বই পড়া একটা খুব সুন্দর একটা শখ। শখটা কী? অবসর সময়ে নিজের ইচ্ছেতে আনন্দের জন্য অথবা নিজের ভালো লাগার জন্য যে কাজগুলো সাধারণত মানুষ করে থাকে, তাকেই শখ বলে। শুধু অবসর সময়েই শখের কাজ করা নয় বরং কেউ কেউ শখের জন্য অবসর সময়ও বের করে নেয়। অনেকে শখকেই পরিণত করে নিজের ক্যারিয়ারে। মানুষের মূল্যবোধ আর রুচিবোধ ভিন্নতায় একেক জনের শখ একেক রকম হয়ে থাকে।
বিভিন্ন ধরনের শখ যেমন- ছবি আঁকা, মাটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের শৌখিন গয়না তৈরি, বেড়াতে যাওয়া, ডাকটিকেট ও বিদেশি মুদ্রা সংগ্রহ করা, খেলাধুলা করা ইত্যাদি। সব ধরনের শখই মানুষকে আনন্দ দেয়, দেয় একঘেয়ে জীবন থেকে মুক্তি এবং নতুনভাবে বাঁচার উৎস ও চিন্তাধারা পরিবর্তনের সুযোগ।
আমার শখ হচ্ছে বই পড়া। ছোটবেলা থেকেই প্রতিদিন অন্তত ৪-৫ পৃষ্ঠা না পড়লে আমার ভালো লাগে না। দেশি-বিদেশি প্রচুর লেখকের বই পড়া হয়েছে আমার। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, সব ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য বই-ই আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। বই সম্পর্কে কিছু বিখ্যাত উদ্ধৃতি আছে,
“A room without books, a body without a soul.”
অর্থ- “বই ছাড়া একটি ঘর, আত্মা ছাড়া একটি শরীরের মত।”
কেন বই পড়া উচিত?
(১) নতুন জগতে অনুপ্রবেশ
প্রতিবার বই পড়া হলে নতুন এক জগতে প্রবেশ করা যায়। নতুন জীবন, গল্পের চরিত্রে নিজেকে ভাবা, বইয়ের অলিগলিতে উঁকিঝুঁকি দেয়া যায়। শহরে বসে এক প্রত্যন্ত অঞ্চলের পিঠার স্বাদ পাওয়া, সাধারণ একটা জীবন যাপন করেও প্রচন্ড অ্যাডভেঞ্চারের জগতে ঘুরে আসা যায় শুধুমাত্র বইয়ের মাধ্যমেই।
(২) যেমন ইচ্ছে তেমন নিজেকে ভেবে নেয়া যায়
গল্পের মূল চরিত্রে অথবা সবচেয়ে সাহসী, মজাদার চরিত্রে নিজেকে ভেবে আনন্দ নেয়ার মজাটার সাথে কি আর কিছুর তুলনা হয়?
