সব কাজ করার আগে ভেবে চিন্তা করে কাজ করতে হয় তা আমরা সবাই জানি, কিন্তু চিন্তা যখন দুশ্চিন্তা/অতিরিক্ত চিন্তায় রূপ নেয় তখন আসলেই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। কেননা অতিরিক্ত চিন্তা নিয়ে আসতে পারে নানা রকম সমস্যা।
যখন আমরা অতিরিক্ত চিন্তা করি তখন আমাদের সামনের সব কিছু ঘোলাটে মনে হয়, সঠিক সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারি না। নানা রকম নেতিবাচক চিন্তা ভাবনা মনে জায়গা করে নেয়। এতে স্বাভাবিক কাজ-কর্মে ব্যঘাত ঘটে। যদি আপনিও এই দলের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকেন তাহলে এর থেকে বাঁচার জন্য কিছু উপায় আপনার জন্য:
- সচেতনতাই বদলানোর প্রথম উপায়-
দুশ্চিন্তা বা অতিরিক্ত চিন্তা থেকে বাঁচার উপায় খোঁজার আগে প্রথমে নিজেকে বুঝতে হবে কখন এটা বেশি ঘটে। যখনই মনে হবে কোন ব্যপার নিয়ে আপনি অতিরিক্ত চিন্তায় মগ্ন আছেন, তখনই মূল ঘটনায় নিজেকে আগে বুঝতে হবে কোন পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়া হিসেবে আপনি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন। পরিস্থিতি বুঝে নিজেকে সামলানোর চেষ্টা করতে হবে।
- ভয়কে জয়-
অনেক ক্ষেত্রেই দেখা গিয়েছে অতিরিক্ত চিন্তার মূলে রয়েছে মূলত একটি অনুভূতি, আর তা হচ্ছে ভয়। যখনই আপনি কোন কিছু করার সময় ঐ কাজের মন্দ দিকগুলো বেশি বেশি চিন্তা করবেন আর ভাববেন একটি কথা ‘হতে পারে’, তাহলেই আপনি দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়বেন।এই ‘হতে পারে’ চিন্তাটি বেশিভাগ সময় আপনাকে নেতিবাচক চিন্তার দিকেই নিয়ে যাবে। সব কিছু করার সময় এর ভাল দিকগুলির দিকে বেশি খেয়াল রাখতে হবে।
- নিজেকে সুখী মানুষ ভাবা-
অনেক সময় নিজের মনকে সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবে ভাবাতে হবে। এতে কষ্টদায়ক ও দুশ্চিন্তার কারণ গুলোকে ভুলে থাকা যায়। শখের অথবা ভাল লাগার কিছু কাজ করা যেতে পারে যা আপনাকে অতিরিক্ত চিন্তাগ্রস্থ হবার সব কারনগুলোকে ভুলিয়ে দিতে পারবে, যেমন স্রষ্টাকে স্মরণ করা, ব্যয়াম করা, ড্রয়িং করা,প্রিয় কোন খেলায় মনোনিবেশ করা ইত্যাদি।
- পরিপূর্ণতা( perfection) লাভের জন্য অপেক্ষা করা-
অধিক চিন্তাগ্রস্থ করার পিছনে এটা সবচেয়ে বেশি কাজ করে। উচ্চাকাঙ্ক্ষী হওয়া ভাল কিন্তু কোন কিছুতে পরিপূর্ণতা লাভের জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করা, দুশ্চিন্তা করা বোকামি ছাড়া আর কিছুই না। সব কাজ পারফেক্টলি করার নেশায় অনেক সময় মন ভারাক্রান্ত হয়ে পরে, এটা খুবই ইম্প্রাকটিক্যাল। মানুষের কাজে কিছুটা ত্রুটি থাকতেই পারে,তাই সবকাজে পরিপূর্ণতার জন্য দুশ্চিন্তাকে কখনই প্রশয় দেয়া ঠিক না।
- চিন্তার জন্য সময় ভাগ করে নেয়া-
নিজের সমস্ত চিন্তার জন্য ৫ থেকে ১০ মিনিট সময় ধার্য করে নিতে হবে। এই সময়ে নিজের সমস্ত চিন্তা গুলো কাগজে লিখে এর উপর ছোট্ট একটু বিশ্লেষণ চালাতে হবে, কারণ ও সমাধানের উপায় খুজতে হবে। কিন্তু সময় শেষ হলেই কাগজ ও দুশ্চিন্তা দুটাকেই ঝেড়ে ফেলতে হবে।
- ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনা-
আমাদের মনে রাখতে হবে মানুষ কখনই নিজের ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে পারে না। আমাদের নিজেদের সাধ্যমত চেষ্টা করতে হবে এবং ভাগ্যের উপর বিশ্বাস রাখতে হবে। আর স্রষ্টা যা দিয়েছেন তাতেই সন্তুষ্ট থাকতে হবে এতে মনের তৃপ্তি আসে ও অধিক চিন্তা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
লিখেছেন – সারাহ
ছবি – ক্যানভেরা ডট কম