রোগ প্রতিরোধ সিস্টেমের একটা কৌশলী অংশ হলো ডায়েট। শীতে কম তাপমাত্রায় দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক নাজুক থাকে, তাই ঠাণ্ডা, কাশি, জ্বর লেগেই থাকে। যে খাবারগুলো আপনার শরীরকে এই শীতে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে তা নিয়ে এবারের লেখা।
০১. গাজরঃ
শীতে সহজলভ্য এবং বাচ্চাদেরও পছন্দের এই সবজিতে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন থাকে যা শরীরের অতি প্রয়োজনীয় একটি রোগ প্রতিরোধকারী উপাদান, ভিটামিন এ-এর উৎস। শুধুমাত্র একটি গাজরে আমাদের শরীরের নিত্য চাহিদার ১৭৫% ভিটামিন এ রয়েছে। স্যুপ, সালাদে আপনি ইচ্ছামতো গাজর খেতে পারেন। গাজর খেতে না চাইলে সবুজ শাকসবজি, মিষ্টি আলু খেতে পারেন। এসবেও বিটা ক্যারোটিন রয়েছে।
০২.গ্রীন টিঃ
গ্রীন টি যেকোনো চায়ের চেয়ে অনেক গুন বেশি উপকারী। এই চা নিজেই একটি শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, সেই সাথে এর দারুণ কার্যকরী অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ও অ্যান্টিভাইরাল গুনাগুণ রয়েছে। গ্রীন টি খেতে আপত্তি থাকলে আপনি মধু, লেবু ইত্যাদি ফ্লেভার মিশিয়ে খেয়ে দেখতে পারেন।
০৩.দইঃ
দই প্রোবায়োটিকের প্রাকৃতিক উৎস। প্রোবায়োটিক হলো যেসব ব্যাকটেরিয়া শরীরের জন্য উপকারী। এই ব্যাকটেরিয়াগুলো হজমে সহায়তা করে, খাদ্য ভেঙ্গে শরীরের জন্য শোষণযোগ্য পুষ্টি যোগায়, দেহের সর্বোচ্চ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিশ্চিত করে। যাদের দুধ হজমে সমস্যা হয়, তাদের জন্য দই একটি ভালো বিকল্প খাবার।
০৪.মাশরুমঃ
চীনা খাবার ছাড়া আমাদের সাধারণত মাশরুম খাওয়া হয়না। শীতকালীন সবজির সাথে মাশরুমও কেটে দিয়ে দিন। অন্যান্য উদ্ভিদের তুলনায় মাশরুমের গায়ে অনেক বেশি ব্যাকটেরিয়া থাকে। তাই মাশরুম খেলে আপনার শরীরের রক্ষাকারী কোষগুলো ঐ ব্যাকটেরিয়াগুলোর সামনে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, এটাকে বলতে পারেন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার একটা ট্রায়াল। এতে আপনার দেহ যেকোনো সময়ের চেয়ে রোগ আটকাতে বেশি প্রস্তুত থাকে। মাশরুমের আরেকটা বড় গুণ হলো এতে ক্যান্সাররোধী প্রাকৃতিক উপাদান আছে।
০৫.রসুনঃ
রসুন যে একটি গুণধারী মশলা, তা হয়তো আমরা অনেকেই জানি। রসুনের এনজাইম লেভেল বাড়ানোর ক্ষমতা আছে, এটি রক্ত থেকে বিষাক্ত পদার্থ নিঃসরণে সাহায্য করে যা বিশেষভাবে উন্নত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা নিশ্চিত করে। রসুন কেটে বা থেঁতো করে রান্নায় দেবার আগে কিছুক্ষণ খোলা বাতাসে রেখে দিন, তাতে এর এনজাইম বৃদ্ধির ক্ষমতা বাড়বে।
০৬. মধুঃ
প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল উপাদান আছে মধুতে যা এই শীতে জীবাণুর সাথে লড়তে সাহায্য করবে। কাশির জন্য মধু একটি প্রাকৃতিক ওষুধ হিসেবে পরিগণিত। প্রতি রাতে এক বা দুই চামচ মধু খেয়ে নিন, উপকার পাবেন। তবে মধু খাঁটি কিনা সে ব্যাপারটি খেয়াল রাখবেন। বাজারের অধিকাংশ মধুতে চিনি মিশ্রিত থাকে।
প্রচুর টাটকা শাকসবজি পাওয়া যায় শীতকালে। এই শীতে স্বাস্থ্যকর ডায়েট বাছুন, দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে সুস্থ থাকুন।
লিখেছেনঃ শান্তা সোহেলী ময়না
ছবিঃ ওয়ালকনভার্ট.কম