শুধু বড় চুল মানেই যে সুন্দর, এই ধারণাটা কিন্তু ভুল। নিয়মিত পরিচর্যা করে ছোট বা মাঝারি চুলকেও নজরকাড়া করে তোলা সম্ভব। দুঃখজনক হলেও কথাটা সত্য যে, আমরা তখনই চুলের পরিচর্যা শুরু করি যখন আমাদের চুলের সমস্যা প্রখরভাবে দেখা দেয়। কিন্তু সমস্যা শুরু হবার আগে থেকেই নিয়মিত রুটিন মাফিক চুলের যত্ন নিলে খুশকি, নির্জীবতা এবং চুল পড়ার মত সমস্যাগুলো এড়ানো সম্ভব। আসুন আজকে আমরা জেনে নেই কীভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন নিশ্চিন্ত করা সম্ভব।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন নিশ্চিন্ত করতে চাচ্ছেন?
কিভাবে ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন নিশ্চিন্ত করবেন তা ভাবছেন তো? চলুন জেনে নেওয়া যাক…
১. তেল
চুলের যত্নে তেলের কোন বিকল্প নেই। ভালো চুল পেতে হলে সপ্তাহে ৪ দিন আপনাকে চুলে তেল দিতে হবে। চেষ্টা করুন রাতে ঘুমানোর আগে তেল দেয়ার। নারিকেল তেলের পাশাপাশি আমন্ড অয়েল, ক্যাস্টর অয়েল, তিল তেল এগুলো মিশিয়ে চুলে দিবেন। ক্যাস্টর অয়েল নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। সপ্তাহে ১ দিন চুলে অবশ্যই হট অয়েল মাসাজ করবেন।
২. চুল বাঁধা
চুল দরকার হলে ছাড়া না রাখাই ভালো। এতে চুলকে দূষণ এর হাত থেকে বাঁচানো যায়। গোসলের পর চুল শুকিয়ে ভালো ভাবে বেণি বা খোপা করে রাখুন। বাইরে বের হলে স্কার্ফ ব্যবহার করুন। মনে রাখবেন অতিরিক্ত তাপ বা ঠাণ্ডা দুটোই কিন্তু চুলের পক্ষে ক্ষতিকর। তাই রোদে বের হলে ছাতা ব্যবহার করুন এবং এয়ার কন্ডিশন রুমে অনেকক্ষণ থাকা থেকে বিরত থাকুন।
ঘরোয়া পদ্ধতিতে চুলের যত্ন নিশ্চিন্তে ৭টি হেয়ার মাস্ক
চুলের পুষ্টি নিশ্চিত করতে কিছু ঘরোয়া মাস্ক নিয়ে চলুন জেনে নেই, যেগুলো খুবই সহজলভ্য এবং নিয়মিত ব্যবহার করলে চুলের সমস্যা দূর হয়।
১. ডিম চুলের যত্নের একটি অনন্য উপাদান। সপ্তাহে ২ দিন না হলে অন্ততপক্ষে ১ দিন চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী ডিম ফেটিয়ে চুলে দিয়ে ৪৫ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন শ্যাম্পু দিয়ে। তারপর, প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে এক মগ পানিতে ২/৩ চা চামচ ভিনেগার মিশিয়ে চুলে দিয়ে ২ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন।
২. যারা চুলের কালার এবং পুষ্টি দুটোই চান, তারা মেহেদি পাতা বাটা এবং ৪ চা চামচ কফি পাউডার মিশিয়ে চুলে এক ঘণ্টা রেখে ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু করবেন না ঐদিন।
৩. মাথায় খুশকি বা ফুসকুড়ি থাকলে নিমপাতা ও মেথি একসাথে বেটে সপ্তাহে ২ দিন লাগালে খুব তাড়াতাড়ি ফল পাবেন।
৪. চুল সিল্কি করতে চাইলে ডিম ফেটিয়ে তাতে লেবুর রস মিশিয়ে আধা ঘণ্টা রেখে শ্যাম্পু করে ফেলুন। তাছাড়া ডিম এবং মধুর মাস্ক চুলের ভলিউম বাড়াতে সাহায্য করে।
৫. মাথার তালু ঠাণ্ডা রাখার একটি অব্যর্থ উপাদান হলো অ্যালোভেরার শাঁস বা জুস। এর সাথে সামান্য লেবুর রস মিশিয়ে মাথায় ৩০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলবেন।
৬. পেঁয়াজের রস চুল গজাতে সাহায্য করে। ১৫ দিনে ১ বার মাথার তালুতে তুলোয় করে পেঁয়াজের রস লাগাবেন।
৭. যারা কেমিক্যাল-যুক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার করতে চান না, তারা রিঠা সারা রাত ভিজিয়ে রেখে পরদিন সেটার পানি ছেঁকে শ্যাম্পুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
এ তো গেল চুলের বাইরের যত্নের কথা। ভালো চুল পেতে হলে খাওয়া দাওয়াতেও নিয়ম মেনে চলতে হবে। প্রোটিন যেমন মাছ, ডিম এবং ক্যালসিয়াম যুক্ত খাবার চুলের জন্য ভালো। শাক সবজি এবং ফল ও খেতে হবে প্রচুর। পেটের সমস্যা থেকে অনেক সময় চুল পড়ে, তাই সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হেয়ার ড্রায়ার, আয়রন মেশিন, কারলার, স্প্রে, হেয়ার চক, হেয়ার কালার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। ডক্টর এর সাথে আলোচনা করে ভিটামিন বা আয়রন সাপ্লিমেন্ট খাওয়া যেতে পারে।
চুলের যত্নে আপনাদের আজ কিছু ঘরোয়া উপাদানের নাম তো বললাম। এবার চলুন দেখে নেওয়া যাক সুস্থ ও মজবুত চুল পেতে শপ সাজগোজ-এর কিছু অথেনটিক পোডাক্টস…
ছবি – সংগৃহীতঃ Shutterstock