হাইড্রো ফেসিয়াল | কীভাবে ৮টি স্টেপে ঘরে বসেই করবেন? 

হাইড্রো ফেসিয়াল | ৮টি স্টেপে ঘরে বসেই করে নিন 

হাইড্রো ফেসিয়াল

হাইড্রো ফেসিয়াল (Hydro Facial)” বিউটি ট্রেন্ডের নতুন একটি সংযোজন। হাইড্রো ফেসিয়াল কিভাবে করা হয়, কোন স্কিনের জন্য পারফেক্ট বা এটা করলে কী হয় সেগুলো আমরা অনেকেই জানি না। এটা এমন একটি ফেসিয়াল যেখানে বিভিন্ন স্টেপের মাধ্যমে ত্বকে ময়েশ্চার লক করে ইনস্ট্যান্টলি ফ্রেশনেস ও হাইড্রেটেড লুক নিয়ে আসে। বিউটি সেলুনে বিভিন্ন ইকুপমেন্ট ব্যবহার করে এই ফেসিয়ালটি করা হয়, যেটা বেশ ব্যয়বহুল। কিন্তু ঘরে বসেই কিছু স্টেপ ফলো করে হাইড্রো ফেসিয়ালের মতন ব্রাইটনেস আর ফ্রেশনেস কিন্তু আপনিও পেতে পারেন। চলুন, তাহলে জেনে নেই এই ফেসিয়ালের স্টেপগুলো কিভাবে করতে হয়?

হাইড্রো ফেসিয়াল কেন আলাদা?

হাইড্রো ফেসিয়াল আর অন্যান্য ফেসিয়ালের মধ্যে বেশ কিছু পার্থক্য আছে। স্টেপ, প্রোডাক্ট, প্রসেস অনেকটাই কিন্তু আলাদা। পার্লারে থিক কনসিসটেন্সির একটি ম্যাসাজ ক্রিম দিয়ে ফেসিয়াল শুরু করে কিন্তু এই ফেসিয়ালে এমনটা হয় না। বরং স্কিনকে কিভাবে ভেতর থেকে ক্লিন করা যায় সেদিকে ফোকাস করা হয়। হাইড্রো ফেসিয়ালে কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর, সেরাম, এসেন্স এমন অনেক কিছুই ইউজ করা হয় যেটা অন্যান্য পার্লার ফেসিয়ালে দেখা যায় না। এতে পোরস ওপেন করে ডেড সেলের স্তর সরিয়ে ভেতর থেকে ত্বকের হেলদি গ্লো বের করে আনা হয়। আর এটা একই সাথে ত্বকে ডিউয়ি ও স্মুথ ইফেক্ট দেয় কেননা এই ফেসিয়ালের বিভিন্ন ধাপে স্কিনের হাইড্রেশন লেভেল রিস্টোর করা হয়।

কাদের জন্য হাইড্রো ফেসিয়াল?

হাইড্রো ফেসিয়াল যেহেতু ত্বকে পুরোপুরি পরিষ্কার করে ও হাইড্রেটেড লুক দেয়, তাই বিশ বছরের বেশি হলে সবাই এটা করতে পারে। স্কিনে পিম্পল, ডার্ক স্পট বা পিগমেনটেশনের সমস্যা থাকলেও এই ফেসিয়াল করতে পারবেন। ড্রাই, ডিহাইড্রেটেড স্কিনে এর আউটপুট সবচেয়ে ভালো বোঝা যায়।

হাইড্রো-ফেসিয়াল স্টেপস 

বাসায় বসেই চোখে পরার মতো পরিবর্তন আনতে কোন স্টেপগুলো ফলো করতে হবে, চলুন জেনে নেই।

১) ডাবল ক্লেনজিং 

ডাবল ক্লেনজিং দেখেই বুঝতে পারছেন যে এতে দুইটি ধাপ রয়েছে। এর একটি ধাপ অয়েল ক্লেনজিং ও অপরটি ফোম ক্লেনজিং। চলুন দুইটি ধাপ সম্পর্কে আলাদাভাবে জানা যাক!

