প্রত্যেকটি মানুষেরই ফেইস শেইপ বা কাটিং আলাদা। নাক, চোখ, ঠোঁট- সবটাই ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। যার চেহারার গড়ন যেমনই হোক না কেন, সবাই কিন্তু চায় যে তাকে দেখতে আকর্ষণীয় লাগুক। নাক আমাদের ফেইসের সেন্টার-এ অবস্থিত হওয়ায় আমাদের সৌন্দর্য-এর অনেকটাই এর উপরে নির্ভর করে। নাকের গড়ন একজনের থেকে অন্যজনের আলাদা হয়। কারো শার্প, কারো চওড়া, কারো খুব শার্পও না আবার চওড়াও না। যাদের নাক শার্প, তাদের দেখতে তো এমনিতেই সুন্দর লাগে। তবে যাদের নাক চওড়া ধরনের, তারাও তাদের নাককে শার্প দেখাতে পারবেন কিছু ট্রিকস ফলো করলেই। তো, চলুন আর কথা না বাড়িয়ে নোজ কনট্যুরিং এর ট্রিকসগুলো জেনে নেই।
নোজ কনট্যুরিং
১. যাদের নাক একটু চওড়া ধরনের, তার স্কিনে একটু ডার্ক টোন-এর ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন। ডার্ক টোন-এর ফাউন্ডেশন বলতে স্কিনটোন-এর থেকে ২ শেড ডার্ক ফাউন্ডেশন নিলেই চলবে।
জী না! আমি পুরো ফেইস-এ ডার্ক ফাউন্ডেশন লাগাতে বলছি না। জাস্ট চোখের ক্রিজ থেকে নাকের দুই পাশে এবং থুঁতনির নিচের দিকে ডার্ক ফাউন্ডেশন ব্যবহার করবেন। আবার নাকের হাড়ের উপরে এবং নাকের দুই পাশে যেখানে ডার্ক ফাউন্ডেশন লাগিয়েছেন। তার পাশ থেকেই শুরু করে পুরো ফেইস-এ নিজের স্কিনটোন অনুযায়ী ফাউন্ডেশন লাগান। সব কিছু ভালো করে ব্লেন্ড করতে ভুলবেন না যেন। এক্ষেত্রে ফ্ললেস ফিনিশিং-এর জন্য বিউটি স্পঞ্জ ভালো কাজ দিবে।
২. আপনার নাক যদি চওড়া হয়, তবে আপনার ফেইস-এর অ্যাটেনশন নাক থেকে অন্য গুড ফিচার-গুলোর দিকে নিয়ে নিতে পারেন। যেমন: আপনার আন্ডার আই, আইলিড, চিকবোন ইত্যাদিতে অ্যাটেনশন ক্রিয়েট করতে পারেন। এই এড়িয়া-গুলো সুন্দর করে হাইলাইট করে নিতে পারেন। তবে মেইক শিওর করবেন, ফেইস-এর ফ্ল যেমন- ডার্ক সার্কেল, স্পট-গুলো যেন সুন্দর করে হাইড হয়ে থাকে। এতে করে চওড়া নাক খুব একটা অ্যাটেনশন পাবে না।
৩. নাক শার্প করার জন্য সব থেকে ইম্পরট্যান্ট স্টেপ হলো কন্ট্যুরিং। এই কন্ট্যুরিং-এর মাধ্যমে নাকের চেহারা বদলে ফেলা সম্ভব। এক্ষেত্রে শুধু নাক কন্ট্যুর করলেই হবে না। চিকবোনের নিচে, কপালে এবং নাকে কন্ট্যুর করে নিলে জিনিসটা পারফেক্ট লাগবে। কন্ট্যুরিং পাউডার নিয়ে নাকের দুই পাশে লাগিয়ে নিন একটা ছোট ব্রাশের সাহায্যে এবং ভালোভাবে ব্লেন্ড করে নিন। একইভাবে কন্ট্যুরিং ব্রাশের সাহায্যে চিকবোনের নিচে এবং কপালের হেয়ারলাইন-এর দিকে কন্ট্যুর করে নিন। চাইলে আগে ক্রিম কন্ট্যুরিং-ও করে নিতে পারেন।
এরপর একটা শিমারী হাইলাইটার নিয়ে নোজ ব্রিজ-এ লাগিয়ে নিন। ব্যস!!
৪. নাক চওড়া হলে ফেইস সবসময় অয়েল ফ্রি/ম্যাট রাখার চেষ্টা করুন। এজন্য বেস্ট হতে পারে লুজ পাউডার। লুজ পাউডার দিয়ে পুরো ফেইস সেট করে নিন। আন্ডার আই বেকিং-এর সময় একটি ট্রায়াঙ্গেল স্পঞ্জ-এ লুজ পাউডার নিয়ে নাকের দুই পাশে যেখানে কন্ট্যুরিং করেছেন, তার পাশে থেকে নিয়ে পুরা আন্ডার আই পর্যন্ত বেকিং করুন। এতে নাক ছোট ও কম চওড়া মনে হবে।
৫. চওড়া নাক শার্প দেখাতে আপনাকে প্রচুর মেকআপ না করলেও চলবে। আগেই বলেছি, ফেইস-এর অন্যান্য ফিচার-এ অ্যাটেনশন ড্র করতে। আপনার চিকস-এ ব্যবহার করুন শিমারী ব্লাশ। এতে করে একটু হলেও আপনার নাক দেখতে ছোট লাগবে। আর চিকবোন-এ পাউডার হাইলাইটার লাগাতে কিন্তু একদম ভুলবেন না।
৬. মেকআপ-এর মাধ্যমে নাক শার্প করার বেলায় নাকের সাথে কিন্তু ফেইস-এর অন্য ফিচার-গুলো কানেক্টেড থাকতে হবে। নাহলে পুরো ব্যাপারটা দেখতে মেকি মনে হতে পারে। তাই এক্ষেত্রে আপনার বন্ধু হতে পারে ব্রোঞ্জার। ফেইস-এর চারদিকে যেমন- চিকস, কপাল, থুঁতনির দিকে ব্রোঞ্জার লাগিয়ে নিন। এতে করে ফেইস-এর ফিচার-গুলো কানেক্টেড মনে হবে এবং মেকি-ও লাগবে না।
৭. স্মোকি আই অথবা ড্রামাটিক আই মেকআপ আপনার নোজ থেকে অ্যাটেনশন সরিয়ে নিতে পারে। তাই ট্রাই করুন স্মোকি আই অথবা ড্রামাটিক কোনো আই মেকআপ।
৮. সবসময় ব্যবহার করুন বোল্ড এবং ব্রাইট কালার-এর লিপস্টিক। যদি মেকআপ নাও লাগান, তবে এই ট্রিক-টা ফলো করতে পারেন। এতে করে কেউ আপনার চওড়া নাকের দিকে খেয়াল ই করবে না।
এই তো জেনে নিলেন, চওড়া নাক শার্প দেখানোর জন্যে কিছু মেকআপ ট্রিকস। আশা করছি, আপনাদের অনেক বেশী হেল্প হবে।
লিখেছেন- জান্নাতুল মৌ
ছবি- সাটারস্টক