচ্চ ক্যালরির, উচ্চ প্রোটিন, চর্বি, এবং উচ্চ শর্করা জাতীয় খাবার গ্রহণ। যাদের ওজন কম তাদের খাবারের প্রতি অরুচি থাকে, তাই এক বারে না খেয়ে বারে বারে (১ ঘণ্টা পর পর) খেতে হবে।
১. উচ্চ ক্যালরি
কেউ যদি সকালে ২টি রুটি খেতে না চায় সে ১টি তেলে ভাজা পরোটা খেতে পারে। উচ্চ ক্যালরির কয়েকটি খাবার হলো – হালুয়া, পুডিং, মিষ্টি, মাখন, জ্যাম, জেলী, কলা, কোল্ড ড্রিঙ্কস ইত্যাদি।
২. উচ্চ প্রোটিন
প্রতি কিলোগ্রাম ওজনের জন্য ১ গ্রাম প্রোটিন দরকার। কিন্তু যাদের ওজন কম তাদের দৈনিক ৯০-১০০ গ্রাম প্রোটিন দরকার। ডিম, মাছ, মাংস, দুধ, ডাল ও বাদামে প্রচুর প্রোটিন পাওয়া যায়।
৩. উচ্চ চর্বি
স্বাভাবিক সময় থেকে চর্বির পরিমাণ বাড়াতে হবে। মাখন, তেল ঘি, মেয়োনেজ, দুধের সর ওজন বাড়াতে সাহায্য করে। বাচ্চাদের জন্য দুধে একটু তেল দিয়ে গরম করলে তাতে ক্যালোরির পরিমাণ বাড়বে।
৪. উচ্চ শর্করা
পাতা জাতীয় শর্করা না খাওয়া ভালো। অধিক শর্করা পেতে পাউরুটি, বিস্কুট, আলু, নুডুলস, মিষ্টি ফল ইত্যাদি খাবারের তালিকায় রাখতে হবে।
৫. তরল
খাদ্য তালিকায় রাখতে হবে পানি, সরবত, দুধ ইত্যাদি। বেশি পানি খেলে তা পাকস্থলিকে বড় করতে সাহায্য করে। তবে খাবার গ্রহণের আগে ও মাঝে পানি খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। খাবারেও যদি ওজন না বাড়ে তবে সাপ্লিমেন্ট দিতে হবে। বাচ্চাদেরকে জিঙ্ক দেয়া যেতে পারে, বড়দেরকেও সাপ্লিমেন্ট দেয়া যেতে পারে। spirulina এ জাতীয় ১টি সাপ্লিমেন্ট। তাছাড়া আয়রন ট্যব্লেট, ক্যালসিয়াম ট্যব্লেট, মাল্টি ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট দেয়া যেতে পারে।
সবকিছুর জন্য দরকার নিজের ইচ্ছা এবং প্রচেষ্টা। তাই খাবার বুঝে শুনে খান এবং সুস্থ থাকুন।
ছবিঃ সংগৃহীত – হেলথএ্যাডভাইসক্লাব.কম, ইমেজেসবাজার.কম