রুবেল ও রনি একই অফিসে জয়েন করেছেন, প্রায় একই সময়ে। কিন্তু অবাক ব্যাপার রুবেল একের পর এক প্রমোশন পেয়ে তরতরিয়ে উপরে উঠছেন, সবাইকে পেছনে ফেলে। কি দৌড়াদৌড়িই না করতে পারেন সারাদিন! যেন সাক্ষাৎ রোবট! সবাই ভাবে কী এমন গোপন রহস্য, সারাদিন কর্মক্ষম থাকার? কোথায় পান তিনি এত্ত এনার্জি? না! নেই কোন গোপন রহস্য। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নজর দিয়ে আপনিও থাকুন সারাদিন এনার্জিময়। আমরা তাই আপনাদের জানাবো কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করার সহজ এবং কার্যকরী কিছু উপায় সম্পর্কে।
কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতে ৮টি কার্যকরী উপায়
১) ঘুম হোক তৃপ্তিময়
মানব শরীর যন্ত্রের মতো। সারাদিন পরিশ্রমে শরীরে যে ক্লান্তি জমে তা দূর করে ঘুম। ঘুমের মাধ্যমে শরীর তার ক্ষয়পূরণ করে নতুন ঝরঝরে করে গড়ে তোলে নতুন কাজের জন্য। তাই ঘুমকে অবহেলা করবেন না। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমই যথেষ্ট। তাই পর্যাপ্ত ঘুমান আর ঘুম শেষে তরতাজা হয়ে কাজ শুরু করুন।
২) প্রাতরাশ সারুন পুষ্টিকর খাবারে
সারারাত না খেয়ে পার করার পর সকালের নাস্তা শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা সকালের নাস্তা আপনাকে সারাদিন চলার শক্তি জোগান দিবে। আবার প্রাতরাশ আপনার শরীরের কোলেস্টেরল (Cholesterol) নিঃসরণ বা স্ট্রেস (Stress) হরমোনকে বাধাগ্রস্থ করে ফলে শরীরে ক্লান্তি বা স্ট্রেস কম আসে। তাই দিন শুরু করুন পুষ্টিকর প্রাতঃরাশ খাবার দিয়ে।
৩) সর্বক্ষণ পানি থাকুক হাতের কাছে
পানি সারা দেহে রক্ত সঞ্চালন করতে সাহায্য করে, দেহের কোষগুলোকে রাখে সতেজ। তাই শরীরকে কর্মক্ষম রাখতে পানির কোন বিকল্প নেই। তাই বেশি করে পানি পান করুন।
৪) পরিমাণ নয় খাবারের গ্রহনের সংখ্যা বাড়ান
একবারে বেশি খাবার খাবেন না। অল্প অল্প করে বারবার খাবার গ্রহণ করুন। একেবারে অধিক খাবার খেলে সেটা হজম করতে শরীরের অনেক বেশি শক্তির প্রয়োজন পরে। তাই আমরা পেটভরে খাবার গ্রহণের পর ক্লান্তি অনুভব করি। শুধু তাই নয়, একবারে অধিক খাবারে মাত্রাতিরিক্ত ক্যালোরি গ্রহণ হয়ে যায় ফলে দ্রুত দেহের ওজন বাড়ে এবং শরীরের কর্মক্ষমতা কমে যায়। তাই বারবার খাবার গ্রহণের অভ্যাস তৈরি করুন।
৫) পুষ্টিকর ও আঁশজাতীয় খাবার খান
আঁশজাতীয় খাবারের আঁশ হজমের সময় শর্করা শোষণে দেরি করায়, যার ফলে শর্করা রক্তে দ্রুতগতিতে প্রবেশ না করে ধীরে ধীরে মধ্যম গতিতে প্রবেশ করে। যার দরুণ দেহে শক্তির যোগান বজায় থাকে। তাই সবসময় খাবারে পুষ্টিকর ও আঁশজাতীয় খাবার রাখুন।
৬) কাজের ফাঁকে নিন ছোট্ট বিরতি
একটানা কাজ করলে কাজে আসবে বিরক্তি আর শরীর হয়ে উঠবে ক্লান্ত। ফলে কর্মক্ষমতা হারাতে হবে। এর হাত থেকে বাঁচতে কাজের ফাঁকে ফাঁকে নিন অল্প সময়ের বিরতি।
৭) কর্মদক্ষতা বৃদ্ধিতে শরীরচর্চার ভূমিকা
কর্মক্ষমতা ও ক্লান্তি দূর করতে শরীরচর্চার অসাধারন ভূমিকা রয়েছে। শরীরচর্চার ফলে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায়, হৃদযন্ত্রের গতি বৃদ্ধি পায় এবং দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে শরীরে প্রবেশ করে অতিরিক্ত অক্সিজেন। তাই এতে দেহ পায় অধিক জ্বালানী।
8) অনুভূতি শেয়ার করুন
মনের অনুভূতি চেপে রাখবেন না, মনের কথাগুলো বিশ্বস্ত বন্ধুর কাছে খুলে বলুন। না হলে মনে রাগ, দুঃখ বা শোক চেপে রাখার ফলে দেহে আসবে ক্লান্তি। মন চনমনে রেখে কাজ করে যেতে সঙ্গীতের কোন জুড়ি নেই। তাই সময় পেলেই প্রিয় গান শুনে নিজেকে ঝরঝরে করে নিতে পারেন। আবার কাজের ফাঁকে হাতে তুলে নিতে পারেন, এক মগ চা অথবা কফি যা আপনার সাময়িক ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে, তবে অবশ্যই অতিরিক্ত নয়।
এভাবে আপনার কর্মক্ষতা বাড়িয়ে তুলুন। আর এই প্রতিযোগিতামূলক পৃথিবীতে নিজেকে করে তুলুন যোগ্যময়।
ছবি- সংগৃহীত: shutterstock