ইদানিং স্কিনকেয়ার নিয়ে কম বেশি সবাই সচেতন। নিজেকে সুন্দরভাবে প্রেজেন্ট করতে কে না চায়! তবে স্কিন প্রবলেম তো আমরা সবাই ফেইস করি, তার মধ্যে সবচেয়ে কমন হচ্ছে একনে। টিনেজ কিংবা ম্যাচিউর স্কিন, যেকোনো বয়সেই পিম্পলস প্রবলেম বা একনে হতে পারে। পিম্পলসের বিভিন্ন ধরন রয়েছে, আর এই ধরন না বুঝে ট্রিটমেন্ট করার কারণে ভয়াবহতা আরও বাড়তে পারে। তাই চলুন চিনে নেই ভিন্ন ভিন্ন ধরনের পিম্পলস এবং জেনে নেই এগুলোর স্পেসিফিক ট্রিটমেন্ট।
ধরন অনুযায়ী পিম্পল ট্রিটমেন্ট
পিম্পলস, এই ছোট্ট একটি জিনিস অনেকের লাইফে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। ব্রণ, একনে, ব্রেকআউটস যেই নামেই আপনি একে ডাকুন না কেন, আপনি কখনোই চাইবেন না আপনার ক্লিন ফেইসে এর কোনো প্রেজেন্স থাকুক! কিন্তু না চাইলেও জেনেটিক্যাল, হাই হিউমিডিটি, হরমোনাল ইস্যু আরও বিভিন্ন কারণেই পিম্পলস প্রবলেম হতে পারে। একেকজনের স্কিন টাইপ ও কনসার্ন আলাদা, আবার পিম্পলস এর ধরনও আলাদা আলাদা। সবকিছু মিলিয়েই আপনাকে সঠিকভাবে ট্রিটমেন্ট করতে হবে।
বাইরের ধুলাময়লা, মেকআপ প্রোডাক্ট এগুলো স্কিনের সেবাম আর ডেড সেলসের সাথে মিক্স হয়ে পোরস ব্লক করে দেয়। তখনই দেখা দেয় পিম্পলস! আবার কিছু ব্যাকটেরিয়ার কারণেও বডির বিভিন্ন জায়গায় ব্রণ দেখা দেয়। কপাল, থুতনি, পিঠ আর বুকে একনে হওয়ার চান্স বেশি থাকে। যে এরিয়াগুলোতে অয়েল গ্ল্যান্ড বেশি থাকে, সেখানেই পিম্পলস এর উপদ্রব হয়। চলুন বিভিন্ন ধরনের পিম্পলস চিনে নেই।
১) হোয়াইটহেডস
আচ্ছা, আপনার কি জানা ছিলো যে হোয়াইটহেডস এক ধরনের একনে? এটি আসলে নন ইনফ্ল্যামেটরি একনে অর্থাৎ কোনো পেইন হয় না। ছোট ছোট সাদা বাম্পস দেখা যায় স্কিনে যখন সেবাম আর ডেড সেলস পোরস ক্লগ করে ফেলে। এক্ষেত্রে পোর হেডস বন্ধ থাকে বলে একে closed comedones বলে।
২) ব্ল্যাকহেডস
হোয়াইটহেডস এর মতো ব্ল্যাকহেডসও স্কিনের পোরস ক্লগ হয়ে তৈরি হয়। এক্ষেত্রে পোর হেডস খোলা থাকে বলে একে open comedones বলে। ব্ল্যাকহেডস দেখতে কালো দানাদার হওয়ার পেছনে কারণ হচ্ছে এর পোর হেডস ওপেন থাকার কারণে বাতাসের সংস্পর্শে এসে ডার্ক কালার হয়ে যায়। এই দু’টি খুবই কমন, স্পেশালি নোস ও চিন এরিয়াতে দেখা যায়।
কীভাবে কিওর করবেন?
