আমাদের সবার ত্বকের ধরণ ভিন্ন। তাই আমাদের ত্বকের সমস্যার ধরণও অনেক সময় ভিন্ন। কিন্তু আমাদের ত্বকের জন্য একটি কমন সমস্যা হোয়াইট হেডস। তাই হোয়াইট হেডস থেকে কিভাবে নিজের ত্বককে মুক্ত রাখতে পারবেন সেটাই আপনাদের সাথে আজ শেয়ার করবো। প্রথমেই জেনে নেব, হোয়াইট হেডস কি? হোয়াইট হেডস হল এক ধরনের ছোট সাদা ব্রণ যা আমাদের ত্বক দ্বারা নির্গত তেল বা মৃত কোষ দিয়ে গঠিত হয়। যার ফলে ত্বকের পোর ব্লক হয়ে যায়। অতিরিক্ত ধুলাবালি ও ময়লা থেকেও এটি সৃষ্টি হতে পারে। এটি সাধারনত কম্বিনেশন এবং অয়েলি স্কিনে বেশি দেখা যায়। নাকের উপরে এবং চারপাশে, কপালে, থুতনিতে, গালে হোয়াইট হেডস দেখা যায়। এটি দেখতে ছোট ছোট সাদা ফুস্কুড়ির মতো। তো চলুন এবার জেনে নেই কিভাবে হোয়াইট হেডস মুক্ত ত্বক পেতে পারেন।
হোয়াইট হেডস মুক্ত ত্বক পেতে ৭টি উপায়
(১) স্কিনের উজ্জ্বলতা এবং বয়স ধরে রাখতে ত্বকে উৎপাদিত অয়েল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু স্কিনের অতিরিক্ত অয়েলের কারণে হোয়াইট হেডস দেখা দেয়। তাই আপনার স্কিন কেয়ারের দিকে নজর দিতে হবে। দিনে অন্ততপক্ষে ৩ বার মুখ পরিষ্কার করবেন একটি ভালো ফেইসওয়াশ দিয়ে যা আপনার স্কিনের সাথে মানানসই। এক্ষেত্রে আপনি সকালে, সন্ধ্যায় এবং রাতে শোয়ার আগে মুখ পরিষ্কার করে নেবেন। এর সাথে টোনার এবং ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিবেন।
(২) ত্বকের আসল সৌন্দর্য আসে ভেতর থেকেই। আপনার খাদ্যাভ্যাস এর প্রভাব আপনার স্কিনে পড়বেই। তাই যথাসম্ভব হেলদি খাবার গ্রহণের চেষ্টা করুন। প্রচুর পানি পান করবেন এবং আপনি একটি DETOX ড্রিংক তৈরি করে নিতে পারেন। এছাড়া প্রচুর সালাদ, ফলমূল, শাকসবজি খাবেন। ভাজা পোড়া এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন। মনে রাখবেন, নিজেকে ভেতর থেকে ফিট এবং সতেজ না রাখলে স্কিনও ভালো থাকবে না এবং নানা সমস্যা দেখা দেবে।
(৩) স্কিনে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন। অনেকে মনে করে তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজারের কোনো প্রয়োজন নেই। এই ধারণা একদম ভুল। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলে হোয়াইট হেডস বাড়ে। কারণ, ময়েশ্চারাইজার ত্বকে ব্যালেন্স আনে এবং অতিরিক্ত ড্রাইনেস দূর করে। ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার না করলে আমাদের ত্বকের শুষ্ক ভাব দূর করার জন্য ত্বক অতিরিক্ত অয়েল উৎপাদন করে। আর এই অতিরিক্ত অয়েলের ফলে দেখা দেয় হোয়াইট হেডস। তাই মুখ পরিষ্কারের পর অবশ্যই একটি লাইটওয়েট, হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন।
(৪) আপনার ত্বক যদি হোয়াইট হেডসযুক্ত হয় তবে অবশ্যই মেকআপের কাজ শেষে মেকআপ রিমুভ করতে ভুলবেন না।কারণ, মেকআপ নিয়ে শুয়ে পড়লে এক রাতেই আপনার ত্বক অতিরিক্ত হোয়াইট হেডস এর জন্ম দেবে। তাই অবশ্যই মেকআপ ভালোভাবে রিমুভ করে পরিষ্কার মুখে ঘুমাতে যাবেন।
(৫) অতিরিক্ত হোয়াইট হেডস দূর করতে ব্যবহার করুন ডিমের একটি মাস্ক। এই মাস্কটি পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করতে পারলে আপনার হোয়াইট হেডস উঠে আসবে। এজন্য ডিমের সাদা অংশ হালকা ফেটিয়ে নিন। এবার একটি গরম তোয়ালে আপনার হোয়াইট হেডস এরিয়াতে চেপে নিন ৫ মিনিট। এতে আপনার পোরগুলো ওপেন হবে। এবার ডিমের সাদা অংশ নিয়ে ওই সকল স্থানে লাগান, এবার একটি টিস্যু পেপার নিয়ে সাদা অংশের উপরে বসিয়ে নিন। এবার আর এক লেয়ার ডিমের সাদা অংশ এবং টিস্যু পেপার লাগান। এভাবে ৪-৫ লেয়ার করবেন। এবার এটি শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। পুরোপুরি শুকিয়ে গেলে টিস্যু পেপারের এক মাথা ধরে আস্তে আস্তে টান দিয়ে তুলে ফেলুন। পুরো টিস্যুপেপার তুলে ফেলার পর আপনি নিজেই দেখতে পারবেন টিস্যু পেপারের সাথে আপনার হোয়াইট হেডসগুলো উঠে এসেছে। এই মাস্কটি খুবই এফেক্টিভ।
(৬) হোয়াইট হেডস দূর করতে স্ক্রাবিং করুন। কারণ স্ক্রাবের বিডসগুলো হোয়াইট হেডস দূর করে দেয়। তাই সপ্তাহে অন্তত ৩ দিন স্ক্রাবিং করবেন।
(৭) হোয়াইট হেডস-এর কথা মাথায় রেখে আপনার ফেইস মাস্ক ব্যবহার করা উচিত। এক্ষেত্রে আপনি যেকোনো ক্লে অথবা চারকোল মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। ক্লে অথবা চারকোল মাস্কগুলো হোয়াইট হেডসপ্রোন স্কিনের জন্য খুব ভালো কাজে দেয়। এগুলো শপ.সাজগোজ.কম-এ সহজেই পাবেন।
এই তো জেনে নিলেন হোয়াইট হেডস মুক্ত ত্বক পেতে বিভিন্ন উপায়। আশা করি, আজকের এই লেখা থেকে আপনাদের কিছুটা হলেও উপকার হবে।
ছবি – সংগৃহীতঃ ইনসাইডার.কম