বাইরে বেশী ঘুরাঘুরি করার ফলে কম বেশি সবারই ত্বক নির্জীব আর মলিন হয়ে পড়ে। তার উপর ট্যানিং তো রয়েছেই। এসব দূর করতে প্রয়োজন বাড়তি যত্নের, নতুবা ছোট খাটো সমস্যাগুলো জেঁকে বসতে পারে। শুধু মেকআপ এর মাধ্যমে সব সমস্যা দূরীকরণ সম্ভবপর হয়ে উঠে না। তাই সময় থাকতেই ত্বককে প্রস্তুত করা প্রয়োজন। পার্লারগুলোতে একটা হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল করাতে ১২০০-১৮০০ টাকা ব্যয় করতে হবে প্রতি বারেই, যা অনেকের জন্যই অনেকটাই ব্যয়বহুল। তাই আজ আপনাদের জানাচ্ছি জাফরানের সাহায্যে হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল করার পদ্ধতি। দেখে নিন তবে……
ঘরে বসেই হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল
১) ক্লিনজিং
শুরুতেই সমস্ত মুখমন্ডল ভালো কোন ব্র্যান্ডের ক্লিনজার দিয়ে পরিষ্কার করে নিন। বাজারের পণ্য ব্যবহার করতে না চাইলে তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারীরা শসা ও শুষ্ক ত্বক হলে কাঁচা দুধ দিয়ে এ কাজটি সেরে নিতে পারেন।
২) এক্সফোলিয়েশন
ছোট ছোট দানাযুক্ত ফেইস ওয়াশ বা স্ক্রাবার দিয়ে সমস্ত মুখ ধুয়ে নিন কিংবা প্রাকৃতিক উপাদান চাইলে ১/২ কাপ আতপ চালের গুঁড়ো, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস, ২ টেবিল চামচ টমেটোর রস ও কয়েক ফোঁটা অলিভ অয়েল ভালোভাবে মিশিয়ে মুখের ত্বকে হালকা হাতে স্ক্রাব করে নিন।
৩) স্টিম
ফেসিয়ালের ক্ষেত্রে স্টিম বেশ জরুরি। এটি লোমকূপ খুলতে সাহায্য করে এবং ত্বককে গভীর থেকে পরিষ্কার করে। প্রথমে খুব অল্প পরিমাণ বাদাম তেল সারা মুখে মালিশ করে নিন। তারপর বাজারের পাওয়া যায় এমন স্টিমারের সাহায্যে স্টিম নিন অথবা যে কোন গরম পানির পাত্রে পাতলা কাপড় দিয়ে পেঁচিয়ে তার ভাপ নিতে পারেন।
৪) ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কারকরণ
একটা ব্ল্যাকহেডস পরিষ্কারক যন্ত্রের সাহায্যে ব্ল্যাকহেডসগুলো পরিষ্কার করে নিন। যেহেতু লোমকূপ খোলা আছে তাই যন্ত্রের হালকা চাপেই উঠে আসবে ব্ল্যাকহেডস।
৫) টোনিং
অনেকেই ভেবে থাকে এর হয়ত প্রয়োজন নেই। কিন্তু এ ধারণা ভুল। যেহেতু স্টিমের মাধ্যমে লোমের গোড়া খোলা হয়েছে টোনিং-এ তা বন্ধ করা জরুরি, নয়তো খোলা পোর দিয়ে ময়লা ঢুকে ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে। বাজারের টোনারে অনীহা থাকলে গোলাপ জল লাগিয়ে নিন।
৬) মাস্ক
এবার হচ্ছে আসল কাজ- হোয়াইটেনিং মাস্কের ব্যবহার। আপনারা অনেকেই হয়তো জানেন জাফরানের উপকারী দিকসমূহ। তাহলে এটাও জেনে থাকবেন যে জাফরানে আছে হোয়াইটেনিং প্রোপার্টি, যা ত্বকের রঙ উজ্জ্বল করতে সাহায্য করে।
উপকরণ
১. জাফরানের আঁশ- ৫-৬টা
২. টক দই/দুধ/দুধের সর- ১/২ কাপ
৩. গোলাপের পাপড়ি- ২-৩টা
৪. চন্দন/মুলতানি মাটি/নিমের(স্পর্শকাতর ত্বক হলে) গুঁড়ো- ১ টেবিল চামচ
৫. কাঠ বাদামের গুঁড়ো- ২-৩ টা
৬. গোলাপ জল- ১ টেবিল চামচ
প্রস্তুত প্রণালী
জাফরানগুলো তরল দুধে ২-৩ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন যতক্ষণ না এর রঙ হলুদাভ হয়। এবার গোলাপের পাপড়িগুলো ভালো করে ধুয়ে নিন। তারপর পাপড়িগুলোর পেস্ট তৈরি করে নিন। এবার একে একে দুধ-জাফরান, গোলাপ পেস্ট, মুলতানি ও বাদামের গুঁড়ো গোলাপ জলে গুলিয়ে রাখুন। সুন্দর পেস্ট তৈরি হয়ে গেলে মুখের ত্বকে লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন। শুকিয়ে গেলে কলের ঠান্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে ফেলুন।
৭) ময়েশ্চারাইজিং
সব শেষে ভালো একটি ময়েশ্চারাইজার দিয়ে ত্বকের আর্দ্রতায় তালা লাগিয়ে দিন।
এবার আয়নায় আপনার চেহারাটি মিলিয়ে নিন, নিজেই অবাক হয়ে যাবেন ত্বকের জেল্লা দেখে। হোয়াইটেনিং ফেসিয়াল করার ফলে আপনার ত্বকে আসবে এক অদ্ভুত সুন্দর আভা ও দ্যুতি আর মেকআপ-এর ভারিক্কি ভাব যাবে কমে। সেই সাথে মেকআপ বসবে নির্ঝঞ্ঝাটে!
ছবি- সাটারস্টক