এটা আপনি নিজেই খুব সহজে রিমুভ করতে পারেন নোস পোরস স্ট্রিপস দিয়ে। এছাড়া চারকোল মাস্ক, ক্লে মাস্ক এগুলোও খুবই হেল্পফুল হোয়াইটহেডস আর ব্ল্যাকহেডস ক্লিন করতে। আপনার স্কিনকেয়ার রুটিনে যদি স্যালিসাইলিক অ্যাসিড যুক্ত প্রোডাক্ট থাকে, তাহলে সেটাও হোয়াইটহেডস আর ব্ল্যাকহেডস কন্ট্রোল করবে। তবে অনেকেই পপ করে রিমুভ করার ট্রাই করে থাকেন, এতে স্কার হয়ে যেতে পারে, তাই পপ না করাই বেটার।
৩) Papules
এবার আসি ইনফ্ল্যামেটরি একনের বিষয়ে। স্মল পিংক বাম্পস এর মতো দেখতে Papules, মূলত এটাকেই আমরা পিম্পলস বলি। যখন ডেড সেলস আর এক্সেস অয়েল এর সাথে ব্যাকটেরিয়া কম্বাইন হয়, তখনই লালচে বাম্পি একনে ফর্ম হয়ে ইনফ্ল্যামেশন হয়। এটা টাচ করলে সফট ফিল হয়। নিশ্চয় এখন বুঝতে পারছেন Papules কোনগুলো।
৪) Pustules
এটি হচ্ছে আরেক ধরনের ইনফ্ল্যামেটরি একনে। দেখতে Papules এর মতো মনে হলেও ডিফারেন্স হচ্ছে এর পোর হেডস সাদা অথবা হলুদ হয়ে থাকে। আর বাকি এরিয়া রেডিশ স্মল বাম্পস এর মতো দেখতে। ব্লকড পোরস ইনফেকটেড হলে সেটা Pustules এ রূপ নেয় আর পুঁজ দিয়ে পূর্ণ থাকে। কখনও কখনও একসাথে অনেকগুলো একনে দেখা দেয়।
ইনফ্ল্যামেটরি একনের ট্রিটমেন্ট কী?
বেনজোল পারঅক্সাইড Papules বা Pustules এর মতো ইনফ্ল্যামেটরি একনে কিওর করার জন্য খুবই ইফেক্টিভ। একনে ফাইটিং ইনগ্রেডিয়েন্ট হিসাবে এই উপাদানটি খুবই জনপ্রিয়, কারণ এটি ব্যাকটেরিয়া কিল করে এবং ডেড স্কিন সেলস রিমুভ করে। ফেইসে ব্যবহারের জন্য ১-৪% পারসেনটেজ বেনজোল পারঅক্সাইড যুক্ত প্রোডাক্ট বেছে নিন। তবে একজিমা অথবা স্কিন ডিজিজ থাকলে এই উপাদানটি এড়িয়ে চলবেন। এছাড়া ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর বাদ দিয়ে আপনাকে বেছে নিতে হবে মাইল্ড কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর।
৫) Nodules
এবার আসি সিভিয়ার একনের ব্যাপারে। যখন ক্লগড পোরস আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে, তখন ইরিটেশন ও পেইন বাড়তে থাকে। সলিড বাম্পস টাইপের দেখতে একনেগুলোকে বলা হয় Nodules।
৬) Cysts
Nodules এর থেকে সাইজে বড় হয় এগুলো। ইনফেকশন থেকে হয় বলে এই ধরনের একনে কিওর হতে টাইম লাগে। বাম্পস টাচ করলে পেইন হয় আর ভেতরে পুঁজ থাকে। এক কথায় সিভিয়ার টাইপের একনে এগুলো।
এই ধরনের পিম্পলস প্রবলেম এর সল্যুশন কী?
যেহেতু এই একনে থেকে স্কিনে ডিপ স্কারস হতে পারে, তাই ঘরে বসে এর সল্যুশন পাওয়া যাবে না। অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। আর একটা বিষয়, ব্রণ কখনোই পপ করবেন না। তাহলে কিন্তু জার্ম ছড়িয়ে যাওয়ার চান্স থাকে। এতে পিম্পলস প্রবলেম তো কমবেই না, উল্টে আপনার স্কিন কন্ডিশন আরও খারাপ হবে।
তাহলে ৬টি ডিফারেন্ট টাইপের একনে নিয়ে তো জানা হলো। এখন নিশ্চয় আপনারাও নিজেরা একনের টাইপ আইডেন্টিফাই করে সেভাবে ট্রিটমেন্ট করাতে পারবেন। অনলাইনে অথেনটিক প্রোডাক্ট কিনতে পারেন শপ.সাজগোজ.কম থেকে অথবা সাজগোজের ফিজিক্যাল শপ- যমুনা ফিউচার পার্ক, মিরপুরের কিংশুক টাওয়ার, ওয়ারীর র্যাংকিন স্ট্রিট, ইস্টার্ন মল্লিকা, বসুন্ধরা সিটি, বেইলি রোডের ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার, উত্তরার পদ্মনগর (জমজম টাওয়ারের বিপরীতে), সীমান্ত সম্ভার, চট্টগ্রামের খুলশি টাউন সেন্টার থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার পছন্দের প্রোডাক্টটি।
ছবি- সাজগোজ, সাটারস্টক