SHOP AT SHAJGOJ

    অয়েল ক্লেনজিং – ফেসিয়ালের প্রথম ধাপ হলো স্কিনকে প্রোপারলি ক্লিন করা। ডাবল ক্লেনজিং-এ প্রথমে অয়েল বেইসড হাইড্রেটেড ক্লেনজার ব্যবহার করতে হবে, যাতে ত্বক শুষ্ক হওয়া ছাড়াই ত্বকের অতিরিক্ত সিবাম, মেকআপ আর পল্যুটেন্ট ক্লিন হয়ে যায়।

    ফোম ক্লেনজিং – এরপর ভেজা স্কিনে ময়েশচারযুক্ত ফোম ক্লেনজার দিয়ে আলতো হাতে ম্যাসাজ করে নিন। এর ফলে স্কিনের উপরের স্তরে অর্থাৎ বাহির থেকে সব ধুলো-ময়লা পরিষ্কার হয়ে যাবে।

    এবার ১ মিনিট ম্যাসাজ করে মুখে পানির ঝাপটা দিয়ে ধুয়ে নিন। এরপর নরম কাপড় দিয়ে মুখটা ভালোভাবে মুছে নিতে হবে।

    ডাবল ক্লেনজিং করছে একজন

    ২) স্টিমিং

    স্টিমিং করার ফলে ত্বকের পোরসগুলো খুলে যায়। একটি বাটিতে কুসুম গরম পানি নিয়ে তা থেকে গরম পানির ভাপ মুখে নিন। পানিতে একটু অ্যাসেনশিয়াল অয়েল মিলিয়ে নিলে ভালো হয়, কেননা ভাপের সাথে সেই অ্যাসেনশিয়াল অয়েলের নির্যাস উন্মুক্ত রোপকূপ দিয়ে আমাদের ত্বকে প্রবেশ করবে। অ্যাসেনশিয়াল অয়েলটি হতে পারে ল্যাভেন্ডার অয়েল, লেমনগ্রাস, টি-ট্রি কিংবা রোজমেরি অয়েল।

    ৩) এক্সফোলিয়েশন

    ফেসিয়ালের এই ধাপে ত্বকের উপরিভাগের ডেড সেলের লেয়ার অর্থাৎ মুখের মৃত কোষ দূর করার জন্য আপনার ত্বকের ধরন বুঝে সিলেক্ট করুন কেমিক্যাল অথবা ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর। স্ক্রাবিং-এর মাধ্যমে সার্কুলার মোশনে নিচ থেকে উপরে ম্যাসাজ করতে হবে। স্ক্রাবিং শেষ হবার পর মুখে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। ফিজিক্যাল এক্সফোলিয়েটর নরমাল টু ড্রাই স্কিনে নিশ্চিন্তে ব্যবহার করতে পারেন। যাদের ত্বকে ইনফেকটেড অ্যাকনে আছে বা সেনসিটিভিটির কারণে দানাদার স্ক্রাবে ইরিটেশন হয়, তাদের জন্য কেমিক্যাল এক্সফোলিয়েটর ভালো কাজ করবে।

    SHOP AT SHAJGOJ

      ৪) টোনিং

      এরপর কটন প্যাড দিয়ে টোনার ভালোভাবে অ্যাপ্লাই করে নিন। হাইড্রেটিং ও রিফ্রেশিং ফিলিং দেয় এমন একটি টোনার অ্যাপ্লাই করতে হবে। আপনার স্কিনের ধরন ও প্রবলেম অনুযায়ী টোনার বেছে নিন। টোনারের ইনগ্রিডিয়েন্টস অনুযায়ী কিন্তু কার্যকারিতা আলাদা হয়। যেমন – হায়ালুরনিক এসিড টোনার স্কিনকে ভেতর থেকে ময়েশ্চারাইজ করে, মিল্ক প্রোটিন সমৃদ্ধ টোনার ত্বক নারিশমেন্ট করে হেলদি গ্লো আনে, টি-ট্রি এলিমেন্ট যুক্ত টোনার র‍্যাশ কমাতে হেল্প করে আর রোজ এক্সট্রাক্ট সমৃদ্ধ টোনার স্কিনের ইরিটেশন ও রেডনেস কমিয়ে স্কিনকে হেলদি রাখে।

      ৫) অ্যাসেন্স অ্যাপ্লাই

      ডিউয়ি আর সফট স্কিন পাবার জন্য ফেসিয়ালের এই ধাপে অ্যাসেন্স অ্যাপ্লাই করে নিন। অ্যাসেন্স ত্বককে ভেতর থেকে রিপেয়ার করে নতুন কোষ পুনর্গঠনে হেল্প করে। দুই-তিন ফোটা অ্যাসেন্স নিয়ে আপনার পুরো ফেইসে অ্যাপ্লাই করুন। এবার হালকা হাতে ম্যাসাজ করুন, ব্যস!

