যখন মন চাচ্ছে তখন চুল কালার করছেন কিংবা ব্লো ড্রাই করছেন। এর সাথে চুল স্ট্রেইট করা তো আছেই। চুলের উপর এতকিছু করে চুলের শুধু ক্ষতি করছেন, আর কিছু নয়। প্রতিদিন চুল স্ট্রেইট করা, ব্লো ড্রাই করা চুলের গোড়াকে নরম করে দেয়। যার কারণে চুল পড়া বৃদ্ধি পায় বহুগুণ। এছাড়া ঘন ঘন চুল রঙ করাও চুলকে করে তোলে রুক্ষ শুষ্ক প্রাণহীন।
চুলে প্রাণ এনে দেয় তেল। যদিও অনেকে চুল চিটচিটে হয়ে যাওয়ার ভয়ে তেল দিতে চান না। কিন্তু একমাত্র তেলই পারে আপনার রুক্ষ চুলে প্রাণ এনে দিতে। পার্লারের বেশ পরিচিত একটি হেয়ার ট্রিটমেন্ট হলো হট অয়েল ট্রিটমেন্ট। আপনি চাইলে আপনি নিজেও এই ট্রিটমেন্টটি করতে পারেন। খুব বেশি কিছুর প্রয়োজন নেই হট অয়েল ট্রিটমেন্টের জন্য। চুলে রেগুলার ব্যবহৃত অয়েল দিয়ে করে নিতে পারবেন হয় অয়েল ট্রিটমেন্ট।
[picture]
কেন ব্যবহার করবেন চুলে তেল?
অয়েল ম্যাসাজ মাথার তালুতে রক্ত চলাচল সচল রাখে। এটি চুলের গ্রোথ বৃদ্ধি করে, চুল পড়া বন্ধ করে। এছাড়া এটি মাথার তালুর মৃত কোষ দূর করে। এছাড়া তেলের তৈলাক্ত উপাদান চুলের ফাটা রোধ করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত চুলকে রিকাভার করতে সাহায্য করে। আপনি চাইলে শুধুমাত্র নারকেল তেল দিয়ে হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করতে পারেন। তবে কয়েকটি এসেনশিয়াল অয়েল মিশিয়ে চুলে ব্যবহার করতে পারেন। প্রতিটি তেল চুলের জন্য ভিন্ন ভিন্ন উপকার দিবে। যা চুলের ভিন্ন ভিন্ন সমস্যা সমাধান করবে।
কীভাবে করবেন হট অয়েল ট্রিটমেন্ট?
প্রথম ধাপ
একটি মাইক্রোওয়েভ প্যানে ৩ থেকে ৬ টেবিল চামচ তেল নিন। এটি হতে পারে নারকেল তেল, বাদাম তেল, অলিভ অয়েল কিংবা জোজবা অয়েল। যেকোনো তেল আপনি ব্যবহার করতে পারেন। আপনি চাইলে দুই তিনরকমের তেল একসাথে মেশাতে পারেন। যেমন অলিভ অয়েল এবং ক্যাস্টর অয়েল কিংবা ক্যাস্টর অয়েল এবং নারকেল তেল একসাথে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন। তবে লক্ষ্য রাখবেন দুটি তেল যেন সমান অনুপাতে মেশানো হয়। আপনি যদি সুগন্ধ পছন্দ করেন তাহলে এসেনশিয়াল অয়েল মেশাতে পারেন।
দ্বিতীয় ধাপ
একটি চামচ দিয়ে তেলটি ভালো করে মিশিয়ে নিন। এটি মাইক্রোওয়েভে রাখুন। ১০ সেকেন্ড টাইম সেট করে রাখুন। মাইক্রোওয়েভ না থাকলে চুলায়ও তেলটি গরম করতে পারেন। তবে চুলায় তেল গরম করার সময় লক্ষ্য রাখবেন হাত যেন না পুড়ে যায়।
তৃতীয় ধাপ
একটি টাওয়াল ঘাড়ের উপর দিয়ে রাখুন। যাতে তেল আপনার পোশাকে না লেগে যায়।
চতুর্থ ধাপ
চুল খুব ভালো করে ব্রাশ করে নিন, যাতে চুলে কোনো প্রকার জট না থাকে।
পঞ্চম ধাপ
চুল দুই ভাগে ভাগ করুন। আঙ্গুল দিয়ে তেল মাথার তালুতে ম্যাসাজ করে লাগান। এবার আরেক পাশ সিঁথি করে তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন। এভাবে সম্পূর্ণ চুল এক থেকে দুই মিনিট ম্যাসাজ করুন। লক্ষ্য রাখবেন খুব বেশি জোরে যেন ম্যাসাজ না হয়। এতে চুলের গোড়ায় প্রেশার পরে যার কারণে আঙ্গুলের ডগায় চুল উঠে চলে আসে। তাই হেয়ার ম্যাসাজ করার সময় সাবধান থাকবেন।
ষষ্ঠ ধাপ
একটি টাওয়াল বা শাওয়ার ক্যাপ দিয়ে চুল পেচিয়ে রাখুন। এভাবে ৩০ মিনিট রাখুন।
সপ্তম ধাপ
৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। শ্যাম্পু করার পর কন্ডিশনার ব্যবহার করতে ভুলবেন না যেন। আপনি চাইলে চুলে তেল ম্যাসাজ করার পর গরম পানিতে টাওয়াল ভিজিয়ে নিয়ে সেটি দিয়ে চুল পেঁচিয়ে রাখতে পারেন। এভাবে চুল ৫-১০ মিনিট পেঁচিয়ে রাখুন। তারপর শ্যাম্পু করে ফেলুন।
টিপস
সপ্তাহে একবার চুলে হট অয়েল ট্রিটমেন্ট করুন। এটি চুলের আগা ফাটা রোধ করে চুলকে করতে তুলবে স্বাস্থ্যজ্বল।
ছবি – হেলথলাইন ডট কম
লিখেছেন – নিগার বর্ষা