(৩) অন্যের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানা
এক জীবনে সব ধরনের অভিজ্ঞতা নেয়া আমাদের একার পক্ষে সম্ভব না। কিন্তু বিভিন্ন ধরনের বই পড়ে আমরা লেখকের ব্যক্তিগত অথবা দেখা ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারি এবং অভিজ্ঞতা নিতে পারি।
(৪) কল্পনাপ্রবণ এবং সহানুভূতিশীল করে তোলে
বই পড়া মানুষকে সুন্দর সব কল্পনা করতে শেখায়, ভাবতে শেখায় আশেপাশের মানুষ এবং ঘটনা নিয়ে। যা সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে।
(৫) বিশ্বস্ত ভ্রমণ সঙ্গী
একা একা কোথাও যাচ্ছেন? অথবা পাশে বসা মানুষটি নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে? এই অবস্থায় একটা ভালো বই খুব সহজেই আপনাকে উপহার দিবে সুন্দর কিছু সময়, দীর্ঘ ভ্রমণের ক্লান্তিও কেটে যাবে সাথে বিরক্তিও।
(৬) বই সম্পর্কে ধারণা আপনাকে রাখবে সবসময় আধুনিক
আড্ডায় বসলে দেখা যায় যে বেশি গল্প বলতে পারে, বাস্তব উদাহরণ দিতে পারে তার কদরের শেষ নেই। কোন সময় কী হয়েছিল, ভবিষ্যতে কী হবে আর বর্তমানে খেলার জগৎ, সিনেমা, পোশাক সবকিছু সম্পর্কেই আপ টু ডেট রাখতে সাহায্য করবে বই।
কিছু বই পড়া যা জীবনে অনুপ্রেরণা যোগায়
১. The 7 habits of highly effective people by Stephen R. Covey
এই বইটি পড়ে শিখেছি কিভাবে নিজের মধ্যে ভালো কিছু গুনাগুণ আয়ত্ত করা যায়, যেগুলো পরবর্তীতে আমাকে আরও বেশি মূল্যবোধসম্পন্ন হতে সাহায্য করেছে।
বইটির একটি উল্লেখযোগ্য উদ্ধৃতি,
“Sow a thought, reap an action; sow an action, reap a habit; sow a habit, reap a character; sow a character, reap a destiny.”
এর অর্থ দাঁড়ায় যে, একটা কিছু করার চিন্তা করে বসে না থেকে তা কর্মে পরিণত করা, একে অভ্যাসে পরিণত করা, এতে অভ্যস্ত ব্যক্তিত্বে পরিণত হওয়া এবং তা থেকেই তৈরি হবে ভবিষ্যৎ।
২. Don’t sweat the small stuff..( and it’s all small stuff ) by Richard Carlson
লেখক এই বইটিতে সত্যিকার অর্থেই কী প্রয়োজনীয় আর কী অপ্রয়োজনীয় তা ব্যাখ্যা করেছেন। অনেক সময় আমরা খুব ছোট ব্যাপারে মনোযোগ দেই আর জরুরি ব্যাপারগুলো ভুলে যাই যা পরবর্তীতে জীবনে অসাফল্যের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বইটি পড়লে জীবনের প্রতি অনেক ভুল চিন্তাগুলোই পালটে যাবে পাঠকের।
বইটির একটি উল্লেখযোগ্য উদ্ধৃতি,
“Stress is nothing more than a socially acceptable form of mental illness.”
এর অর্থ হচ্ছে যে, মানসিক চাপ সমাজে স্বীকৃত মানসিক অসুস্থতা বৈ আর কিছু নয়।
৩. Mother by Maxim Gorky
এই বইটিকে লেখকের সেরা বই বলা হয়। বইটি প্রায় ১০০ বছর আগে লিখা হলেও, আজও এর গ্রহণযোগ্যতা এক বিন্দুও কমে নি। উপন্যাসটির মূল গল্প দুইটি সত্যি ঘটনার ওপর ভিত্তি করে লিখা হয়েছে।
