জীবনে চলার ক্ষেত্রে প্রতিটা কাজকে সহজ করার জন্য অনেক ধরনের হ্যাকস ব্যবহার করা হয়। এতে সময় ও শ্রম দুটোই কমে। আজ সেরকমই ৭টি কিচেন হ্যাকস সম্পর্কে আপনারা জানবেন। চলুন দেখে নেয়া যাক।
জীবনকে সহজ করে তুলতে কিচেন হ্যাকস
১. পানি-লবণ-চিনি
সারা দিন না খেয়ে থাকলে অথবা পর পর কয়েক দিন সকালের নাস্তা বাদ দিলে আমাদের অনেক সময় গ্যাস-এর সমস্যা হতে পারে। যদি কারও এই সমস্যা হয় বা খাবার হজম হতে না চায় তবে ১ গ্লাস পানির সাথে একটু লবণ ও একটু চিনি মিশিয়ে খেয়ে নিবেন। এটি খুব দ্রুত খাবার হজম করতে সাহায্য করবে।
২. তেজপাতা
তেজপাতা খুবই সামান্য একটা মশলা জাতীয় খাবার। কিন্তু এর রস খুবই উপকারী। মাইগ্রেন-এর ব্যথা তাছাড়া কোথাও আগুনে পুড়ে গেলে তেজপাতার রস ব্যথা উপশমে কাজ করে থাকে। তেজপাতাতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, খনিজ উপাদান, এবং ফলিক এসিড। তেজপাতার এতো গুণ সম্পর্কে কি আমরা জানতাম?
৩. রসুনের গুণাগুণ সম্পর্কে জানেন কি?
১) রসুন ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে
২) কৃমি থেকে পরিত্রাণ পেতে সাহায্য করে
৩) রক্তচাপ কমাতে সাহায্য করে
৪) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
৫) কোলেস্টেরল কমাতে ও ফাঙ্গাস দূর করতে সাহায্য করে
৬) ঠাণ্ডা কাশির প্রবনতা কমায়
৭) কানের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে
৪. শাক সবজি হিমায়িতকরণ
আমরা অনেকেই জানি না যে শাক সবজি হিমায়িত করার সঠিক পদ্ধতি কী। সঠিক নিয়মে শাক সবজি হিমায়ন করলে তা অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। সাধারণ পদ্ধতিতে শাক সবজি হিমায়িত করতে নিম্ন লিখিত ধাপ মেনে চলতে হয়-
১) আকৃতি, বর্ণ, পরিপক্কতা ইত্যাদির উপর ভিত্তি করে শাক সবজি বাছাই করা হয়।
২) পরিষ্কার পানিতে ধোয়া হয় এবং ছোট ছোট টুকরা করা হয়।
৩) প্রায় ৫ মিনিট ফুটন্ত পানিতে রেখে ব্ল্যাঞ্চিং (ফুটানো) হয়।
৪) এরপর ০.২৫% কেএমএস (KMS) দ্রবণে ১০ মিনিট ডুবিয়ে রেখে পানি থেকে তুলে নিয়ে পানি ঝরিয়ে ফেলা হয়।
৫) পলিথিন ব্যাগে প্যাক করে ডিপ ফ্রিজ-এ রাখা হয়।
৬) এই ভাবে সবজি সংরক্ষণ করলে অনেক দিন পর্যন্ত শাক সবজি ভালো থাকে।
৫. সবুজ শাক সবজি
সবুজ শাক সবজি খুব উপকারী চুল এবং ত্বকের জন্য। পালং শাক এবং ফুলকপিতে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি এবং ভিটামিন ই,যা আপনার স্ক্যাল্প ভালো রাখে এবং চুলের গোঁড়া মজবুত করে। সেই সাথে ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতেও সবুজ সবজি খুবই উপাদেয়।
৬. মাইগ্রেন পেইন কমানো
মাইগ্রেন এর ব্যথার সাথে ডায়েট এর সম্পর্ক আছে। একটু সঠিক নিয়মে খাবার গ্রহণ করলেই এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। যাদের মাইগ্রেন-এর সমস্যা আছে তারা যখন বাইরে যাবেন তখন বাসায় করা স্যালাইন, পানির সাথে একটু চিনি অথবা মধু, একটু লবণ, মিশিয়ে খেয়ে যাবেন এবং এসে আরও ১ গ্লাস খাবেন। এতে অনেক উপকার পাবেন। তাছাড়া কখনো খালি পেটে থাকবেন না। খালি পেটে থাকলে ব্যথা আরও বেড়ে যায়। লাল রঙের সবজি খেয়েও অনেক উপকার পাবেন। যেমন- গাজর, টমেটো ইত্যাদি।
৭. ভাত খাওয়া
অনেকেই ভাবেন বেশি ভাত খেলে মোটা হওয়ার প্রবণতা থাকে। অনেকেই আবার ডায়েট থেকে একেবারেই ভাত বাদ দিয়ে দেন। এ দুটোই ভুল ধারণা। কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট (Complex carbohydrate) জাতীয় খাবার হওয়ায় ভাত সহজেই হজম হয়। ১০০ গ্রাম ভাতে আছে ১০০ ক্যালরি। পরোটা ও রুটির তুলনায় ভাতই ভালো। তবে ওজন, উচ্চতা ও বয়স অনুযায়ী ভাতের পরিমাণের রকমফের হবে। ফ্যাট এর পরিমাণ ভাতে খুব কম মাত্র ০.৪ গ্রাম। আটার রুটির প্রায় সমান ক্যালরি ভাতে। ভাতে Niacin, vitamin-D, calcium, fiber, thiamin ও Riboflavin যথেষ্ট পরিমাণে রয়েছে। ভাতে Cholesterol ও Sodium নেই। তাই Hypertension-এ যারা ভুগছেন তারা ভাত খেতে পারেন। পেটের সমস্যা থাকলে ভাত খান। কারণ ভাতে Gluten নাই।
জেনে নিলেন ৭টি প্রয়োজনীয় কিচেন হ্যাকস নিয়ে। এই হ্যাকসগুলো মেনে কিচেনের কাজ আরও ইজিলি করতে পারবেন। সময় বাঁচবে, মনও ভালো থাকবে।
ছবি- সাটারস্টক