ঈদের দিন কোন পোশাক পরবেন, কীভাবে মেকআপ করবেন এসব বিষয়ে তো আগে থেকেই ঠিক করে রাখা হয়, তাই না? তবে এসবের পাশাপাশি এটাও মনে রাখা প্রয়োজন যে, ঈদের দিন আপনার বাড়ির ভেতর এবং বাইরের পরিবেশটাও এমন হতে হবে যেন মেহমানরা এসে শুধু আপনার সাজগোজ আর রান্নাবান্নাই নয়, বরং আপনার বাড়ি সম্পর্কেও রুচিশীলতার পরিচয় পান। তাছাড়া শিশুদের ব্যাপারেও কিছু ছোটখাটো ব্যাপার মাথায় রাখতে হবে। আর সবকিছু যেন ঠিকঠাকমতো হয়, সেজন্য আগে থেকেই কিছু প্রস্তুতি নিতে হবে। আজকে আপনাদের জানাবো ঈদের প্রস্তুতি নেওয়ার কয়েকটি টিপস সম্পর্কে।
ঈদের প্রস্তুতি নেওয়ার আগে কয়েকটি টিপস
১) বাড়ি পরিষ্কার
ঈদের আগেই ঘরবাড়ি পরিষ্কারের কাজটা করে ফেলুন। বিশেষ করে বিভিন্ন রুমের পর্দা, কার্পেট, পাপোশ ধুয়ে রাখুন। ঈদ উপলক্ষে আপনার বাইরের রুমগুলোতে নতুন পর্দাও ঝোলাতে পারেন। তবে পর্দাগুলো এমন হতে হবে যেন সেগুলোর কারণে ঘরে গুমোটভাব চলে না আসে।
২) সার্ভিং ডিশ, গ্লাস রেডি রাখুন
মেহমানদের জন্য দৈনন্দিন খাবারের প্লেট, গ্লাসগুলো না রেখে একটু ভিন্ন ডিজাইনের কিছুতে খাবার পরিবেশন করুন। আর অবশ্যই এসব জিনিস ঈদের আগেই বের করে ধুয়ে মুছে এমনভাবে রাখুন যেন ঈদের দিন এগুলো বের করতে হুড়োহুড়ি লেগে না যায়।
৩) ইনডোর প্ল্যান্ট রাখতে পারেন
ঘরের ভেতর ২/৩টি ছোট ছোট ইনডোর প্ল্যান্ট অথবা বাড়িতে ঢোকার দরজার সামনে আকর্ষণীয় টবে ছোট্ট ফুল গাছ রাখতে পারেন। চাইলে বাথরুমের তাকে মানিপ্ল্যান্ট বা লাকি ব্যাম্বু জাতীয় গাছগুলো সাজিয়ে রাখা যায়। এতে ঘরের পাশাপাশি বাথরুমের সৌন্দর্যও বাড়বে।
৪) রান্নার পর ময়লা জমিয়ে রাখবেন না
বাড়ির দরজার সামনে, সিঁড়িতে যেন কোনো ময়লা পড়ে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন। রান্নার পর ফেলে দেয়া মাছ, মাংস, সবজির অবশিষ্ট যা থাকে তা রান্নাঘরে জমিয়ে রাখবেন না। এতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে মেহমানের সামনে আপনাকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিতে পারে।
৫) বাচ্চাদের কথা মাথায় রাখুন
শিশুদের কথা ভুলে যাবেন না। আপনি হয়তো আপনার মেহমানদের সাথে গল্প করছেন, সময় কেটে যাচ্ছে কিন্তু তাদের সাথে যদি কোনো শিশু থাকে তার কিন্তু এরকম পরিবেশে ভালো লাগবে না। একটু পরেই সে তার নিজের বাসায় যাওয়ার জন্য অস্থির হয়ে যাবে অথবা কান্নাকাটি শুরু করে দিবে। কাজেই কোনো শিশু যেন আপনার বাসায় এসে হতাশ না হয়, সেদিকে খেয়াল করুন। আপনার সন্তান অথবা বাসার কোনো অল্প বয়সী সদস্যের রুমটি একটি শিশুর সময় কাটানোর উপযোগী করে রাখুন। বিছানার চাদর অথবা পর্দাগুলো রঙিন রাখুন। ২/৩টি ছোট্ট ছোট্ট খেলনা গাড়ি, ছোট কোনো পুতুল বা শিশুদের প্রিয় কোনো কার্টুন চরিত্রের ছোট ফিগারের পুতুলগুলো কিনে রাখতে পারেন। একটু বড় শিশুদের জন্য রাখতে পারেন কয়েকটি কমিক বুক, সহজ গল্পের বই, রঙ করার বই এবং রঙ পেনসিল। আপনারা যে সময়টুকু গল্প করে কাটাবেন সেই সময়টুকু তাহলে শিশুটিও নিজের মনে খেলায় বা বই পড়ায় ব্যস্ত থাকবে।
৬) সংগ্রহে রাখুন চকলেট-চিপ্স
সাধারণত বড়দের যেসব খাবার ভালো লাগে সেই একই খাবার শিশুদের ভালো নাও লাগতে পারে। তাই ড্রয়িং রুম অথবা খাবার টেবিলে একটি বাটিতে সুন্দর করে সাজিয়ে রাখতে পারেন কিছু লজেন্স, চকলেট, চিপ্স।
৭) অবশ্যই টয়লেট পরিষ্কার রাখুন
মেহমান আসার আগে বাড়ির প্রতিটি টয়লেট অবশ্যই পরিষ্কার করিয়ে রাখবেন এবং টয়লেট পেপার, লিকুইড সাবান যেন থাকে সে বিষয়ে খেয়াল রাখবেন।
৮) প্রয়োজনীয় ওষুধ রাখুন
টিস্যু বক্স, এয়ার ফ্রেশনারের সাথে সাথে কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধও ঘরে রাখা জরুরি। অনেক সময় দেখা যায় ১ মাস রোজার পরে হঠাৎ করেই সকাল থেকে ঘি তেল যুক্ত খাবার খাওয়ার কারণে অনেকের বদহজম, অ্যাসিডিটি, পেটের সমস্যা দেখা দেয়। তাই প্রয়োজনীয় ওষুধগুলো রাখাটা জরুরি।
৯) ঘর সাজাতে ফুল
বাড়ির ভেতর স্নিগ্ধ আমেজ আনতে ঘরে ফুলদানিতে তাজা ফুল সাজিয়ে রাখতে পারেন। অথবা কাঁচের বড় বাটিতে পানি দিয়ে তার মাঝে ছড়িয়ে রাখতে পারেন সুগন্ধি ফুলের পাপড়ি।
ঈদের আগেই কিছু বিষয়ে প্রস্তুতি নিয়ে রাখলে ঈদের দিন অপ্রস্তুত ঘটনার মুখোমুখি হতে হবে না। সব কাজের কথা যদি মনে না থাকে তাহলে লিস্টও বানিয়ে ফেলতে পারেন। প্রস্তুতি নিন, পারফেক্টভাবে কাটুক আপনার ঈদ! সবাইকে ঈদের আগাম শুভেচ্ছা।
ছবিঃ সাটারস্টক