১) ১৯০২ সনে ঘটে যাওয়া সরমভোতে শ্রমিকদের মে দিবস প্রদর্শনী।
২) এর পরবর্তীতে শ্রমিকদের জীবনে নেমে আসা বিভিন্ন কঠিন পরীক্ষাসমূহ।
এই গল্পের নায়ক পাভেল মিখাইলোভিচ হলেও গল্পটি দেখানো হয়েছে পাভেলের মা এর দৃষ্টিকোণ থেকে। গল্পটি সত্যিই বেশ অনুপ্রেরণামূলক।
কিছু রোম্যান্টিক বই
১. The Notebook by Nicholas Sparks
আমার পড়া সবচেয়ে রোম্যান্টিক বই। অন্যরকম এক অনুভূতি জাগে মনে বইটি পড়ার পর। গল্পটির ওপর ২০০৪ সালে একটি ইংরেজি সিনেমাও তৈরি হয়েছে। এমনকি হিন্দি ‘জিন্দেগি তেরে নাম’ সিনেমাটিও এই গল্পের ওপর ভিত্তি করেই তৈরি। বলা হয়, বইটি একটি সত্যি ঘটনা অবলম্বনেই লিখা হয়েছে। নোয়া আর অ্যালির প্রেমকাহিনি পাঠককে ভাসিয়ে নেবে প্রেমের জোয়ারে, দুঃখের সাগরে আর এক অনিশ্চয়তার সময়ে।
২. হুমায়ূন আহমেদের ‘কৃষ্ণপক্ষ’
শব্দের জাদুকর হুমায়ূন আহমেদ স্যারের অন্যতম প্রিয় বই এটা আমার। দু’জন ভালবাসার মানুষের কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করা, এক ভয়ঙ্কর দূর্ঘটনায় পড়ে দু’জনের একসাথে আর স্বপ্নের সংসারটি না সাজানো কোথায় যেন এক তিব্র ব্যথা সৃষ্টি করে। অরুর ঘুমন্ত মুহিবকে মাথায় হাত বুলিয়ে বাসর রাতে বলা, “আমি যে তোমাকে কতটা ভালবাসি, তা তুমি কোনদিনই জানতে পারবে না “… মোহময় এক গল্প।
৩. 2 States by Chetan Bhagat
এই বইটি লেখকের খুব বিখ্যাত বইগুলোর একটি, লেখক সবসময়ই বাস্তব জীবনের গল্প নিয়ে কাজ করায় উৎসাহী। এই গল্পে ভারতবর্ষের দুই প্রদেশে দুই মতবাদ এবং দুই ধরনের জীবন যাপন করায় অভ্যস্ত দুইজন মানুষ একে অন্যের প্রেমে পড়ে যায়, যেখানে দুই পরিবারের কেউই এই সম্পর্ক মেনে নিতে রাজি না। কিন্তু অনেক চড়াই উতরাই পার হয়ে কিভাবে দুইজনের প্রণয় পরিণয়ে রূপান্তরিত হয় সেটাই এই গল্পের মূল আকর্ষণ।
কিছু রম্য গল্পের বই
১. Is everyone hanging out without me? by Mindy Kaling
বইটি পড়লে প্রথম যেটা মনে হবে তা হচ্ছে, “আমার জীবনটাও তো আমি এভাবে দেখতে পারি!” গল্পের কোন মুহূর্তেই হাসি থামানো সম্ভব ছিল না। এক পর্যায়ে গল্পের নায়িকার সাথে একবার দেখা করার খুব ইচ্ছে জন্ম নিবে, মনে হবে তার বন্ধু অথবা বোন হতে পারলে মন্দ হত না !
২. গোপাল ভাঁড়
তিনি ছিলেন মধ্যযুগে নদিয়া অঞ্চলের একজন প্রখ্যাত রম্য গল্পকার/ভাঁড় ও মনোরঞ্জনকারী। তিনি অষ্টদশ শতাব্দীতে প্রখ্যাত রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের রাজসভায় নিযুক্ত ছিলেন। রাজা তাকে তার সভাসদদের মধ্যকার নবরত্নদের একজন হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেছিলেন। বহু সময় ধরে বাংলাদেশে এবং ভারতে তাকে নিয়ে লেখা নানান রম্যগল্প ও কার্টুন প্রচলিত আছে। গল্পগুলো বড় ছোট সব বয়সি মানুষকেই সমান আনন্দ দিবে।
৩. Three men in a boat by Jerome K Jerome
