সৌন্দর্য বর্ধনে চুল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা কোন সময় কেমন কিংবা কোন পোশাক বা কোন মেকআপ-এর সাথে কেমন হেয়ার স্টাইল করতে হবে বুঝতে পারি না। কোঁকড়া চুল হলেতো সে বিড়ম্বনা যেন দ্বিগুণ হয়ে যায়। তবে আপনি জানেন কী, প্রাকৃতিক উপায়ে হেয়ার স্টাইল করতে গেলে কোঁকড়া চুলের ফায়দা সবচাইতে বেশি? আপনি যদি পার্লার থেকে হেয়ার স্টাইল করে অভ্যস্ত থাকেন তবে জানবেন যে বেশির ভাগ পার্লার-এই সোজা চুলে ব্লো-ড্রাই করে কার্লি একটা ভাব আনা হয়। তাই সেই দিক বিবেচনায় আপনি সৌভাগ্যের অধিকারী যে আপনার চুল প্রাকৃতিক কার্লি। এবার আসুন জেনে নেই কেমন হওয়া উচিত কার্লি চুলের স্টাইল ।
কার্লি হেয়ার স্টাইল
১. কার্লি পনিটেইল
সবচেয়ে সহজ ও প্রচলিত হেয়ার স্টাইল হচ্ছে পনিটেইল। সব বয়সের মেয়েদেরকেই পনিটেইল-এ মানিয়ে যায় সহজেই। আর এতে সময়ও লাগে কম। তাই যখন তখন, ঝটপট করে নিতে পারেন পনিটেল স্টাইলটি! স্কুল, কলেজ, ভার্সিটি, শপিং, পার্টি সব খানেই মানানসই এ স্টাইলটি। এ স্টাইল-এর আরো একটি সুবিধা হচ্ছে যদি হঠাৎ করেই কোন কারণে আপনার বেঁধে নেওয়া পনিটেইলটি খুলে যায় তবে তা দ্বিতীয় বারে করে নিতে পারবেন খুব সহজেই, নিজে নিজে।
এ স্টাইলটি করতে প্রথমেই আঙ্গুলের সাহায্যে শুকনো চুলের জট ছাড়িয়ে নিন। এবার চিরুনি নিয়ে চুলগুলো আঁচড়ে উপরের দিকে উঠিয়ে ঘুরিয়ে ফেলুন। কিছুটা এলোমেলোভাবে একত্র করে ক্লিপ /কাঁটা দিয়ে আটকে হেয়ার স্প্রে দিয়ে সেট করে নিন। আপনার চুল যদি বেশি কার্লি ও ওয়েভি হয় তবে স্প্রে না করলেও হবে। ব্যাস হয়ে গেল কার্লি পনিটেইল স্টাইল-টি!
২. ওয়ান সাইড কার্লি স্টাইল
মোটামুটি আকারের চুলে এ ধরণের স্টাইলটি বেশি যায়। তবে সব ধরণের চুলেই করা সম্ভব। এ জন্য শুরুতেই শাইনি কোন সেরাম দিয়ে চুলটাকে প্রস্তুত করে নিন। (বাজারে অনেক রকম সেরাম কিনতে পাওয়া যায়; যেমন – লিভন, স্ট্রিক্স ইত্যাদি) তারপর হালকা আঁচরে এক পাশ করে এনে আটকে দিন। ক্যাজুয়াল ড্রেসের সাথে এই স্টাইল দারুন মানিয়ে যায়।
৩. টেক্সচারড পিক্সি
এ জাতীয় স্টাইল-টি বব কাট বা একদম ছোট চুলের জন্য বেশি উপযোগী। এতে অনেক সুন্দর একটা মেসি লুক আসে। অনেকে পার্লার থেকে এই হেয়ার কাট দিয়ে থাকেন। যাদের চুল একদমই স্পাইরাল, বড় হতে চায় না, তারা বব কাট করে রাখতে পারেন। তবে আমাদের দেশে এটার প্রচলন একদমই কম। আফ্রিকান দেশগুলোতে জিনগত কারনে ওদের চুল একদম স্পাইরাল, সেখানে এই স্টাইল সচরাচর দেখা যায়।
