আমাদের শরীরের সমস্ত ভার আমাদের পা দুটো বহন করে। কিন্তু দিন শেষে দেখা যায় এই পা দুটোই সবচেয়ে অবহেলায় অযত্নে পড়ে আছে। সারাদিনের ঘরের কাজ হোক কিংবা দুই ঘন্টার ব্যায়াম অথবা ডেইলি একবেলা জোরে হাটার অভ্যাস সবকিছুতেই পায়ের উপর যথেষ্ঠ চাপ পড়ে। ফলস্বরূপ আমাদের পাও মাঝে মাঝে জবার দিয়ে বসে।
দিনের শেষে দেখা যায় ব্যাথায় আর পা চলছে না। আর এই সময় দেখা যায় আমরা চট করে একটা পেইন কিলার খেয়ে নিই যা একেবারেই উচিত না। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোন ঔষধ খাওয়া উচিত না। আর ছোট খাটো ব্যথাতেই আমরা যদি ঔষধ খাওয়া শুরু করি তাহলে আমাদের শরীরের নিজস্ব ইমিউন সিস্টেম আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাবে।
তাই বলে কি আমরা পায়ের ব্যাথায় কাতর হয়ে বসে থাকব? মোটেই না। প্রাচীনকাল থেকেই পায়ের ব্যথা দূর করার বেশ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি প্রচলিত আছে। আসুন আজ তেমন কিছু পদ্ধতি জেনে নিই।
তিলের তেল ও লবঙ্গ তেলের মালিশ
তিন টেবিল চামচ তিলের তেলের সাথে তিন ফোঁটা লবঙ্গ তেল মিশান। এবার এই তেল হালকা গরম করে পায়ের ব্যথাযুক্ত স্থানে ভালোভাবে মালিশ করুন। এটি পায়ের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি কর পায়ের ব্যথা উপশমে সাহায্য করে। দিনে অন্তত তিন বার এই তেলটি পায়ে মালিশ করুন। যদি আপনার কাছে লবঙ্গ তেল না থাকে তবে তিলের তেলের সাথে দুটি লবঙ্গ ফুটিয়ে নিয়ে তেলটি ঠান্ডা করে ব্যবহার করুন।
সর্ষে দানা
পায়ের ব্যথা দূর করতে সর্ষে দানা বহুদিন ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে এবং এটি ব্যথা দূর করার একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি। এক মুঠো সর্ষে দানা হামান দিস্তায় হালকা থেঁতো করে নিন। এবার এই সর্ষে দানাগুলো এক গামলা মোটামুটি গরম পানিতে ভিজিয়ে দিতে হবে। ওই পানিতে পা ডুবিয়ে বসে থাকুন ১৫ থেকে ২০ মিনিট। অল্পস্বল্প ব্যথায় এই পদ্ধতি বেশ কাজে দেয়।
ভিনেগার র্যাপ
নতুন জুতা পড়ার জন্য ব্যথা হলে এই ভিনেগার র্যাপ খুব কাজে দেয়। প্রথমে সমপরিমাণ ভিনেগার ও গরম পানি নিতে হবে। এই মিশ্রণে একটা তোয়ালে ভিজিয়ে নিঙরে নিতে হবে। এই তোয়ালে পায়ের ব্যথার উপর পেচিয়ে রাখতে হবে ৫ মিনিট। এরপর অন্য একটা পাত্রে সমপরিমাণ ভিনেগার ও ঠান্ডা পানি নিয়ে মিশাতে হবে। এই মিশ্রণে আবার তোয়ালে ভিজিয়ে নিঙরে নিয়ে পায়ের যে অংশে ব্যথা সে অংশে পেচিয়ে রাখতে হবে আরো ৫ মিনিট। এভাবে মোট তিনবার গরম ও ঠান্ডা ভিনেগারে ভেজানো তোয়ালে দিয়ে ভাপ নিতে হবে। ব্যথা কমে যাবে।
বরফ
পা মচকে ব্যথা পেলে বরফ খুব কাজে দেয়। আইস প্যাক আক্রান্ত স্থানে কিছুক্ষণ ঘষে নিন। ব্যাথা আস্তে আস্তে কমে যাবে। তবে ১০ মিনিটের বেশি বরফ ঘষা উচিত না। এই দিকটায় সতর্ক থাকবেন।
এসেনসিয়াল অয়েল
বিভিন্ন রকম এসেনসিয়াল অয়েল যেমন রোজমেরি অয়েল, পেপারমিন্ট অয়েল ইত্যাদি পায়ের ব্যথায় ভালো কাজে দেয়। মোটামুটি গরম পানিতে এসব তেল কয়েক ফোটা দিয়ে পা ডুবিয়ে রাখুন বেশ খানিকক্ষণ। এরপর একটা তোয়ালে দিয়ে পা মুছে ফেলুন। পায়ের ব্যথা কমে যাবে।
সতর্কতা
এসব ঘরোয়া টোটকা বা পদ্ধতিগুলো শুধুমাত্র ছোটখাটো সাধারণ পায়ের ব্যথায় কাজে দেবে। যদি আপনার পায়ের ব্যাথা পুরাতন হয় বা কোন অসুখের ফলে হয় তবে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করাই উত্তম।
ছবি – পিন্টারেস্ট ডট কম
লিখেছেন – সাদিয়া রিফাত ইসলাম