গল্পটি ৩ বন্ধুকে নিয়ে যারা নৌকোয় করে থেমস নদীর দিকে যাচ্ছিল। তাঁদের যাত্রাকালিন সময়ে নানা রকম মজার সব ঘটনা ঘটতে থাকে। এই মজার ব্যাপারগুলো নিয়েই সাজানো হয়েছে বইটি, অবসর অথবা মন খারাপের সময়ে বইটি বেশ খানিকটা রিলিভ দিবে পাঠককে।
কিছু গোয়েন্দা বই
১. রকিব হাসানের ‘তিন গোয়েন্দা’
কিশোর পাশা, রবিন মিলফোরড, মুসা আমান এই তিন ক্ষুদে গোয়েন্দা এবং তাদের অ্যাডভেঞ্চারের গল্প নিয়েই এই বইয়ের সিরিজগুলো সাজানো হয়েছে। এই তিন জনেরই বসবাস যুক্তরাষ্ট্র ক্যালিফোর্নিয়া শহরের রকি বীচ শহরে। আরও কিছু চরিত্র যেমন ফগর্যাম্পারকট, জর্জিনা… এরা গল্পগুলোকে মজাদার করে তুলেছে। আমার মনে আছে টিফিনের টাকা বাঁচিয়ে রাতের বেলা পাঠ্যবইয়ের মাঝে লুকিয়ে এই বইগুলো কিনে পড়তাম। নিজেকেও ওসব রহস্যময় জায়গায় কল্পনা করে কী যে আনন্দ পেতাম তা বলে বোঝানোর মতো না।
২. Sherlock Holmes by Arthur Conan Doyle
ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগ ও বিংশ শতাব্দীর প্রথম ভাগের একটি কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র। ১৮৮৭ সালে প্রথম আবির্ভূত এই চরিত্রের স্রষ্টা স্কটিশ লেখক ও চিকিৎসক স্যার আর্থার কোনান ডয়েল। হোমস একজন উচ্চমেধাসম্পন্ন লন্ডন-ভিত্তিক ‘পরামর্শদাতা গোয়েন্দা’। নির্ভুল যুক্তিসঙ্গত কার্যকারণ অনুধাবন, যে কোনো প্রকার ছদ্মবেশ ধারণ এবং ফরেনসিক বিজ্ঞানে দক্ষতাবলে জটিল আইনি মামলার নিষ্পত্তি করে দেওয়ার জন্য তাঁর খ্যাতি ভুবনজোড়া। কেসগুলোতে হোমসের সহকারী হিসেবে রয়েছেন ডঃ ওয়াটসন। সিরিজগুলো বেশ আকর্ষণীয় এবং রহস্যময়। নিঃসন্দেহে সব বয়সী পাঠকদেরই ভালো লাগবে।
৩. সত্যজিৎ রায়ের ‘ফেলুদা’
ফেলুদা সত্যজিৎ রায়ের সৃষ্ট বাংলা সাহিত্যের এক অন্যতম জনপ্রিয় কাল্পনিক গোয়েন্দা চরিত্র। ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসের সন্দেশ পত্রিকায় ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ প্রকাশিত হয়। ১৯৬৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত এই সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে। ফেলুদার প্রধান সহকারী তাঁর খুড়তুতো ভাই তপেশরঞ্জন মিত্র ওরফে তোপসে ও লেখক লালমোহন গাঙ্গুলি (ছদ্মনাম জটায়ু)। সত্যজিৎ রায় ফেলুদার সোনার কেল্লা ও জয় বাবা ফেলুনাথ উপন্যাসদুটিকে চলচ্চিত্রায়িত করেন। এই দুই ছবিতে কিংবদন্তি চলচ্চিত্র অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় ফেলুদার ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন। বর্তমানে সত্যজিতের পুত্র সন্দীপ রায় ফেলুদার গল্প ও উপন্যাস নিয়ে টেলিভিশন ধারাবাহিক ও চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। ফেলুদার রহস্য খুবই জটিল এবং এক্সাইটিং।
