আমাদের প্রায় প্রত্যেকেরই তো কম বেশী বিউটি প্রোডাক্টস রয়েছে। অনেক সময় দেখা যায় ঝোকের বশে অনেক বিউটি প্রোডাক্টই কেনা হয়ে যায়। কিন্তু সেগুলো হয়ত স্যুট করে না, নয়ত সেগুলো কিছুটা ইউজ করার পরে এর থেকেও ভাল প্রোডাক্ট কেনার ফলে সেগুলো আর ইউজ করা হয় না। ফলাফল? ড্রয়ারের এক কোনায় পরে থাকতে থাকতে এক সময় ডেট এক্সপায়ারড হয়ে যাওয়া। তখন আর ফেলে দেয়া ছাড়া উপায় থাকে না। তাহলে ফেলে রাখা প্রোডাক্টস দিয়ে কি কিছুই করার নেই? অবশ্যই আছে! ওই সকল বিউটি প্রোডাক্টগুলো ফেলে না রেখে সেগুলো কিভাবে অন্য কাজে লাগানো যায়, সেটার আইডিয়াই আজ দেবো। যতই হোক, টাকা দিয়ে তো কিনেছি। তাই না? তো চলুন আর কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই ফেলে রাখা প্রোডাক্টস দিয়ে করা ৬টি বিউটি হ্যাকস।
ফেলে রাখা প্রোডাক্টস দিয়ে বিউটি হ্যাকস
১. ফেইস ক্লিনজার
অনেক সময় আমরা বিভিন্ন ব্রান্ডের ফেইস ক্লিনজার ট্রাই করার জন্য কিনে থাকি। কোনোটা ভালো লেগে গেলে তো ভালোই। নয়ত ফেলেই রাখা হয়। আজ থেকে আর ফেলে না রেখে গোসলের সময় আপনার পিউমিস স্টোনে (Pumice stone) একটু খানি ফেইস ক্লিনজার নিয়ে আপনার পায়ের পাতা এবং গোড়ালিতে স্ক্রাব করে নিন। রেজাল্ট দেখে আপনি নিজেই অবাক হবেন। আপনার পায়ের পাতার মরা চামড়া দূরতো হবেই, সাথে সাথে পায়ের পাতাটাও হয়ে উঠবে নরম ও পরিষ্কার।
২. টোনার
আমার নিজের সাথেই এমন হয়েছে একটা টোনার কিনে বেশিদিন ব্যবহার করি নি। পরে নতুন আরেকটা ট্রাই করেছি আর সেটাই বেশি ভালো লেগে গিয়েছে। আমি জানি, আপনাদের অনেকের সাথেই এমন হয়। তো এই ফেলে রাখা টোনার কিভাবে ইউজফুল করে তোলা যায়? আমরা জানি, কমবেশি সব টোনারেই সুন্দর ফ্র্যাগরেন্স থাকে। তাই টোনারকে বানিয়ে ফেলতে পারেন বডি মিস্ট। টোনারটাকে একটা স্প্রে বোতলে ভরে নিয়ে আপনার ড্রেসে স্প্রে করতে পারেন। এছাড়াও টোনারকে আপনার ওয়্যারড্রোব ফ্রেশনার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।
৩. লিপস্টিক
আবারো আমার একটা কথা শেয়ার করি। লিকুইড লিপস্টিক ব্যবহার করার পর থেকে আমার খুব কমই নরমাল লিপস্টিকগুলো ইউজ করা হয়। অনেকেরই এমন লিপস্টিকগুলো ফেলে রাখা প্রোডাক্টস হিসেবে পড়ে থাকে। আর ড্রয়ারের স্পেইস নষ্ট করে। তাই, লিপস্টিকগুলোকে একটি ছোট চামচের পেছন দিক ব্যবহার করে উঠিয়ে নিন। এবার, লিপস্টিকটুকু একটা চামচের উপরে রাখুন। একটি মোমবাতি জ্বালিয়ে চামচের নিচ থেকে তাপ দিয়ে লিপস্টিকটা গলিয়ে নিন। এবার, একটা লিপস্টিক প্যালেট নিন। প্যালেটে গলানো লিপস্টিকটুকু ঢেলে নিন। এভাবে সবগুলো লিপস্টিক দিয়ে একটা নতুন লিপস্টিক প্যালেট বানিয়ে নিতে পারেন। ট্রাভেলের সময় এটি বেশ ভালো কাজে দেবে।
৪. মাশকারা
আমরা জানি, একটা মাশকারা ওপেন করার পর ৩ মাসের বেশী ব্যবহার করা উচিত নয়। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় যে, ৩ মাস ডেইলি ইউজ না করার ফলে অনেকখানি মাশকারা টিউবে রয়ে যায়। সেটাকে কিভাবে ইউজফুল করে তোলা যায়? আমাদের অনেকেরই অল্প বয়সে চুল পেকে যায়। অনেক সময় হেয়ার ডাই করার সময় থাকে না বা অনেকে ক্ষতির ভয়ে চুল ডাই করতে চান না। তারা, চটজলদি পাকা চুল ঢাকতে চুলটুকুতে মাশকারা লাগিয়ে নিন। এটা চুলের খুব একটা ক্ষতি করবে না।
৫. পারফিউম
আমাদের সবার কাছেই কমবেশি বিভিন্ন ধরনের পারফিউম থাকে। স্ট্রং স্মেলের পারফিউমগুলো ডেইলি ইউজ করা হয় না। তাই সেগুলো পড়েই থাকে। তাই স্ট্রং স্মেলের পারফিউমগুলোকে কিভাবে লাইট বডি মিস্টে কনভার্ট করবেন, সেটাই বলছি। একটা খালি স্প্রে বোতল নিয়ে এতে বেশ কিছুটা নরমাল পানি বা রোজ ওয়াটার ভরে নিন। এর মধ্যে কিছুটা পারফিউমও ভরে নিন। সবকিছু ভালোমত মিশিয়ে নিন এবং আপনার লাইট বডি মিস্ট রেডি।
৬. কন্ডিশনার
বাসায় অনেক সময় কন্ডিশনার পড়ে থাকে। দেখা যায়, বোতলের শেষে অনেকটুকু কন্ডিশনার থাকা অবস্থায়ই সেটা পড়ে থাকে। সেটা ফেলে না রেখে অন্য কাজেও লাগানো যায়। মেকআপ ব্রাশ নিয়মিত ক্লিনার দিয়ে পরিষ্কার করার ফলে অনেক সময় ব্রাশগুলোর সফটনেস আর থাকে না। তখন একটা পাত্রে কুসুম গরম পানি নিয়ে, তার মধ্যে কন্ডিশনার মিশিয়ে নিন। এবার ব্রাশের ব্রিসেল-গুলো ওই পানির মিশ্রণে কিছুক্ষণ চুবিয়ে রাখুন। নরমাল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রাশগুলোতে সফটনেস ফিরে আসবে।
এই তো জেনে নিলেন ফেলে রাখা প্রোডাক্ট কিছু প্রয়োজনীয় বিউটি হ্যাকস যা কিনা নিত্যদিনের কাজে ব্যবহার করা যায় খুব সহজেই। আশা করছি, আপনাদের অনেক বেশি হেল্প হবে।
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; ইমেজেসবাজার.কম