সাজুগুজু, মেকাপ কার না পছন্দ! কিন্তু মেকাপ করতে গিয়ে অনেক সময় অনেক ভুলভ্রান্তি হয়ে যায়, বিশেষ করে যখন আমরা তাড়াহুড়ো করে মেকাপ করি। কিন্তু মেকাপের মধ্যে কোথাও ভুল হয়ে গেলে কি আবার নতুন করে শুরু করবেন? মোটেই না! তাই মেকাপের মধ্যকার হয়ে যাওয়া ভুলগুলো কীভাবে চটজলদি সংশোধন করবেন, তা নিয়েই আজকে রয়েছে কিছু টিপস। চলুন জেনে নিই-
(১) ফাউন্ডেশন
ফাউন্ডেশন আমাদের মুখের খুঁতগুলো ঢেকে দেয়। কিন্তু এই খুঁতগুলো ঢাকতে গিয়ে আমরা প্রায়শই একগাদা ফাউন্ডেশন মুখে ব্যবহার করে ফেলি। যার ফলে মুখ কেকি, আন-ন্যাচারাল দেখা যায়। মেকাপ ফেটে ফেটে যায়। মুখে ফাউন্ডেশন অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়ে গেলে, তার সমাধানও রয়েছে।
[picture]
- একটি বিউটি স্পঞ্জ নিন। এটিকে পানি দিয়ে ভিজিয়ে নিন এবং অতিরিক্ত পানি চিপে ফেলে দিন। এ স্পঞ্জটি দিয়ে পুরো মুখের ফাউন্ডেশন আস্তে আস্তে চেপে চেপে ব্লেন্ড করুন। বিউটি স্পঞ্জগুলো ফাউন্ডেশন নিখুঁতভাবে ব্লেন্ড করে এবং মুখে যতটুকু ফাউন্ডেশন দরকার ততটুকু রাখে।অতিরিক্ত ফাউন্ডেশন স্পঞ্জে শুষে নেয়।
- এছাড়া ফাউন্ডেশন ব্যবহারে আর একটি ব্যাপার যেটি আমাদের প্রায়ই হয়। তা হলো, ভুল শেডের ফাউন্ডেশন মুখে ব্যবহার করা। ফাউন্ডেশন লাগানোর পর আপনার স্কিনের থেকে লাইট/ ডার্ক লাগলে, তার উপর আমরা আর একটু ডার্ক /লাইট ফাউন্ডেশন ব্যবহার করে স্কিনের কাছাকাছি শেড আনার চেষ্টা করি। এতে আমাদের স্কিন দেখতে অদ্ভুত লাগে। এজন্য সমাধান হলো, আপনার স্কিনের সাথে ম্যাচ করে ফেস পাউডার নিন এবং এটি ফাউন্ডেশন এর উপর ব্যবহার করুন। এতে আপনার ফাউন্ডেশনও আপনার স্কিনের সাথে ম্যাচ করবে এবং ন্যাচারাল লুক এনে দিবে।
(২) ব্লাশ
গালে সুন্দর আভা আনতে আমরা ব্লাশ ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু অনেক সময় যে ভুলটা হয় তা হলো অতিরিক্ত ব্লাশ ব্যবহার করে ফেলা। যা দেখতে অত্যন্ত বাজে লাগে।
- সবসময় একটি ব্লাশ ব্রাশে অল্প একটু ব্লাশ নিবেন এবং এক্সট্রা ব্লাশ ব্রাশ থেকে ঝেড়ে ফেলে দিবেন। তারপর তা গালে ব্যবহার করবেন এবং ব্লেন্ড করতে থাকবেন। এভাবে অল্প অল্প নিয়ে ব্যবহার করলে, গালে কতটা ব্লাশ ব্যবহার উচিত, তা বুঝতে পারবেন।
- যদি ব্লাশ অতিরিক্ত ব্যবহার করা হয়ে যায়, তবে একটু ট্রান্সলুসেন্ট সেটিং পাউডার ব্রাশে নিয়ে ব্লাশ যেখানে ব্যবহার করেছেন, সেখানে লাগান এবং ব্লেন্ড করে নিন। এতে ব্লাশের অতিরিক্ত কালারটা হালকা হয়ে যাবে।
(৩) আইশ্যাডো