৪. কার্লি হেয়ার স্টাইল কার্লি বব
কার্লি চুলে বব কাট বেশ ভাল মানিয়ে যায়। বব কাট চুলে জেল বা সেরাম দিয়ে চুলের ফ্রিজিনেসটা দূর করতে পারেন। চুলের কন্ডিশনিং করা যেন মিস না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে চুলের অতিরিক্ত ফোলা ভাব কমবে এবং সফট একটা লুক দেবে। তারপর মোটা ব্রিস্টল-এর একটা ব্রাশ বা কাঠের চিরুনি দিয়ে হালকা হাতে চুলটা একটু ব্রাশ করে নিন। এমনিতেই মেসি লুকে সুন্দর লাগবে।
৫. কার্লি হেয়ার স্টাইল এ ক্যাজুয়াল লুক
কার্লি চুল স্বাভাবিক খোলা অবস্থাতেও অনেক গর্জিয়াস লাগতে পারে। সুন্দরমত সঠিক নিয়মে চুল পরিষ্কার (শ্যাম্পু ও কন্ডিশনিং) করে চুলকে শুকিয়ে নিন। চুল যদি বেশি ফ্রিজি হয় তবে সেরাম ব্যবহার করতে পারেন। এখন সাধারণভাবে চুলটাকে আঁচড়ে নিন। আপনি তৈরি হয়ে গেলেন আউটিং-এর জন্য, দেখবেন সবার নজর আপনার চুলেই আটকেছে। নিয়ম করে চুলে যত্ন নিলে চুলের শাইনিভাব থাকবে। তখন খোলা চুলে বেশ ভালোই লাগবে আপনাকে!
৬. ভলিউমাইজড কার্লস
অনেকেরই চুলের ঘনত্ব থাকে অনেক বেশি। আপনার চুলের পুরুত্ব বেশি না থাকলেও তেমন ক্ষতি নেই, চাইলেই আপনিও ভলিউমাইজড কার্লস করতে পারবেন আপনার কার্লি চুলের দিয়েই। চাইলে ব্যাক ব্রাশ করে নিতে পারেন। চুল মাথার সামনের দিকে নিয়ে আসুন, এবার উল্টা দিকে ব্রাশ বা চিরুনি দিয়ে খানিকক্ষণ আঁচড়ে নিন। এইতো হয়ে গেল ভলিউমাইজড কার্লস! এই টিপস ফলো করে দেখুন।
৭. লম্বা কার্ল
অনেকেরই অভিযোগ রয়েছে যে, কার্লি চুল সহজে লম্বা হয় না। তবে আপনি যদি সে সব সৌভাগ্যবানদের একজন হয়ে থাকেন যার চুল কার্লি হওয়ার পরেও লম্বা তবে অতি সহজেই এই স্টাইল-টি বেছে নিতে পারেন। এ জন্য প্রথমেই সমস্ত চুলকে দুই ভাগে ভাগ করে নিন। মানে এক দম মাঝ বরাবর সিঁথি করে নেবেন। চাইলে সামনের চুলগুলো স্ট্রেইনার দিয়ে টেনে নিন, নিচের অংশ কোঁকড়ানো থাকুক! বা হেডব্যান্ড দিয়ে সামনে সেট করে পেছনের চুল খোলা রাখুন। বা সামনের চুল সেকশন করে পাফ করে নিন, বাকিটা ছাড়াই থাকবে। হয়ে গেল সহজ কিন্তু অভিনব একটি হেয়ার স্টাইল!
অনেক সহজ, ঝামেলা ও পরিশ্রমহীনভাবে ঘরে বসেই এ স্টাইলগুলো চেষ্টা করে দেখতে পারেন। আশা করি আপনার স্টাইলটি ভীড়ের মাঝেও আপনাকে মধ্যমণি করে তুলতে সক্ষম হবে।
ছবিঃ সংগৃহীত – Shutterstock