চিকিৎসকদের চোখে তৈলাক্ত ত্বক আশীর্বাদ হলেও শীতকালে তৈলাক্ত ত্বকের সুরক্ষায় যত্নটা একটু বেশি নিতেই হয়। আবার ত্বক সারা বছর তৈলাক্ত মানে এই নয় যে শীতেও ত্বক তৈলাক্ত থাকবে। এ সময় ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও শুধু শীতেই নয়, বছরের অন্যান্য সময়েও তৈলাক্ত ত্বকের যত্নটা মিশ্র/শুষ্ক ত্বকের তুলনায় বেশি লাগে। শীতে তৈলাক্ত ত্বকের যত্ন নিয়েই আজকের লিখাটি সাজিয়েছি। এই লেখায় অয়েলি স্কিনের যত্নে ৭টি টিপস এন্ড ট্রিকস আপনাদের সম্মুখে তুলে ধরা হলো।
[picture]
তৈলাক্ত ত্বক, শীতে কিভাবে হবে যত্ন?
(১) পানির কোনো বিকল্প নেই
আপনার ত্বক তৈলাক্ত? প্রতিদিন অন্তত ৮/১০ গ্লাস পানি অবশ্যই পান করতে হবে। সম্ভব হলে আরও বেশি। সুস্থ ত্বকের জন্যে পানির কোনো বিকল্প নেই। পানিশূন্য শরীর তৈলাক্ত মলিন ত্বকের প্রধান কারণ। সেই সাথে ব্রণের ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্যেও পরিমাণ মতো পানি অবশ্যই পান করা চাই।
(২) তৈলাক্ত ত্বক সুরক্ষায় টোনার
টোনার প্রধানত ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে আনতে সহায়তা করে। মুখ ভালভাবে ফেইসওয়াশ দিয়ে ধোয়ার পর হালকা ভেজা মুখে টোনার ব্যবহার করা ভালো। এটি ত্বকের ময়লা গভীর থেকে বের করে পিএইচ ব্যালেন্স ঠিক রাখে। সেই সাথে টোনার মুখের লোমকূপ ছোট করে অতিরিক্ত তৈলাক্ত উপাদান বের করে দেয়।
বাজারে বিভিন্ন রকমের টোনার কিনতে পাওয়া যায় অথবা বাড়িতে বসেও গোলাপের পাপড়ি, আপেল সিডার ভিনেগার দিয়েও সহজ উপায়ে টোনার বানানো যায়।
(৩) ময়েশ্চারাইজার অবশ্যই চাই
অনেক সময় দেখা যায়, শীতকালে তৈলাক্ত ত্বক অতিরিক্ত শুষ্ক হতে শুরু করে। অনেক সময় মুখের চামড়া ফেটে যায়। এই পরিস্থিতি সামলানোর জন্যে ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন। গোসলের পর হালকা ভেজা শরীরে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা ভালো। আবার রাতে ঘুমানোর আগেও ময়েশ্চারাইজার প্রয়োজন।
(৪) ত্বকের যত্নে স্ক্রাবিং
শীতকালে তৈলাক্ত ত্বক যখন রুখ, শুষ্ক হয়ে যায়, দেখা যায় মুখ থেকে মরা চামড়া উঠে।এই সমস্যা সমাধানে স্ক্রাবিং চাই প্রতি সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন। ঝামেলা এড়ানোর জন্যে বাজার থেকে কেনা বিভিন্ন স্ক্রাবিং প্যাক ব্যবহার করা যেতে পারে। আবার সহজেই ঘরোয়া উপাদান দিয়েও নানা রকম স্ক্রাবিং প্যাক বানানো যায়।
(৫) ত্বকের বন্ধু অ্যালোভেরা
অ্যালোভেরা তৈলাক্ত ত্বকের প্রিয় বন্ধু। শীতকালে বাইরে ধুলাবালি বেশি থাকার কারণে তৈলাক্ত ত্বক তাড়াতাড়ি ময়লা হয়ে যায়, তখন ব্রণ হয় বেশি। এই সমস্যা সমাধানে বাইরে থেকে এসে মুখ ধুয়ে অ্যালোভেরা জেল মুখে দেওয়া যায়। এতে রোদেপোড়া ভাবও দূর হয়। শীতকালে দেখা যায় মুখ থেকে মরা চামড়া উঠে। অ্যালোভেরা জেলের সাথে চিনি মিশিয়ে স্ক্রাবার তৈরি করে মুখে ঘষলে মরা চামড়া উঠে যায়।
(৬) নারকেল তেল, ভিটামিন ই, টি ট্রি অয়েল
নারকেল তেল শীতকালে ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখে। ত্বককে অতিরিক্ত শুষ্ক হওয়া থকে বাঁচায়। তবে এক্ষেত্রে খাঁটি নারকেল তেল ব্যবহার করাই ভালো। ভিটামিন ই শীতকালে ত্বকের অন্যান্য প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটায় এবং টি ট্রি অয়েল ত্বককে ব্রণ মুক্ত রাখে।
(৭) সানস্ক্রিন
শীতকালে দিনের বেলা বাড়ির বাইরে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন দিয়ে যাওয়া উচিত। এবং খেয়াল রাখতে হবে এসপিএফ যাতে ৩০ অথবা ৩০-এর বেশি হয়। এতে শীতে ত্বক সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে রক্ষা পাবে সেই সাথে আর্দ্রতাও হারাবে না।
সুতরাং, শীতকাল আসলেই তৈলাক্ত ত্বক নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছুই নেই। সহজ কিছু উপায় মেনে চললেই সব সমস্যার সমাধান পাওয়া সম্ভব।
ছবিঃ সংগৃহীত – সাটারস্টক