      ৬) শীট মাস্ক অ্যাপ্লাই

      শীট মাস্ক

      ত্বকের রাফনেস আর ড্রাইনেস দূর করে ইনস্ট্যান্ট হাইড্রেটেড স্কিন পাওয়ার জন্য শীট মাস্ক অ্যাপ্লাই করুন। এটা আগে থেকে প্রিপেয়ার করা থাকে মানে একটি প্যাকেটে এসেন্স অথবা সিরামে ভেজানো একটি মাস্ক থাকে। প্যাকেট থেকে সাবধানে মাস্কটি বের করে মুখে লাগিয়ে রাখুন। এটা সেটা বাটাবাটি করা, প্যাক গুলানো এসবের ঝামেলা নেই। মাস্কটি মুখে লাগিয়ে রেখে ১৫-২০ মিনিট পরে সিরাম স্কিনে শুষে নিলে মাস্কটি তুলে ফেলে দিন। অতিরিক্ত সিরাম দিয়ে ফেইসে ও নেক এরিয়াতে ম্যাসাজ করে ফেলুন। এরপর মুখ ধোয়ার প্রয়োজন নেই!

      ৭) স্কিনকে একটু রেস্ট দিন

      এবার ফেইসকে রেস্ট দেয়ার পালা, যাতে আগের স্টেপের লেয়ারগুলো স্কিনে ভালো মতো বসে যেতে পারে এবং এতে আপনার ত্বক সবচেয়ে ভালো বেনিফিট পাবে। ১০ মিনিটের জন্য একটু রেস্ট নিয়ে নিন এবং ত্বককেও রেস্টে রাখুন। আপনার স্কিন আগের থেকে কতটা মসৃণ ও মোলায়েম হয়েছে, সেটা হাত দিলেই ফিল করতে পারবেন।

      ৯) ময়েশ্চারাইজিং 

      ত্বকে ময়েশ্চারাইজিং করছে একজন

      সবশেষে ত্বকের ধরন অনুযায়ী হাইড্রেটিং ময়েশ্চারাইজার অ্যাপ্লাই করে নিন। মনে রাখবেন, স্কিনের ময়েশ্চার লেভেল ঠিক না থাকলে যত কিছুই মাখুন না কেন, সেই ইফেক্টটা খুব বেশী লং লাস্টিং হয় না। শুধু ফেসিয়ালের স্টেপেই নয়, রেগ্যুলার স্কিন কেয়ারে ময়েশ্চারাইজার রাখতে হবে।

      SHOP AT SHAJGOJ

        তাহলে জেনে নিলেন তো এই ফেসিয়ালের স্টেপগুলো। সপ্তাহে ১ বার করে কিংবা কোনো অকেশনের আগে এই স্টেপগুলো ফলো করে ঘরে বসেই পেতে পারেন উজ্জ্বল আর সুন্দর ত্বক। হেলদি রেডিয়েন্ট আর হাইড্রেটেড স্কিনের জন্য অবশ্যই কমপ্লিমেন্ট পাবেন। আপনি চাইলে স্কিন কেয়ার প্রোডাক্টগুলো কিনতে পারেন অনলাইনে শপ.সাজগোজ.কম থেকে। আবার যমুনা ফিউচার পার্ক ও সীমান্ত স্কয়ারে অবস্থিত সাজগোজের দুটি ফিজিক্যাল শপ থেকেও কিনতে পারেন!

        ছবি- সংগৃহীত: সাজগোজ; সাটারস্টক

        165 I like it
        13 I don't like it
        পরবর্তী পোস্ট লোড করা হচ্ছে...

        escort bayan adapazarı Eskişehir bayan escort