কিছু ভৌতিক গল্পের বই
১. Dracula by Bram Stoker
এই বইটি লিখা হয়েছে ১৮৯৭ সালের দিকে, যা প্রথম পাঠককে কাউন্ট ড্রাকুলার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। নভেলটিতে কিভাবে ড্রাকুলা ট্র্যানসিলভানিয়া থেকে নতুন রক্তের খোঁজে ইংল্যান্ডে যায়, অভিশাপ ছড়িয়ে দিতে তার চেষ্টার বিরুদ্ধে একদল নারী পুরুষের লড়াই দেখান হয়েছে।
২. হুমায়ূন আহমেদের ‘ভয়’
এই বইয়ে মোট ৩টি গল্প আছে- চোখ, জীন-কফিল এবং সঙ্গিনী। তিনটা গল্পই তিন রকম ধাঁচের। এর মধ্যে সঙ্গিনী গল্পটিই আমার সবচেয়ে প্রিয়। কারণ, এতে ভয়ের পাশাপাশি এমন একজন মানুষের জন্য অনুভূতি দেখানো হয়েছে যা সত্যিই অবিশ্বাস্য। গল্পের শেষটিও ছিল একেবারেই চিন্তার বাইরে। মিসির আলীর ব্যাখ্যার অতীত গল্পটি এক কথায় অসাধারণ।
৩. Rotters by Daniel Kraus
গল্পটি জয়ি এবং তার বাবাকে নিয়ে গড়ে উঠেছে। তার মায়ের মৃত্যুর পর সে গ্রামে তার অদ্ভুত এবং গোপনীয় রহস্যে ঘেরা বাবার কাছে চলে যেতে বাধ্য হয়। তারপর ঘটতে থাকে একের পর এক রোমহর্ষক কাহিনী। বইটি মূলত কিশোর উপন্যাস এবং ট্র্যাডিশনাল হরর গল্প না। কিন্তু তবুও এর বিভিন্ন ঘটনা পাঠককে হরর গল্পের চেয়ে কম ভয়ে রাখবে না!
সময়, ধৈর্য এবং সহজলভ্যতার অভাবে আজকাল বই পড়া অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছে মানুষ। বই পড়ুয়াদের অসামাজিকও বলা হয়, যেহেতু বই একা একা পড়তে হয় আর মুভি, পিকনিক, পার্টি অনেক লোকের সমাগমে হয়। কিন্তু বই পড়া ছাড়া কোন মানুষের চারিত্রিক বা মানসিক বিকাশ কোনভাবেই সম্ভব না। ভালবাসার কাছের মানুষটিকে ফুল আর একটা বই দিলে সে যতটা খুশি হবে, অন্য কোন দামি উপহারে হয়তো ততোটা হবে না। তাছাড়া ভালো একটি বই উপহারের মাধ্যমে মানুষের প্রতি মানুষের যত্ন, সহমর্মিতা এবং ভালবাসা প্রকাশ পায়। শুধু যে গল্পের বই তা না, বিভিন্ন ধরনের পাঠ্যবই, ডিকশনারিও কিন্তু হতে পারে উপহার হিসেবে অন্যতম। বন্ধু হয়তো সরকারি চাকুরির জন্য চেষ্টা করছে, তাকে তো একটা ‘আজকের বিশ্ব’ উপহার দেয়াই যায় অথবা যে মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পড়তে আগ্রহী তাকে দেয়া যেতে পারে মনের সুখ মনের অসুখ নামের এই বইটি।
পৃথিবীতে কঠিন সময়ে আর কেউ পাশে না থাকলেও বই সবসময়ই প্রকৃত বন্ধু হয়ে পাশে থাকবে। বইয়ের মূল্যবান শব্দগুলো শিখাবে কীভাবে ধৈর্য ধরতে হয়, দুঃখের সময় হাসাবে আর নিয়ে যাবে রোমান্টিক এক জগতে। তাই আমি বই ভালোবাসি এবং বই-ই আমার কাছে সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। আমি একটা কথা মনে রাখতে চেষ্টা করি, “যে বই পড়ে তার শত্রু থাকে না”। তাই বই অবসর, ব্যস্ত দুই সময়েই আমার নিত্যসঙ্গি। বই পড়া অভ্যাসে পরিণত করুন।
ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; সাটারস্টক