স্নিগ্ধতা! মানুষের অনুভূতির এক অনন্য রূপ। মনকে যথেষ্ট শান্তিতে রাখে তেমন যেকোন কিছুই হতে পারে স্নিগ্ধতার পরিচায়ক। বাসগৃহে স্নিগ্ধভাব ধরে রাখতে কী করা যায়, তখন ঘর সাজানোর কৌশল কেমন হবে, সেসব নিয়েই টুকিটাকি কথা হতে যাচ্ছে এইখানে।
[picture]
ঘরে থাকবে তাজা ফুল
ফুল কিনে আনুন মাঝেমধ্যে। কারো জন্য নয়, ঘরের ভেতর কয়েক মুঠো হাসি ছড়িয়ে দিতেই আনুন ফুল।
ফুলদানিতে রজনীগন্ধা থাকুক। গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে দিন বাটিতে পানি নিয়ে তার ভেতর। কাঁঠালচাঁপা ফুলের দলও বাটিতে ভেসে থাকুক অমন। অফিস থেকে ফেরার পথে দোলনচাঁপা কিনে নিন ফুলওয়ালী মেয়েটার থেকে। শোকেসে সাজানো বড় ফুলদানিটা নামিয়ে তাতে গুঁজে দিন ফুলগুলো। মূহুর্তেই ঘর কেমন ঝলমলিয়ে উঠবে নিজেই দেখুন।
আশ্রয় হোক গাছ
যতো বদ্ধ কুঠুরিই হোক বাসা আপনার, চেষ্টা করুন যাতে বাসায় একটুখানি সবুজের উপস্থিতি থাকে। বারান্দা থাকলে তো অনায়াসেই রাখা সম্ভব কিছু গাছ। ছোট বোতলে বাসা বানিয়ে দিন কিছু মানিপ্ল্যান্টকে। তারপর ঝুলিয়ে দিন বারান্দার গ্রিলে। রাখা যায় জানালার তাকেও, বা ঘরের ভেতরেই টেবিলে কোথাও।
পেটমোটা কাঁচের গ্লাসে ছোট অমন একটা গাছের বাসা হতে পারে স্নানঘরে আয়নার সামনে তাকটাতে। ঘরের মলিন ভাব ছুমন্তর করে কাটিয়ে দিতে গাছের কোন জুড়ি নেই, একথা তো মানতেই হবে।
কিছু টব ঘরে রাখা গেলে সবচেয়ে ভালো। বারান্দার মাঝে এক টুকরো বাগান আছে যাদের, তারা ভাগ্যবান নিঃসন্দেহে। দরকারের ধনে পাতা, পুদিনা বা কাঁচা মরিচের গাছ হলেও থাকুক নিজের ঘরে। চোখের শান্তি, মনেরও শান্তি হবে। ফুলগাছ থাকলে আরো ভালো। মিষ্টি ঘ্রাণ আর চোখ জুড়ানো সুন্দরের মিতালী থাকবে ঘরের ভেতর।
আলো থাকুক পরিমিত
আলো ঘরের প্রশান্তি নির্দেশক এক জরুরী উপাদান। কাজের প্রয়োজনে বেশি আলো দরকার হয় বটে, কিন্তু চোখ ও মনের শান্তির জন্য আলো হতে হবে পরিমিত।তাই কাজ না থাকলে অতিরিক্ত আলো এড়িয়ে যান। সব পর্দা সরিয়ে না দিয়ে একটা/দুটো টেনে রাখুন।
ল্যাম্পশেডের আলোআঁধার
ল্যাম্পশেড রাখতে পারেন ঘরে। বিভিন্ন রকমের কয়েকটি ল্যাম্পশেডের আলোআঁধারি কারুকাজ ঘরে স্নিগ্ধতার পরশ এনে দেবে। ল্যাম্পশেড কিনবেন নানা রঙের শেড দেখে, তাতে আলোয় রঙের খেলাটা থাকবে। এই বাতিগুলি সন্ধ্যা নামলে জ্বালিয়ে রাখুন যখনই ঘরে উজ্জ্বল আলোর প্রয়োজন হবে না।
মোমের আলোয় মায়া থাকুক
মোমবাতি দিয়ে ঘর সাজান কখনোসখনো।মোমের শৌখিনতায় বাসগৃহে অন্য আবহ নিয়ে আসুন। সাথে আসবে প্রশান্তি। করিডর বা বারান্দায় সারি বেঁধে মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখা যায়। বাতাস নেই ঘরের এমন যেকোন জায়গাতেই রাখতে পারেন কিছু মোম, বা প্রদীপ। ঘরে রাখতে পারেন সুগন্ধিযুক্ত মোমবাতিও।
আসবাব থাকবে যেমন
ভারী আসবাবের ভীড়েও কিছু হালকা আসবাব রাখুন, গম্ভীর ভাব কমবে আপনার ঘরের। বসার ঘরে বিশাল সোফাসেটের সাথে কায়দা করে দুটো বেতের চেয়ার বা মোড়া থাকুক। শোবার ঘরে ভারী কাজের খাটের সাথে পাশের টেবিলটা হোত বেতের।
হালকা কিন্তু উজ্জ্বল রঙ
চাদর, পর্দা এসবে যতোটা সম্ভব হালকা রঙগুলি বেছে নিন। খুব গাঢ় রঙগুলি এড়িয়ে চলুন। গাঢ় রঙে জমকালো আমেজ আসবে ঘরে, হাসিখুশি ভাব নয়। তাই হালকা কিন্তু উজ্জ্বল সব রঙে ঘর সাজান।
ঘর সাজাতে খেয়াল রাখুন এই সহজ নিয়মগুলি। গৃহসজ্জা হোক ছিমছাম, হাসিমাখা। আপনার সাধের অন্দরমহলে এবার স্নিগ্ধতা ছড়িয়ে পড়ুক চারিদিকে।
লিখেছেন – মুমতাহীনা মাহবুব
ছবি – নাইসহোমডেকোর.কম