শিশুদের ওজন নিয়ে বাবা-মায়ের চিন্তার কমতি নেই। শিশুর ওজন বাড়াতে খাবার তালিকায় কী ধরনের খাবার রাখবেন? শিশু খাবার খেতে চায় না, দিন দিন রোগা হয়ে যাচ্ছে – শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে এমন অভিযোগ প্রায় সব মায়েদের। সেক্ষেত্রে; শিশুর ওজন বৃদ্ধির জন্য খাবার তালিকায় কয়েকধরণের খাবার অবশ্যই অ্যাড করতে হবে।
আজকাল মায়েরা সবথেকে বেশি যে সমস্যার সম্মুখীন হয় তা হচ্ছে; শিশু খেতে চায় না! মায়েদের এই সমস্যার সমাধান করে দেবে আজকের এই ফিচার। এমন কিছু খাবার আছে যা শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। আসুন জেনে নেওয়া যাক শিশুর ওজন বৃদ্ধির উপায় হিসেবে কোন কোন খাবারগুলো সহায়ক তা নিয়ে বিস্তারিত।
শিশুর ওজন বৃদ্ধির উপায়
শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে মায়েদের চিন্তার শেষ নেই। আজকাল মায়েদের চিন্তার সবচেয়ে বড় কারণই হচ্ছে শিশুর ওজন। ওজন কখনো বৃদ্ধি পাচ্ছে কখনো আবার কমে যাচ্ছে। শিশুর বয়সের সাথে সাথে সঠিক ওজন থাকছে কিনা তা লক্ষ্য রাখা খুবই প্রয়োজন। কিভাবে কোন খাবারগুলো শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক তা জানলেই শিশুর সঠিক পরিচর্যা করা সম্ভব। আজকে আমরা আপনাদের জানাবো কিভাবে কোন খাবারগুলো শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সহায়ক। চলুন জেনে নেই শিশুর খাবারের সঠিক তালিকা।
(১) দুধ
শিশুদের ওজন বৃদ্ধিতে দুধ একটি আর্দশ খাবার। এক বছর থেকে শুরু করে বড় বাচ্চাদের গরুর দুধ দিতে পারেন। প্রাকৃতিক প্রোটিন (protein) এবং কার্বোহাইড্রেটের (carbohydrate) প্রধান উৎস হচ্ছে দুধ। প্রতিদিন শিশুকে দুই গ্লাস দুধ খাওয়ানো শিশুর স্বাস্থের জন্য উপকারী। কিন্তু আজকাল শিশুরা দুধ খেতেই চায় না। তাই দুধকে বিভিন্নভাবে তৈরি করে যেমন সর, ক্রিম ইত্যাদি বিভিন্ন খাবারে যুক্ত করে খাওয়াতে পারেন। মনে রাখতে হবে; শিশুর সঠিক বিকাশ ঘটাতে দুধের বিকল্প নেই। তাই শিশুর প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় দুধ অবশ্যই থাকতে হবে।
(২) ডিম
প্রোটিনের উৎস হিসেবে ডিমের কথা আমরা সবাই জানি। প্রতি ১০০ গ্রাম ডিমে প্রায় ১৪ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। আর শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে প্রোটিনের ভুমিকা অপরিসীম। তাই শিশুর প্রতিদিনের খাবারে ডিম রাখুন। একটি ডিম প্রোটিন, ভিটামিন, মিনারেল, সবকিছুর চাহিদা পূরণ করে থাকে যা শিশুর ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। শিশুর বাড়তি শরীরে যেন সঠিক কার্বোহাইড্রেট পৌঁছায় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। আর ডিম কার্বোহাইড্রেটের প্রধান উৎস। তাই শিশুর খাবারের তালিকায় ডিম অপরিহার্য।
(৩) মাখন
মাখন স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের অন্যতম উৎস। বড়দের মাখন খাওয়ায় কিছুটা সাবধান থাকতে হলেও শিশুদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। ওজন বৃদ্ধির জন্য শিশুর প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় মাখন রাখুন। তা হতে পারে মাখন রুটি বা অন্যকিছু। এটি দ্রুত শিশুর ওজন বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে।
(৪) মিষ্টি আলু
মিষ্টি আলু শিশুকে ছয় মাস বয়সের পর থেকে দিতে পারেন। পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিনের সমৃদ্ধ এই খাবারটি দ্রুত শিশুর ওজন বৃদ্ধি করে।
(৫) কলা
ছয় মাস বয়সের পর থেকে শিশুকে কলা দেওয়া যেতে পারে। কলায় প্রচুর পরিমাণ ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি ৬ রয়েছে যা শিশুর শরীরের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
(৬) মুরগির মাংস
প্রোটিনের অন্যতম একটি উৎস হলো মুরগির মাংস। এটি পেশি মজবুত করে শিশুর ওজন বৃদ্ধি করে। তবে প্রতিদিন খাদ্য তালিকায় মুরগির মাংস না রেখে মাছের পাশাপাশি সপ্তাহে এক দুই দিন মুরগির মাংস রাখুন।
(৭) অ্যাভোকাডো
ওজন বৃদ্ধির জন্য এই ফলটি বেশ কার্যকর। এতে ফ্যাট, ক্যালোরি সবকিছু একসাথে পাওয়া যায়। এর পুষ্টি উপাদান ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। দ্রুত ফল পেতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় অ্যাভোকাডো রাখুন। স্বাদবিহীন বলে বাচ্চারা খেতে চাবে না ফলটি, কিন্তু একটু টেস্টি করে তৈরি করলে আগ্রহ ভরে খেতে চাইবে।
শিশুর ওজন বৃদ্ধির জন্য খাবার তালিকায় রাখবেন এই ৭টি ফুডস। আশা করি মায়েরা তাদের শিশুদের ওজন বৃদ্ধি নিয়ে যে চিন্তা করে থাকে তার কিছুটা হলেও সমাধান হবে। আর আগামীতে আমরা এ নিয়ে আরো আলোচনা করব; সবাই সুস্থ থাকবেন।
ছবি – সংগৃহীতঃ সাটারস্টক