চোখের পাতা দুটি সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা আমাদের বরাবরই পছন্দ। এজন্য আমরা আইশ্যাডো ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু অতিরিক্ত আইশ্যাডো দেয়া হলে সেই অতিরিক্ত কালার অনেক সময় দেখতে খারাপ লাগে।
- একটি পরিষ্কার ব্লেন্ডিং ব্রাশ নিন। এটি দিয়ে আইশ্যাডোগুলো ভালোভাবে ব্লেন্ড করতে থাকুন। এতে আইশ্যাডোর কালার হালকা হয়ে যাবে। এছাড়া , ব্লাশের ট্রিকসটিও এক্ষেত্রে কাজে দিবে।
(৪) আইলাইনার
আই মেকাপে আই লাইনার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। আই লাইনারের মাধ্যমে চোখ দুটি টানা টানা করে তোলা হয়। কিন্তু আইলাইনার দিতে গিয়ে অনেক সময় আইলাইনার ছড়িয়ে যায় অথবা যেমন করে লাইন আঁকতে চাচ্ছেন, তেমন করে হচ্ছে না।
- একটি কটন বাড মেকাপ রিমুভারে ভিজিয়ে নিন। এক্সট্রাটুকু টিস্যু পেপারে শুষে নিন। এবার কটন বাডটি দিয়ে খুব সাবধানে যেখানে লাইনার ছড়িয়ে গেছে, সেখানে হালকা চেপে চেপে লাইনার মুছে নিন। এরপর নতুন করে লাইনার লাগান।
(৫) মাশকারা
চোখ দুটিকে পটলচেড়া করে তুলতে মাশকারার তুলনা নেই। মাশকারা ব্যবহারের মাধ্যমে চোখের পাপড়ি গুলোকে ঘন এবং বড় করে তোলা হয়।
- কিন্তু মাশকারা লাগাতে গিয়ে প্রায়শই চোখের আশেপাশে মাশকারা লেগে যায়। এই সমস্যার সমাধানের জন্য, যেখানে মাশকারা লেগে গিয়েছে সেখানের মাশাকারা শুকাতে দিন। শুকিয়ে গেলে একটি কটন বাড মেকাপ রিমুভারে ভিজিয়ে জায়গাটির মাশকারা মুছে নিন।
- এছাড়াও আমরা যখন চোখের পাপড়িতে কয়েক কোট মাশকারা লাগাই, তখন দেখা যায় চোখের পাপড়িগুলো একসাথে জড়িয়ে গেছে। এই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে, একটি পুরোনো মাশকারার ব্রাশ নিন। এটি দিয়ে জড়িয়ে থাকা পাপড়িগুলো ব্রাশ করতে থাকুন এবং ছাড়িয়ে নিন। এখন থেকে, মাশকারা শেষ হয়ে গেলে ব্রাশটি আর ফেলে দিবেন না। সেটিকে পরিষ্কার করে ভালোভাবে শুকিয়ে রেখে দিন। এটি দিয়ে জড়িয়ে থাকা মাশকারা ছাড়িয়ে নিতে পারবেন।
(৬) লিপস্টিক
মেকাপের আর একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে লিপস্টিক। কিন্তু লিপস্টিক লাগাতে গিয়ে অনেক সময় দেখা যায় লিপস্টিক ছড়িয়ে গেছে।
- যেখানে লিপস্টিক ছড়িয়ে গেছে সেখানে হালকা মুছে নিয়ে একটুখানি কনসিলার লাগিয়ে ব্লেন্ড করে নিন। এছাড়া ব্যবহার করুন যেকোনো লুজ পাউডার। ঠোটের চারদিকে লুজ পাউডার লাগিয়ে নিন। এতে পরবর্তিতে লিপস্টিক ছড়িয়ে যাওয়ার হাত থেকে রক্ষা পাবেন।
এই তো জেনে নিলেন, কীভাবে মেকাপের ভুলত্রুটিগুলোকে সমাধান করে মেকাপ কে নিখুঁত করে তুলবেন। আশা করি আপনাদের টিপসগুলো অনেক হেল্প করবে।
ছবি – সেভেনথিমস ডট কম
লিখেছেন – জান্নাতুল মৌ