বসে বসে ফেসবুক ঘাটছিলেন আর দেখলেন যে একটা গ্রুপে এক আপু তার লম্বা আর ঘন চুলের ছবি দিয়েছেন। দেখেই পাগল হয়ে গেলেন। ওহ মাই গড!!! এত সুন্দর চুল!!! কী কী মেখে এত সুন্দর চুল বানিয়েছেন। প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন। উনিও ওনার হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট সম্পর্কে বললেন। অনলাইনের একটা পেইজ থেকে কিনেছেন তাও বললেন। আপনিও দুম করে সেই প্রোডাক্টগুলো অর্ডার করে দিলেন আর মনে মনে স্বপ্নও দেখতে শুরু করে দিলেন যে আপনার চুলও এমন হবে কদিন পরেই।
আচ্ছা, দুম করে না জেনে শুনে যে অর্ডার-টা করে দিলেন, একবারও কি রিসার্চ করে নেওয়ার কথা মনে এসেছে? যেখানে এতগুলো টাকা আর আপনার মহামূল্যবান চুলের ব্যাপার!!!
অনেকেই এমনটা করে থাকেন। পড়ে প্রোডাক্ট ভালো না হলে কপাল চাপড়ান!
আচ্ছা চলুন, আজকে বলি কিছু সাবধানতার কথা, যেগুলো অনলাইনে চুলের প্রোডাক্ট কেনা নিয়ে তা কাজে লাগবে।
অনলাইনে চুলের প্রোডাক্ট কেনা নিয়ে সাবধানতাসমূহ
১. রিভিউ যাচাই
প্রথমেই আসি, যেটা দিয়ে শুরু করেছিলাম। আজকাল অনেক অসাধু ব্যবসায়ী আছেন, যারা বিভিন্ন গ্রুপে ফেইক রিভিউ দিয়ে তাদের বিজনেস বাড়িয়ে থাকে। তাই না জেনে শুনে হুট করে হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট কিনে বসবেন না একদম। এতে করে পয়সা গুলো জলে তো যাবেই, চুলের ক্ষতি হতে পারে। আপনার কোনো প্রোডাক্ট-এর অনেস্ট রিভিউ-এর প্রয়োজন পড়লে গুগল এবং ইউটিউব থেকে রিভিউ পড়ে নিতে পারেন। এছাড়া প্রোডাক্ট-এর ওয়েবসাইট /পেইজ-এও ক্রেতারা রিভিউ দিয়ে থাকে। সেখান থেকে অনেস্ট রিভিউ পেতে পারেন।
২. চুলের ধরন অনুযায়ী প্রোডাক্ট
“আরে, এই পেইজ-এর ছবিতে আপুটার চুল এত সিল্কি! জিজ্ঞেস করি কি প্রোডাক্ট ইউজ করলে আমার চুল ও এমন হবে?”
জিজ্ঞেস করা পর্যন্ত ঠিক আছে। কিন্তু সেটা আপনার চুলে স্যুট করবে কিনা সেটা কিন্তু আপনি জানেন না। সবার চুলের ধরন এবং স্ক্যাল্প এক হয় না। তাই নিজের ধরন বুঝে এবং প্রোডাক্টটি সম্পর্কে জেনে তারপরে অর্ডার করুন।
৩. হারবাল ইনগ্রেডিয়েন্টস জানা
আজকাল এমন প্রচুর ফেসবুক পেইজ আছে, যারা হারবাল হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট সেল করে থাকেন। সেসব প্রোডাক্ট কেনার আগে অবশ্যই ইনগ্রেডিয়েন্টগুলো জেনে নিবেন। যদি কোনো ইনগ্রেডিয়েন্ট-এ আপনার অ্যালার্জি থাকে, তবে সেটা বাদ দিয়ে বানিয়ে দিতে বলবেন।
৪. বারকোড দেখে নিন
অনলাইনে হেয়ার কেয়ার প্রোডাক্ট কেনার আগে অবশ্যই রিয়েল ছবি দিতে বলুন ওউনারদের। এছাড়া বারকোড জেনে নিন। এত করে প্রোডাক্ট নকল হওয়ার চান্স থাকে না।
৫. পরিচিত ওয়েবসাইট ও পেইজ
সবসময় চেষ্টা করবেন পরিচিত ওয়েবসাইট/পেইজ থেকে প্রোডাক্ট নেওয়ার, আর প্রোডাক্ট কেনার আগে তাদের পেমেন্ট পলিসি, প্রোডাক্ট রিটার্ন পলিসি ইত্যাদি সব কিছু জেনে নেবেন। এতে করে পরবর্তীতে ঝামেলা হওয়ার চান্স কম থাকে।
৬. অ্যালার্জি টেস্ট
অনলাইন থেকে হেয়ার কালার কিনে থাকেন অনেকে। যেটা প্যাচ টেস্ট করার কোনো উপায় থাকে না। কিছু কিছু এমন হেয়ার কেয়ার/স্টাইলিং প্রোডাক্ট থাকে এগুলোর অ্যালার্জি টেস্ট করে কেনা উচিত। তাই এগুলো কিন্তু আপনার নিজেরই ঝুকি নিয়ে কিনতে হবে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় এগুলো নরমাল শপ থেকে কিনলে। আপনি চাইলে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম দিয়ে বা সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ থেকে যা যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত।
এই তো মোটামুটিভাবে জানলেন অনলাইনে চুলের প্রোডাক্ট কেনা নিয়ে কেমন সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত! আশা করছি, এই টিপসগুলো আপনাদের কাজে আসবে।
ছবি- সাটারস্টক